ব্যবসা ও অর্থনীতিডেস্ক(১০ ফেব্রুয়ারী): সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার কামারশাল উপকারখানায় (স্মিথি শপ) একজন মিস্ত্রি নতুন একটি ডিভাইস বা যন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন। এটির মাধ্যমে রেলকোচে ব্যবহূত সিপ্রং আগের চেয়ে অনেক সহজেই আলাদা করা যাবে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, এত দিন রেলে ব্যবহূত একটি সিপ্রং আলাদা (ডিসমেন্টলিং) করতে কমপক্ষে দুই ঘণ্টা (শ্রমঘণ্টা) লাগত এবং এতে দুর্ঘটনারও ঝুঁকিও ছিল। নতুন ডিভাইস বা যন্ত্রটি উদ্ভাবনের ফলে কাজটি সম্পন্ন করতে সর্বোচ্চ দুই মিনিট লাগে। সে অনুযায়ী প্রতি ঘণ্টায় ৫০টিরও বেশি সিপ্রং আলাদা করা যায়।
যন্ত্রটি উদ্ভাবন করেন কামারশাল শপের প্রথম সারির মিস্ত্রি (গ্রেড ওয়ান) মো. আবু তালেব মিয়া। এ ব্যাপারে তাঁকে সহায়তা করেন তাঁর সহকর্মী ফিডার মোবারক আলী।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার প্রকৌশলীরা গত জানুয়ারি মাসে নতুন যন্ত্রটি ব্যবহারের অনুমতি দেন এবং কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) মঞ্জুর-উল-আলম চৌধুরী আনুষ্ঠানিকভাবে এটির উদ্বোধন করেন।
আবু তালেব জানান, এ ধরনের একটি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে পেরে ভালো লাগছে। এতে করে অল্প লোকবল দিয়ে অধিক কাজ করা সম্ভব হবে। কেবল তা-ই নয়, ডিভাইসটি ঝুঁকিহীন।
প্রকৌশলী ও মিস্ত্রিরা জানান, একটি রেলকোচে (ক্যারেজ) ২৪টি ইলেকট্রিক্যাল সিপ্রং ব্যবহূত হয়ে থাকে। বগির চাকার ওপর ও ক্যারেজের নিচে এসব সিপ্রং স্থাপন করা হয়, যা ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষা করে।
কারখানার কামারশাল শপের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শাহজাহান আলী বলেন, রেলকোচে সাত স্তরের একটি সিপ্রংয়ের রিবেট (সংযুক্তকরণ) খুলতে এত দিন মান্ধাতার পদ্ধতিতে হাতুড়ি চালাতে হতো। এতে অনেক দুর্ঘটনাও ঘটত। এ ছাড়া শ্রমিকদের রিবেট খোলার দায়িত্ব দেওয়া হলে তাঁরা এটাকে শাস্তিমূলক কাজ মনে করেন। নতুন ডিভাইসটি সম্পূর্ণ দুর্ঘটনার ঝুঁকিমুক্ত। ফলে শ্রমিকেরা বেশ উৎসাহ নিয়েই বর্তমানে রিবেট খোলার কাজে অংশ নিচ্ছেন।
শাহজাহান আলী আরও জানান, সৈয়দপুরের কারখানায় এখন ট্রেনের যাবতীয় সিপ্রং উৎপাদনের পাশাপাশি মেরামতও হচ্ছে।
মঞ্জুর-উল-আলম চৌধুরী জানান, কামারশাল শপে উদ্ভাবিত ওই ডিভাইসটি সময়োপযোগী। ডিভাইসটি সংযোজিত হওয়ায় শ্রমিকেরা এখন স্বচ্ছন্দে সিপ্রং আলাদা করতে পারছেন। তিনি এ যন্ত্র তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন জানান।
নিউজরুম্