৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩: উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নতুন নয়। কিন্তু প্রতিকার নেই। দুর্নীতি-অনিয়মের সঙ্গে জড়িত হিসেবে অভিযুক্ত উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়টি এখন উপাচার্যবিহীন। প্রতিষ্ঠানটি প্রায় অকার্যকর ও স্থবির হয়ে পড়েছে; যার সঙ্গে সারা দেশের চার লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীর ভাগ্য জড়িত।
কোনো প্রতিষ্ঠানে প্রশাসনিক ও ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে অনিয়ম-দুর্নীতি চলতে থাকলে যা হওয়ার কথা, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়েও তা-ই হয়েছে। আজ প্রতিষ্ঠানটির যে অকার্যকর দশা, এর অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাজ না করার যে প্রবণতার কথা প্রকাশ পেয়েছে, তার মূল কারণ দীর্ঘদিন এ ধরনের পরিস্থিতি বিরাজ করলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উপাচার্য মেয়াদ শেষে স্বাভাবিক নিয়মেই বিদায় নিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করেছে। তদন্ত প্রতিবেদন বলছে, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। অনেক ক্ষেত্রে বিদায়ী উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিধিবিধান মানেননি। সরকারের অনুমোদন ছাড়া তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিলের অর্থ খরচ করেছেন। নিয়ম-নীতি না মানার ক্ষেত্রে সাধারণভাবে যে বিষয়টি কাজ করে, তা হচ্ছে দুর্নীতি। এ ক্ষেত্রেও দুর্নীতির বিষয়টিই উঠে এসেছে তদন্ত প্রতিবেদনে। গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে এ ব্যাপারে অধিকতর তদন্তের পরামর্শও দিয়েছে তদন্ত কমিটি। আমরাও মনে করি, অধিকতর তদন্ত হওয়া উচিত এবং যাঁরাই অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত হবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে পদ-পদবি বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিদায় নেওয়ার কারণে যেন কেউ ছাড় না পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের বিরুদ্ধে আরও আগেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। সরকার সে ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। এখন প্রতিষ্ঠানটিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, একজন যোগ্য ব্যক্তিকে শিগগিরই উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হবে। আমরা আশা করব, কার্যতই একজন যোগ্য ও দক্ষ ব্যক্তিকে এই পদে নিয়োগ দেওয়া হবে, যিনি প্রতিষ্ঠানটিকে অকার্যকর দশা থেকে কার্যকর করতে আন্তরিকভাবে সচেষ্ট হবেন।
নিউজরুম