বিনোদন ডেস্ক(১৬ ফেব্রুয়ারী): শুরুতে নিজের অভিনয়ে চলচ্চিত্র দর্শকদের নাড়া দিয়ে এখন টিভি নাটক নিয়েই শশীর অহর্নিশ পথচলা। গ্রাম্য কিংবা শহুরে—সব চরিত্রেই শারমীন জোহা শশীকে দর্শকরা প্রাণবন্তভাবে পেয়েছেন। তার সাক্ষাত্কার নিয়েছেন মাদিহা মাহনূর
বেশ কিছুদিন ধরে শোনা যাচ্ছে আপনি এবছরই বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন। এ বিষয়ে আপনার মতামত জানতে চাই।
আসলে অনেকের কাছে শোনা এই কথাটিই অনেকবার আমার কান পর্যন্তও এসেছে। আর শুধু আমার কান পর্যন্তই নয়, আমার পরিবারের সদস্যদের কাছেও এমন একটি বার্তা পৌঁছেছে। স্বভাবতই আমার বাবা-মা আর আমার বড় ভাই সূর্যও বিষয়টি নিয়ে এখন পারিবারিকভাবেই ভাবছেন। আমি শুধু সম্মতি জানিয়েছি যে, যদি মনের মতো পাত্র পাওয়া যায় তাহলে এ বছর কেন, আজই বিয়ে করব। আল্লাহর ইচ্ছেতেই যদি সব হয় তাহলে আমার বিয়েটাও আল্লাহর ইচ্ছেতেই হবে। পাত্রী হিসেবে শুধু আমি ‘কবুল’ বলব, ব্যস।
গুণী চিত্রনায়িকা সুচন্দার চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে আপনার অভিষেক হয়েছিল বড় পর্দায়। এ মাধ্যমে নিয়মিত নন কেন?
আসলে সুচন্দা ম্যাডামের ‘হাজার বছর ধরে’ ছবিতে টুনি চরিত্রের পর আমাকে সেভাবে আর বড় পর্দায় পাওয়া যায়নি। টুনি চরিত্রটি যে আমার স্বপ্নের চরিত্র তা বলব না। কারণ, যে বয়সে আমি ‘টুনি’ চরিত্রটিতে অভিনয় করেছি, সেই বয়স পর্যন্ত এই উপন্যাসটিই আমার পড়া হয়ে ওঠেনি। ছবিটিতে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর আমি ‘টুনি’কে নিজের মনের মাঝে লালন করেছি, অভিনয় করেছি। আর ম্যাডাম আমাকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন। যখন কাজ করেছি তখন মনে হয়েছে যে, আসলে এমন একটি চরিত্র দিয়ে আমার অভিষেক হচ্ছে—যা অনেক পঠিত। এই ছবিটির পর খিজির হায়াত খানের ‘অস্তিত্বে আমার দেশ’ ছবিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমানের স্ত্রী বীরজায়া মিলি রহমানের চরিত্রে আমি অভিনয় করেছি। এটিও বেশ আলোচিত ছবি ছিল।কিন্তু এরপর যেসব ছবিতে কাজ করেছি সেগুলোর আসলে শেষ পরিণাম কী হবে আমি জানি না।
এরপর তো আরও দুটি ছবি শুরু করেছিলেন?
হ্যাঁ, একটি মোরশেদুল ইসলামের ‘বৃষ্টির দিন’, অন্যটি শফিকুল ইসলাম ভৈরবীর ‘সোয়া চান পাখি’। বৃষ্টির দিন ছবিতে আমার বিপরীতে ছিলেন অপূর্ব। কয়েকদিন শুটিং হওয়ার পর কেন যে এই ছবির কাজ থেমে গেল জানি না। তবে ভৈরবী স্যারের ছবিটির কাজ এখনও চলছে। মানে বিগত প্রায় তিন বছর ধরে এই ছবির শুটিং চলছে তো চলছেই। কবে শেষ হবে তাও জানি না।
শুনেছি চাষী নজরুল ইসলামের একটি ছবিতেও আপনি কাজ করবেন?
চাষী স্যার আমাকে ডেকেছিলেন। আমি তার সঙ্গে একটি ছবিতে অভিনয়ের জন্য কথা বলেছি। যেহেতু এখনও চূড়ান্ত হয়নি তাই কাজ করছি কিনা তা এখনই বলতে পারছি না।তবে চাষী স্যারের ছবিতে কাজ করার প্রবল ইচ্ছে আছে আমার।
বিজ্ঞাপনচিত্রে আপনার একেবারেই উপস্থিতি নেই। কিন্তু কেন?
অনেকেরই স্বপ্ন থাকে ভালো প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপনে মডেল হয়ে রাতারাতি তারকা হওয়ার। আমার কিন্তু সেই স্বপ্ন কখনোই ছিল না। আমি সবসময় চেয়েছি আমার কাজের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হতে। যে কারণে অভিনয়ই ছিল আমার মূল লক্ষ্য। সেভাবেই আমি এখনও এগিয়ে চলছি। আমি অনেককেই দেখেছি মডেল হিসেবে কাজ করতে এসে পরে নাটকেই বেশি অভিনয় করছেন। যারা এমন করছেন তারা আসলে নিজেরা কী করবেন না করবেন, সে ব্যাপারেই শুরুতে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন। আমি কখনোই সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগিনি। তবে হ্যাঁ, ভালো প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপনে আমারও কাজ করার ইচ্ছে আছে।কিন্তু কোনো নাটকের শিডিউল ফাঁসিয়ে নয়, অন্য অনেকের মতো। আমার প্রফেশনের জায়গাটাকে আমি খুব শ্রদ্ধা করি। কারণ, এখান থেকেই আমার বেঁচে থাকার আহার সংগ্রহ হয়। তাই কাজ নিয়ে আমি লুকোচুরি করতে চাই না, পারবও না।
এবার একটু ভিন্ন প্রসঙ্গ। জীবনের প্রয়োজনে মানুষ অনেক সময়ই অতীত ভুলে যায়, অনেক কিছুকেই অস্বীকারও করতে শেখে। মানুষ হিসেবে আপনি এ বিষয়টি কীভাবে দেখেন?
যারা অতীতকে ভুলে যায় তারা কি সত্যিকার অর্থে মানুষ? আমার মনে হয় না তারা মানুষ। আমি আমার অতীতের সুন্দর দিনগুলোর কথা প্রতিটি মুহূর্তেই ভাবি। আমার ভাবনায় চলে আসে প্রায়ই আমার রংপুরের সেই হাসিখুশি দিনগুলো। মনে পড়ে অনামিকা, সুইটি, আঁখি, সুমি, ইতির কথা—যারা আমার স্কুলজীবনের বন্ধু। মনে পড়ে স্যারদের কথা। মনে পড়ে আরও কত কী! জীবনের এই যে ফেলে আসা দিনগুলো—এগুলোকে যেমন অস্বীকার করা যায় না, ঠিক তেমনি ভোলাও যায় না।
নিউজরুম