আর্ন্তজাতিক ডেস্ক(০৮ ফেব্রুয়ারী): লস্কর-ই-তাইয়েবার প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ মুহাম্মদ সাঈদকে ধরিয়ে দিতে এক কোটি ডলার ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ব্যস্ততম শহর লাহোরে সাঈদির উন্মুক্ত জীবনযাপন দেখে মনে হয় না তাঁকে ধরিয়ে দিতে এই অঙ্ক যথেষ্ট। অন্য আর দশজনের মতোই প্রকাশ্যে চলাফেরা করছেন তিনি।
সাঈদ (৬৪) বলেন, ‘আমি সাধারণ মানুষের মতো চলাফেরা করি। এটাই আমার স্টাইল।’ তিনি বলেন, আমার ভাগ্য সৃষ্টিকর্তার হাতে, যুক্তরাষ্ট্রের হাতে নয়।’
২০০৮ সালে মুম্বাই হামলার জন্য অভিযুক্ত লস্কর-ই-তাইয়েবাকে কালোতালিকাভুক্ত ও নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষজ্ঞরা বলেন, সাঈদের খোলামেলা জীবন দেখে মনে হয়, ওবামা প্রশাসন ও তাদের পুরস্কার ঘোষণার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছেন সাঈদ।মার্কিন সেনারা যখন আফগানিস্তান ত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন লস্কর-ই-তাইয়েবার যোদ্ধারাও পরবর্তী করণীয় নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। তারা কি পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে, নাকি অস্ত্র ত্যাগ করে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করবে, না কাশ্মীরে ফিরে যাবে, তা অনেকাংশে সাঈদের ওপর নির্ভর করছে।
গত সপ্তাহে নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাঈদ বলেন, তিনি ‘ভুল ধারণা’ ভাঙতে চান। তিনি বলেন, পাকিস্তানের আদালত তাঁকে অব্যাহতি দিয়েছেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র কেন পাকিস্তানের বিচারব্যবস্থাকে শ্রদ্ধা করছে না?
সাঈদের এই ভয়হীন জীবন নতুন কিছু নয় বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইউরেশিয়া গ্রুপের বিশ্লেষক ও ওবামা প্রশাসনের সাবেক কর্মকর্তা শামিলা এন চৌধুরী বলেন, ‘এটা অপ্রত্যাশিত নয়। এই লোকগুলো অপ্রত্যাশিতভাবে প্রকাশ্যে কথা বলছে না।’
জঙ্গিনেতাদের এমন প্রকাশ্য তৎপরতার কারণে এখন একটাই প্রশ্ন, মার্কিন সেনারা আফগানিস্তান ত্যাগের পর কী ঘটবে? একটা হতে পারে, লস্কর-ই-তাইয়েবার জঙ্গিরা তাদের পুরোনো রণক্ষেত্র কাশ্মীরে ফিরে যেতে পারে। সেটা হলে পরমাণু শক্তিধর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত বাধার ঝুঁকি বেড়েই যাবে।
তবে ভরসার কথা হলো, পাকিস্তান ও পশ্চিমা কিছু কর্মকর্তা আশা করছেন, ভবিষ্যতে জঙ্গিবাদ ছেড়ে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারেন সাঈদ। আর যদি তিনি জঙ্গিবাদ না-ই ছাড়েন, তবে প্রশ্ন হলো, তাঁর মিশনের সঙ্গে কতজনকে তিনি সম্পৃক্ত করতে পারবেন। কেননা ইতিমধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জঙ্গি লস্কর-ই-তাইয়েবার সঙ্গে সম্পর্ক চুটিয়ে চলে গেছে।
নিউজরুম