আর্ন্তজাতিক ডেস্ক(০৯ ফেব্রুয়ারী): মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) প্রধানের পদে নিয়োগ অনুমোদনের আগে সিনেটের শুনানিতে ড্রোন হামলা (মানুষবিহীন বিমান) নিয়েই নানা প্রশ্নের মুখে পড়েছেন জন ব্রেনান। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাঁকে এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন। তবে সিনেটে অনুমোদনের পরই ব্রেনানের নিয়োগ চূড়ান্ত হবে।
গত বৃহস্পতিবার শুনানিতে সিনেট ইনটেলিজেন্স কমিটির সদস্যরা গোপনে ড্রোন হামলা চালানো, এমন হামলার আইনগত ভিত্তি এবং ইয়েমেন ও পাকিস্তানে ড্রোন হামলা চালানোয় নানা পক্ষের সমালোচনা নিয়ে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেন ব্রেনানকে। এই কমিটির প্রধান ডায়ান ফেইনস্টেইন বলেন, ড্রোন হামলায় ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ পর্যবেক্ষণ নিয়ে একটি আদালত প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব পর্যালোচনা করা হচ্ছে।তবে ওই আদালতের ব্যাপারে আর কিছু জানাননি তিনি।
নানা প্রশ্নের মুখে ব্রেনান তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই স্বীকার করেন, মার্কিন সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযান নিয়ে ‘অনেকে বিতর্ক’ রয়েছে। একই সঙ্গে তিনি দৃঢ়ভাবে মার্কিন সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযানকে সমর্থন করেন। ব্রেনান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদ ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আল-কায়েদার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে। প্রাণঘাতী অভিযান সম্পর্কে তিনি বলেন, কোনো অভিযানে প্রাণহানির দায় সংশ্লিষ্ট অভিযান পরিচালনাকারী বাহিনীর একান্ত নিজের। ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ পর্যবেক্ষণে আদালত প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবের ব্যাপারে তিনি বলেন, এটা এমন একটি ধারণা, যা বাস্তবায়নে ‘নিশ্চিতভাবে অনেক আলোচনার’ দাবি রাখে।
ড্রোন হামলার পক্ষে দৃঢ় অবস্থানের কথা জানিয়ে ব্রেনান বলেন, সিআইএর ড্রোন হামলায় সাধারণ নাগরিক নিহত হওয়ার বিষয়টি নিছক দুর্ঘটনা। এসব ভুল স্বীকার করতেই হবে। তিনি বলেন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্র সরকারেরও এমন ভুলের বিষয়গুলো স্বীকার করে নেওয়া উচিত।
ড্রোন হামলার ব্যাপারে ব্রেনানের এমন অবস্থানের পর সিনেটররা হামলার তথ্যের ব্যাপারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ নিয়ে সরকারের স্বচ্ছতা খুবই কম। অনেক সময় এমন হত্যাকাণ্ডের বিষয়গুলো গণমাধ্যমেও ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়।
সিনেটর রন ওয়াইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কোন কোন দেশে প্রাণঘাতী অভিযান পরিচালনা করেছে, তার কোনো তালিকা সিনেট ইনটেলিজেন্স কমিটির কাছে দেননি ব্রেনান।
সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধের অংশ হিসেবে কয়েকটি দেশে আল-কায়েদার ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে কয়েকজন মার্কিন নাগরিককে হত্যার ঘটনা নিয়ে সম্প্রতি প্রতিবেদন প্রকাশ করে এনবিসি নিউজ। মার্কিন বিচার বিভাগের বরাত দিয়ে এই প্রতিবেদন করা হয়। এর কয়েক দিনের মধ্যেই সিনেটের শুনানিতে ড্রোন হামলা নিয়ে প্রশ্নবাণে জর্জরিত হলেন ব্রেনান।
সিনেটে ব্রেনানের শুনানির দিনই প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিওন প্যানেট্টা ও জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্টিন ই. ডেম্পসে সিনেট আর্মড সার্ভিসেস কমিটির কাছে স্বীকার করেন, তাঁরা সিরিয়ার বিদ্রোহীদের অস্ত্র সরবরাহ করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। কিন্তু হোয়াইট হাউস ওই পরিকল্পনা বাতিল করে দেয়। নিউইয়র্ক টাইমস।
নিউজরুম