আর্ন্তজাতিক ডেস্ক(১১ ফেব্রুয়ারী): সিরিয়ায় প্রায় দুই বছর ধরে সহিংসতা চলছে। দেশটির সব ক্ষেত্রেই এই সহিংসতার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বাদ যায়নি ওষুধ শিল্পও। এরই মধ্যে সিরিয়ার প্রায় ৭০ শতাংশ ওষুধ উৎপাদন কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে ওষুধ সংকট।
সিরিয়ার ওষুধ শিল্পের অন্যতম ব্যবসায়ী নাজিব আলী-আদিব। ২০ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সিরিয়ায় ফেরেন তিনি। আশা ছিল, আধুনিক সিরিয়া গড়ে তোলার কাজে অবিচ্ছেদ্য অংশ হবেন। প্রত্যাশা মতো ওষুধশিল্প গড়ে তুলে অনেক দূর এগিয়েও গিয়েছিলেন। কিন্তু এখন সেসব কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার হুমকিতে রয়েছে।
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের অদূরেই কয়েকটি ওষুধ কারখানা রয়েছে আলী আদিবের। ওই এলাকায় প্রায় প্রতিদিনই সহিংসতা ঘটছে। আলী আদিব বলেন, মৃত্যু বা অপহরণের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে কর্মীদের কারাখানা যেতে হয়। সিরিয়ায় এখন ৭০ শতাংশ কারখানাই বন্ধ হয়ে গেছে। যেগুলো উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছে, তারা সামর্থ্যের তুলনায় মাত্র ২৫ শতাংশ উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছে।
এত বেশি সংখ্যায় কারখানা বন্ধ হওয়ার মূল কারণ হলো, কারখানাগুলো দামেস্ক ও আলেপ্পোসহ এর আশপাশের এলকাগুলোতে অবস্থিত। আর প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ বিরোধী আন্দোলনের শুরু থেকেই এসব এলাকায় সহিংসতার মূল কেন্দ্র হয়ে রয়েছে।
আলী আদিব বলেন, ‘আসলে এভাবে টিকে থাকা অসম্ভব। বর্তমান পরিস্থিতি ওষুধশিল্পের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে।’
সিরিয়ার প্রয়োজনীয় প্রায় ৯০ শতাংশ ওষুধই দেশটি নিজেই উৎপাদন করে। সরকারও এই খাতে বড় ধরনের ভর্তুকি দেয়। এ কারণে কম দামে উন্নতমানের ওষুধ উৎপাদন করে আসছিল দেশটি। আরব বিশ্বের কয়েকটি দেশে ওষুধ রপ্তানিও করছিল সিরিয়া। সহিংসতার কারণে ওষুধ উৎপাদন কমে যাওয়ায় এখন সংকট দেখা দিয়েছে। তবে সরকারি হাসপাতালগুলোতে এখনো ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় কম।দামেস্কের রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালের চিকিৎসক আনোয়ার জানান, তাঁর হাসপাতালে ২০ প্রকার ওষুধের ঘাটতি রয়েছে।
দামেস্কের বাইরের হাসপাতালগুলো ওষুধ সরবরাহের অবস্থা আরও ভয়াবহ। বিষয়টি বাশার সরকার স্বীকারও করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে ওষুধের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। ডব্লিউএইচওর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা এলিজাবেথ হফ বলেন, ‘আমরা জরুরি ভিত্তিতে সিরিয়ায় প্রয়োজনীয় ওষুধ পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা করেছি। কীভাবে ওষুধ পাঠানো যায়, তা-ও ভাবা হচ্ছে।’ বিবিসি।
নিউজরুম