বগুড়ায় আদালতের এজলাস ভেঙ্গে আসামিদের পলায়ন

0
281
Print Friendly, PDF & Email

বগুড়া,(১৪ ফেব্রুয়ারী) : বগুড়া জেলা যুবদলের সভাপতি সিপার আল বখতিয়ারের নেতৃত্বে জেলা জজ আদালতে একটি মামলায় হাজিরা দিতে এসে বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণসহ আদালতের এজলাস ভাঙচুর চালিয়ে বীরদর্পে আদালত চত্বর ত্যাগ করেন আসামিরা।

এ সময় আদালতে রক্ষিত নথিপত্র তছনছ ও ছিনতাই করে আদালত চত্বর ও এর আশপাশের এলাকায় ব্যাপক তাণ্ডব চালান তারা।

বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে একটার দিকে জেলার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।

আদালতে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-পরিদর্শক (কোর্ট সাব ইন্সপেক্টর) আতাউর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, ২০১২ সালের ১৩ ডিসেম্বর হরতাল চলাকালে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক তৈরি, মারপিট ও জখম করার অভিযোগে বগুড়া জেলা যুবদলের সভাপতি সিপার আল বখতিয়ার, সাধারণ সম্পাদক আরফাতুর রহমান আপেল, ছাত্রদলের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও সাধারণ সম্পাদক পিপলু এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপিত শাহ মো. মেহেদী হাসান হিমুসহ ৪৪ জনের নাম উল্লেখ করে ১৮ ডিসেম্বর দণ্ডবিধির ১৪৩/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭, সহ ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ৩/৩-ক ধারায় বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় (নম্বর ৪২/তারিখ: ১৮-১২-২০১২) একটি মামলা নথিভুক্ত হয়।ওই মামলায় পরবর্তী এক মাসের মধ্যে নিম্ন আদালতে হাজির হওয়ার শর্তে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি উচ্চ আদালত থেকে এক মাসের আগাম জামিন নেন আসামিরা।
বৃহস্পতিবার ৪৪ জনের মধ্যে বগুড়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৪০ জন হাজির হলে আদালত শুনানি শেষে সিপার আল বখতিয়ার, সাধারণ সম্পাদক আরফাতুর রহমান আপেল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শাহ মো. মেহেদী হাসান হিমুসহ ৬ আসামিকে পৃথক হয়ে দাঁড়াতে বলেন। এ সময় ওই ৬ জনের জামিন দেওয়া হচ্ছে না অনুমান করে আদেশ দেওয়ার আগ মুহূর্তে সিপারের নেতৃত্বে উপস্থিত আসামিরা আদালতের এজলাস ভাঙচুর ও মূল্যবান নথিপত্র তছনছ করাসহ বেশকিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটান। তিনি আরও জানান, এ ঘটনা নিন্দনীয় এবং মারাত্মক অপরাধ।

এ ঘটনায় অবশ্যই মামলা দায়ের করা হবে। বগুড়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুল মতিন, সাবেক সভাপতি অ্যাড. রেজাউল করিম মন্টু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. গোলাম রব্বানী খান রোমানসহ একাধিক আইনজীবী বাংলানিউজকে জানান, পুলিশের উপিস্থিতিতে যে ঘটনা আসামিরা ঘটিয়েছেন, সেটি নিঃসন্দেহে মারাত্মক ও জঘণ্যতম অপরাধ।

এ ধরনের আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার হওয়া প্রয়োজন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন আইনজীবী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবারের আদালত চত্বরের এজলাস ভাঙচুর ও নথিপত্র তছনছ ও ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনার দায় দায়িত্ব পুলিশ প্রশাসনকেই নিতে হবে। এ ঘটনায় পুলিশের জেলা পর্যায়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নামেও মামলা করা হবে।

দুপুর ২টার দিকে যুবদলের সভাপতি সিপার আল বখতিয়ারসহ চলে যাওয়া ৩ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। তবে বগুড়া সদর থানার ওসি সৈয়দ সহিদ হোসেন, জেলার সহকারী পুলিশ সুপার মকবুল হোসেনসহ (সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পুলিশ  সুপার, লালমনিরহাট) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সায়েমের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তারা এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে রাজি হননি।

নিউজরুম

শেয়ার করুন