স্পোর্টস ডেস্ক(১৬ ফেব্রুয়ারী): ‘ব্লেড রানার’খ্যাত অস্কার পিস্টোরিয়াসের বিরুদ্ধে বান্ধবী রিভা স্টিনক্যাম্পকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। আজ শুক্রবার আদালতে অভিযোগ পড়ে শোনানোর সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন দক্ষিণ আফ্রিকার পা-বিহীন এই অ্যাথলেট।
গতকাল বৃহস্পতিবার ভালোবাসা দিবসের ভোরে প্রিটোরিয়ায় পিস্টোরিয়াসের বাড়িতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান স্টিনক্যাম্প। ৩০ বছর বয়সী স্টিনক্যাম্পের লাশের পাশেই একটি নয় মিলিমিটার পিস্তল পাওয়া যায়। ওই পিস্তলের চারটি গুলি লাগে তাঁর শরীরে। ঘটনার পরপরই বাড়িটি ঘেরাও করে পিস্টোরিয়াসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের প্রেরণার উত্স দক্ষিণ আফ্রিকান অ্যাথলেট এখন খুনের মামলার আসামি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ২৬ বছর বয়সী পিস্টোরিয়াসকে আজ প্রিটোরিয়ার আদালতে হাজির করা হয়। হত্যার অভিযোগ পড়ে শোনানোর সময় ম্যাজিস্ট্রেট ডেসমন্ড নাইরের সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। একপর্যায়ে দুই হাতে মুখ লুকিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকেন পিস্টোরিয়াস। বিচারক ডেসমন্ড তাঁকে শান্ত থাকতে বলেন।
৪০ মিনিট ধরে চলা শুনানিতে কিছুই বলেননি পিস্টোরিয়াস। ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়। এ সময় পিস্টোরিয়াসকে হাজতে রাখার নির্দেশ দেন আদালত।
শুনানির সময় আদালতকক্ষে ছিল উপচে পড়া ভিড়। এ সময় পিস্টোরিয়াসের ঠিক পেছনেই বসে ছিলেন তাঁর বাবা ও ভাই। তাঁর মা মারা যান ২০০২ সালে, তখন পিস্টোরিয়াসের বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর।
পুলিশ ও পিস্টোরিয়াসের প্রতিবেশীদের বরাত দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার একটি সংবাদপত্রের খবরে বলা হয়েছে, মাথাসহ স্টিনক্যাম্পের শরীরে চারটি গুলি লাগে।
স্টিনক্যাম্প ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার মডেলিং জগতে পরিচিত এক মুখ।পিস্টোরিয়াসের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয় গত বছরের নভেম্বরে। আইন বিষয়ে স্নাতক পোর্ট এলিজাবেথের এই মেয়ে গত সপ্তাহে দেশটির ‘সানডে টাইমস’ পত্রিকায় দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে পিস্টোরিয়াসকে ‘নিষ্কলুষ’ বলে অভিহিত করেছিলেন।মৃত্যুর আগের দিন পিস্টোরিয়াসের উদ্দেশে টুইট করে স্টিনক্যাম্প লেখেন, ‘তোমার ভালোবাসার মানুষের জন্য আগামীকাল কী চমক লুকিয়ে রেখেছ?’ দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, পিস্টোরিয়াস এমন কিছু করলেন, যাতে চমকে গেছে গোটা বিশ্ব।
পিস্টোরিয়াস অ্যাথলেটিকস বিশ্বে অন্যতম পরিচিত মুখ। ২০১২ সালে লন্ডন অলিম্পিকে সক্ষম ক্রীড়াবিদদের সঙ্গে অংশ নিয়ে ইতিহাস গড়েন দুই পা-হীন এই তারকা।
নিউজরুম