আর্ন্তজাতিক ডেস্ক(০৭ ফেব্রুয়ারী): চীনের নিরিবিলি গ্রাম জিসিকিয়াও। কয়েক দশক আগে কৃষিকাজ ও মৎস্য চাষই ছিল এখানকার মানুষের প্রধান জীবিকা। কিন্তু পরিস্থিতি এখন বদলে গেছে। গ্রামজুড়েই মানুষ বিষধর সাপ পুষছে। ভালো উপার্জনও করছে।
বর্তমানে ওই গ্রামে সাপের সংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ। কেউ একটা পুষছে তো অন্য কেউ পুষছে তিন হাজার সাপ। গ্রামের সর্বত্র কিলবিল করা সাপের মধ্যে অজগর ছাড়াও রয়েছে বিষধর জাত সাপ ও গোখরা।
শতাধিক সাপ রয়েছে এমন খামারগুলোতে কাঠের ছোট বাক্সে সাপ রাখা হয়। আর এসব বাক্স একটির ওপর আরেকটিকে স্তূপ করে রাখা হয়।
গ্রীষ্মকালে বিষধর সাপগুলোকে মাটির গর্তে ভরে রাখা হয়। এর মধ্যে এমনও বিষধর সাপ আছে, যেগুলো ছোবল দিলে মানুষের পক্ষে পাঁচ কদমও হাঁটা সম্ভব নয়। এর আগেই মানুষটির মৃত্যু হবে।
সাপ চাষের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে অর্থ উপার্জন। সাপের মাংস রেস্তোরাঁয় বিক্রি করা হয়। সামনেই নতুন চান্দ্রবর্ষকে বরণ করবে চীন। এ জন্য সাপের মাংসের চাহিদা অনেক বেড়েছে। ফলে উৎসব সামনে রেখে সাপের খামারিরা বড় ধরনের উপার্জনের প্রত্যাশা করছেন।
সাপের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের চাহিদারও কমতি নেই। ওষুধ তৈরির জন্য এসব ব্যবহার করা হয়। আর সাপের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দিয়ে তৈরি ওষুধের ব্যবহার সেখানে একটি ঐতিহ্যবাহী ব্যাপার।
কয়েক দশক আগে ইয়াং হংচং (৬১) নামের এক ব্যক্তি জিসিকিয়াওয়ে সাপের চাষ শুরু করেছিলেন। হংচং বলেন, ‘আমার আশা, সাপের চাষ করে আমি এবার দিগুণ মুনাফা করতে পারব।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাপ আমাদের জন্য সুখ ও সমৃদ্ধি বয়ে আনছে।’
সাপের চাষ শুরুর অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে হংচং বলেন, একটা জটিল অসুখের চিকিৎসার জন্য তিনি সেই সময় একটি বন্য সাপ ধরেছিলেন। এর পর থেকেই তাঁর নেতৃত্বে ওই গ্রামে সাপ পোষার হিড়িক পড়ে।
হংচং আরও বলেন, সাপের চাষ সত্যিই বিপজ্জনক। একবার সাপের ছোবলে একজনের মৃত্যুও হয়েছে। তার পরও সাপের চাহিদা অনেক বেড়েছে। সেই সুবাদে গ্রামের মানুষও ভাগ্য বদলের জন্য সাপের চাষকেই গুরুত্ব দিচ্ছে। বিবিসি।
নিউজরুম