১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩: একাত্মতা
মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার বিচারের রায়ের জন্যউদ্বিগ্ন ছিলাম আমরা। একটি সমুচিত শাস্তির রায় হবে—এমন ধারণা পোষণ করেনিশ্চিন্ত প্রহর গুনছিলাম। তবে এমন একটি রায় শোনার জন্য আমরা প্রস্তুতছিলাম না। স্বাভাবিকভাবেই হতাশ হয়ে পড়লাম। ছয়টি থেকে একটি মাত্র অপরাধপ্রমাণিত না হওয়ার সুবাদে ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তে বিচারের রায় হলো কাদেরমোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। কাদের মোল্লার অপরাধের পাল্লা মেপে আমরা সবাইনিশ্চিন্ত ধারণা করে নিয়েছিলাম, মৃত্যুদণ্ড হবে। এই রায় শুধু আমাকে হতাশকরেনি, হতাশ করেছে সবাইকে।
ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রচারিত বাংলা খবরেদেখলাম, এই অপ্রত্যাশিত রায়ের প্রতিবাদে শাহবাগে প্রজন্মের তরুণ সমাজসহদেশের প্রতিটি স্তরের মানুষ গণজাগরণ-আন্দোলন গড়ে তুলেছে। সমাবেশ দেখে মনেহচ্ছিল যেন বিশাল জনসমুদ্র, অভূতপূর্ব দৃশ্য। কাদের মোল্লার সমুচিত শাস্তিকার্যকর করার দাবিতে তরুণদের উদ্বিগ্ন উচ্চকণ্ঠে উচ্চারিত ‘যুদ্ধাপরাধীদেরফাঁসি চাই’, ‘জয় বাংলা, জয় বাংলা’ স্লোগান এবং মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তেরবিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের গৌরবের পতাকা নিয়ে ওদের উচ্ছ্বাস আমাদেরএকাত্তরে ফিরিয়ে নিয়ে গেল। যেন একাত্তরের প্রতিচ্ছবি দেখতে পারছিস্বাধীনতার ৪১ বছর পর।
মনে হলো, সত্যিকার অর্থে এত বছর পরস্বাধীনতাযুদ্ধের মিথ্যা প্রচারিত ইতিহাস থেকে বেরিয়ে এসে নব প্রজন্মেরতরুণেরা এবং সর্বস্তরের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দু শেখ মুজিবুররহমানকে নতুন করে জাতির জনক হিসেবে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করল, সঠিক মূল্যায়নকরল মুক্তিযোদ্ধাদের। এরপর স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে মিথ্যাচার কেউ মেনে নেবেনা। এই জাগরণ সৃষ্টির কঠিন সংকল্পে ঐক্যবদ্ধ মানুষগুলো একটি নতুন ধারারসূচনা করেছে। এই সূচনা একাত্তরের চেতনাকে পুনরুজ্জীবিত করে ভবিষ্যতেরাষ্ট্রকাঠামোকে সঠিক সংস্কার সাধনের পথ দেখিয়ে দেবে।
চলমান আন্দোলনসম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও স্বতঃস্ফূর্ত। জাগ্রত তরুণ সমাজ আমাদের ভবিষ্যতেরআশার আলো। তাদের প্রতি সুদূর জার্মানি থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।
গুলসন আরা আতিক, জার্মানি।
নড়াইলবাসীর আবেদন
বাংলাদেশেরদ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম কিন্তু ঐতিহ্যবাহী এবং সম্ভাবনাময় একটি জেলা নড়াইল।স্বাধীনতার পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত কোনো সরকারই এই জেলার উন্নয়নের প্রতিসুদৃষ্টি দেয়নি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার বারবার এই জেলার দুটি সংসদীয়আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু তারা চোখে পড়ার মতো কোনো উন্নয়ন প্রকল্পগ্রহণ করেনি। রাস্তাঘাট, ব্রিজ ও বিদ্যুৎ-ব্যবস্থার এমন বেহাল অবস্থা যেমানুষের স্বাভাবিক চলাচলও দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। অথচ পাশের জেলা গোপালগঞ্জেরউন্নয়নে শত শত কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। এ যেন ঠিক প্রদীপের নিচে অন্ধকার।
প্রধানমন্ত্রীরকাছে অনুরোধ, নড়াইল-কালিয়া, নড়াইল-কালনা, নড়াইল-চাড়াভিটা, নড়াইল-মাগুরা—এইচারটি প্রধান সড়ক, নড়াইল সাবডিভিশন ঘাটে চিত্রা নদীর ওপর একটি সেতু, কালনাঘাটে মধুমতী নদীর ওপর একটি সেতু এবং বিদ্যুৎ-ব্যবস্থাসহ অন্যান্য অবকাঠামোউন্নয়নে সুদৃষ্টি দিন।
উৎপল কুমার বিশ্বাস
মাথাভাঙ্গা, নড়াইল