শাহবাগ,(৯ফেব্রুয়ারী) : কাদের মোল্লাসহ যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে শাহবাগ চত্বরে ৫ম দিনের গণআন্দোলন শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের শিল্পী কবীর সুমনের শাহবাগ নিয়ে লেখা গানটি দিয়ে। শনিবার ভোরের আলো ফোটার আগেই দিনের কর্মসূচি শুরু করেছেন আন্দোলনকারীরা।অন্য দিনগুলোর মতোই শুক্রবারও রাতভর অবস্থান নেওয়া আন্দোলনের সংগঠক ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে গণআন্দোলনে যোগ দিতে শুরু করেছেন আরও অসংখ্য নগরবাসী।
শনিবার সকালে আন্দোলনের শুরুতেই শাহবাগ চত্বরে সুমনের গান বেজে ওঠে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের মাইকে। ভারতীয় বাঙালি গায়ক ও গীতিকার কবির সুমনের সেদেশে বসেই লেখা গানটি শুনেই উদ্দীপ্ত হন সমবেত মানুষেরা।
আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেশের মানুষের পাশাপাশি গানের সুরে সংহতি জানিয়ে সুমন গানটি লিখে ও সুরারোপ করে পাঠান শুক্রবার। এর পর থেকে ‘সীমানা চেনে না সুর’ শিরোনামের গানটি অলিখিত ভাবে গণআন্দোলনের ‘থিম সং’- এ পরিণত হয়েছে। গানে গানে সুমনের এ সংহতি প্রকাশই প্রমাণ করে সত্যিই ‘সীমানা চেনে না সুর’। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়িয়ে অনুভূত হয় সুমন এবং তার গিটারের অস্তিত্ব।
আসল বিচারের গণদাবিতে আন্দোলনের স্লোগান আর সুমনের গান এক হয়ে ঘুঁচিয়ে দিয়েছে সীমানার দূরত্ব। শনিবারও সেই আবহ দিয়েই শুরু হয়েছে গণআন্দোলন।
‘তুই রাজাকার-তুই রাজাকার, রাজাকারের ফাঁসি চাই’ ইত্যাদি স্লোগানে আর হাজারো মানুষের ধ্বনিতে এখন কাঁপছে শাহবাগ।
সেই গানের মাধ্যমে প্রকাশ করলেন এদেশের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা আর অনুপ্রেরণা জোগালেন আন্দোলনরত হাজারো তরুণদের ।
“গণদাবি” নামের গানটির লাইনগুলো হলো–
বিমানে উড়তে তিরিশ মিনিট
এতো কাছে তবু দূর
বিলকুল নেই পাসপোর্ট ভিসা
সীমানা চেনেনা সুর।
সীমানা চিনি না আছি শাহবাগে
আমার গিটারও আছে,
বসন্ত আজ বন্ধুরা দেখো
গণদাবি হয়ে বাঁচে ।
বাঁচো গণদাবি , বাঁচো গণদাবি
আসল বিচার চাই,
যার যা পাওনা তাকে সেটা দাও
গণদাবি একটাই।
গণআন্দোলনকারীরা স্লোগান, গান, বক্তৃতার পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধীদের ব্যঙ্গচিত্র আঁকছেন শাহবাগের বিভিন্ন রাস্তায়। মানুষের পায়ের চাপে পিষ্ট হয়ে এইসব খুনি-ধর্ষকরা আরও বেশি ঘৃণার অনলে দগ্ধ হবেন- এ চিন্তা থেকেই ব্যঙ্গচিত্রগুলো অাঁকছেন বলে জানান আন্দোলনকারীরা।
এদিকে শনিবার ভোর থেকে শাহবাগ চত্বরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বাড়ানো হয়েছে। রাতে ফিরে যাওয়া পুলিশ-ৠাব সদস্যদের স্থলে নতুন সদস্যসহ মোতায়েন করা হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল চিহ্নিত ও প্রমাণিত যুদ্ধাপরাধী আব্দুল কাদের মোল্লাকে ট্রাইব্যুনাল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার পর রায় বাতিল করে ফাঁসির দাবিতে মঙ্গলবার বিকেল থেকে শাহবাগ চত্বরে চলছে টানা গণআন্দোলন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় মহাসমাবেশ শেষ হলেও রাতভর চলে প্রতিবাদী সমাবেশ।
শনিবার ভোরে আন্দোলনকারীরা আরও জানান, এ সমাবেশ শেষ হবে সেদিন, যেদিন যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় হবে। এটাই শাহবাগের ‘গণজাগরণ’-এর ডাক।তারুণ্যে প্রকম্পিত এখনও শাহবাগের গণজাগরণ চত্বর।
নিউজরুম