‘শুষ্ক বীজতলা’ পদ্ধতি

0
175
Print Friendly, PDF & Email

কৃষি ডেস্ক(১২ ফেব্রুয়ারী): ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পাবনার বেড়া উপজেলার বোরো চাষিরা হন্যে হয়ে ছুটছেন চারার পেছনেকয়েক গুণ বেশি দাম দিয়েও যখন তাঁরা চারা সংগ্রহ করতে পারছেন না, তখন হাতিগাড়া এলাকার কৃষক ফিরোজ শুষ্ক বীজতলাপদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করে পেয়েছেন উন্নত মানের চারানতুন পদ্ধতির এই বীজতলা দেখতে প্রতিদিনই তাঁর জমিতে ভিড় করছেন এলাকার অসংখ্য কৃষক
শুধু ফিরোজ একা নন, তাঁর মতো পাবনা উপজেলার আরও চার-পাঁচজন কৃষক এই পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করে সুফল পেয়েছেনএতে তাঁদের চারা উপাদনের খরচ ও ঝামেলা দু-ই কমে গেছে
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কৃষকেরা প্রতিবছরের মতো এবারও চারা উপাদনের জন্য খোলা পদ্ধতিতে জলাবদ্ধ জমিতে বীজতলা তৈরি করেছিলেনকিন্তু ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে বেশির ভাগ কৃষকের বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়ফলে চারার তীব্র সংকট দেখা দেয়
কৃষকেরা জানান, উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের কর্মকর্তারা নতুন উদ্ভাবিত শুষ্ক বীজতলাপদ্ধতিতে চারা তৈরির জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছিলেনকিন্তু বেশির ভাগ কৃষক সেই পরামর্শ শোনেননিতবে উপজেলার চার-পাঁচজন কৃষক ওই পরামর্শ অনুযায়ী শুষ্ক বীজতলা তৈরি করে সাফল্য পান
বেড়া কৃষি কার্যালয়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবদুল বারী বলেন, ‘আমার আওতাভুক্ত এলাকার অনেক কৃষককে এই পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরির পরামর্শ দিয়েছিলামকিন্তু শুধু ফিরোজ মিয়া আমার কথা শুনেছেনতাঁর বীজতলার চারা দেখে অন্য কৃষকেরা অভিভূতআমার মনে হয়, আগামীবার বছর থেকে এই পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরির হিড়িক পড়ে যাবে
উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, এবারই প্রথম বেড়ায় শুষ্ক বীজতলাপদ্ধতিতে চারা তৈরি হয়েছেএ পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরির জন্য প্রথমে আর্দ্রতাসম্পন্ন শুকনো জমি নির্বাচিত করতে হবেসেই জমি ভালোভাবে চাষ করে তাতে অঙ্কুরিত বীজ ছিটিয়ে দিতে হবেতারপর গোবর মেশানো মাটি ছিটিয়ে দিয়ে বীজতলা ভেজাতে হবেপরে পলিথিন দিয়ে বীজতলা এমনভাবে ঢেকে দিতে হবে, যাতে বাতাস ঢুকতে না পারে২০ থেকে ২৫ দিন এভাবে ঢেকে রাখলে গজানো চারাগুলো রোপণের উপযোগী হবেবীজতলার পানি সেচের প্রয়োজন নেইতবে শেষের তিন-চার দিন পলিথিন তুলে কিছুক্ষণের জন্য রোদ লাগিয়ে আবার ঢেকে রাখতে হবে
বেড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঈসমাইল হোসেন বলেন, শুষ্ক পদ্ধতিতে চারার উপাদন খরচ কম হয়পাশাপাশি ফলন শতকরা ২৫ থেকে ৩০ ভাগ বেশি হয়তিনি বলেন, ‘আমি নিজে তদারকি করে চার-পাঁচজন কৃষককে দিয়ে এবার এই পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করিয়েছিএখন এলাকার সব কৃষকের মধ্যে সাড়া পড়ে গেছেআশা করছি, আগামী দিনে শীত ও কুয়াশায় কৃষকেরা আর ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না

 

 নিউজরুম

 

শেয়ার করুন