আমি জাদু বিদ্যা জানি না

0
251
Print Friendly, PDF & Email

১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩: গণিতের ছেলেটি যখন গান গায় তখন মুগ্ধ হতে হয়আর গানের ছেলেটি যখন পড়তে যায় বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগে তখন বিস্মিত হতে হয়এই মুগ্ধ-বিস্ময় জাগানিয়া ছেলেটির নামও মুগ্ধপুরো নাম মির্জা তানজীম শরীফমুগ্ধ তাঁর মেধার মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন মুগ্ধহিসেবেইশুধু দেশেই নয়, বিদেশ অব্দি ছড়িয়েছেন সেই মুগ্ধতার আবেশ
কীভাবে? সেই গল্প শুনতেই একদিন মুখোমুখি হই মুগ্ধ ওরফে মির্জা তানজীম শরীফেরবলতে দ্বিধা নেই, সদ্য কৈশোর পেরোনো সেই হ্যাংলা পাতলা তরুণকে দেখে সত্যিই বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল, এরই মধ্যে তিনি তাঁর ঝুলিতে কীভাবে ভরেছেন চ্যানেল আই সেরা কণ্ঠ প্রতিযোগিতায় ২০১০ সালের চ্যাম্পিয়ন শিরোপা এবং ২০১২ সালে আর্জেন্টিনায় অনুষ্ঠিত ৫৩তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে অনারেবল মেনশনআর জাতীয় গণিত অলিম্পিয়াডে ছয় ছয়বার চ্যাম্পিয়ন!
মুগ্ধ সাবলিল কণ্ঠে বলতে শুরু করেন, ‘আমাকে দেখে অবাক হওয়ার কিছু নেইআমি জাদু বিদ্যা জানি নাআমি শুধু চেষ্টা করে যাই আর আমার চেষ্টাই আমাকে সাফল্যের পথ দেখায়
মুগ্ধর চেষ্টা মুগ্ধকে সাফল্যের পথ দেখাতে শুরু করে সেই ছোটবেলাতেইতিনি পঞ্চম শ্রেণীতেই পেয়ে যান ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিতারপর অষ্টম শ্রেণীতেও ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিকে জিপিএ ৫ এবং একই ধারাবাহিকতায় নটরডেম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিকেও
জিপিএ ৫
পড়ালেখায় সফল এই মুগ্ধ পাশাপাশি সাফল্য দেখিয়েছেন নাচ ছাড়া শিল্পের আর সকল শাখায়জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা থেকে শুরু করে নতুনকুঁড়ি, শাপলা কুঁড়ি, পদ্ম কুঁড়ি, উপস্থিত বক্তৃতা, রচনা প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড, গণিত অলিম্পিয়াড কিংবা পদার্থবিজ্ঞান অলিম্পিয়াডযখন যে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন সেখানেই হয়েছেন সেরাআছে খেলাধুলাতেও সাফল্য২০০৮ সালে আন্তস্কুল টেবিল টেনিস ও বাস্কেট বল প্রতিযোগিতায় ছিলেন চ্যাম্পিয়নসবমিলিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ২৯টি জাতীয় পুরস্কার!
মুগ্ধর জন্ম ময়মনসিংহের চড়পাড়ায়বাবা ইসকান্দর মির্জা একজন কলেজ শিক্ষকমা তাহমিনা বেগম স্বাস্থ্য-পরিদর্শকতিন ভাইয়ের মধ্যে মুগ্ধ দ্বিতীয়তৃতীয় ভাইটি মুগ্ধর জমজ ভাইতাই খাতির বেশি জমজ ভাইটির সঙ্গেইতবে বড় ভাইয়া আমার বন্ধুর মতোবন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বাব-মার সঙ্গেওঅকপটে স্বীকার করলেন মুগ্ধবললেন, ‘বাবা-মা কখনোই তাঁদের ইচ্ছা আমার ওপর চাপিয়ে দেননিবরং আমার প্রতিটি কাজে উসাহ দিয়েছেনতাই হয়তো ক্ষণে ক্ষণে মুগ্ধর ইচ্ছা বদল হতোএই পাইলট হতে চাইতেন তো দুমাস বাদে হতে চাইতেন ডাক্তার! এখন অবশ্য একটাই ইচ্ছাপ্রকৌশলী হওয়াহাসতে হাসতে বললেন তিনিহাসি থামিয়ে ফের বলেন, ‘গান নিয়েও আমার স্বপ্নের শেষ নেইআমি শাস্ত্রীয় সংগীতের সঙ্গে পাশ্চাত্য সংগীতের ফিউশন ঘটাতে চাইহতে চাই একজন ভালো মিউজিক কম্পোজার
আর গণিত? ‘গণিত আমার সবচেয়ে পছন্দের বিষয়ইশ! গণিত নিয়েই যদি সারা জীবন পড়তে পারতাম!গণিতের প্রতি এই ভালো লাগা জেনে নিয়ে আমরা জানতে চাই আরো ভালো লাগার কথাতখন মুগ্ধ বলেন, ‘ভালো লাগে বই পড়তে আর ঘুরে বেড়াতে

 

শেয়ার করুন