স্পোর্টস ডেস্ক(০৫ ফেব্রুয়ারী): হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট থেকে মুক্তি মিলেছে। দুই ম্যাচ বসে থাকার পর বিপিএলেঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের হয়ে আজকের ম্যাচে তাই হয়তো খেলবেন সাকিব আল হাসান।কিন্তু খেলবেন অন্য একটা ব্যথা নিয়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গত হোমসিরিজের ওয়ানডে ম্যাচগুলো যে কারণে খেলেননি, ডান পায়ের সেই শিন ইনজুরি এখনোতাঁকে ভুগিয়ে যাচ্ছে! এই চোটের কারণে লম্বা সময়ের জন্য মাঠের বাইরে চলেযেতে হতে পারে দেশের সবচেয়ে বড় এই ক্রিকেট তারকাকে। বাংলাদেশ দলের আসন্নশ্রীলঙ্কা আর জিম্বাবুয়ে সফরে সাকিবকে পাওয়াও তাই এখন অনিশ্চয়তার চাদরেমোড়া।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খুলনা টেস্টের পর ওয়ানডে সিরিজ বাদ দিয়েঢাকায় ফিরে এসেছিলেন সাকিব। সেই থেকে বিপিএলের আগ পর্যন্ত দেড় মাসের মতোবিশ্রামে থাকলেও পায়ের ব্যথা এখনো আছে। এমআরআই আগেও করানো হয়েছিল একবার, কাল এ্যাপোলো হাসপাতালে করা হয়েছে আরেকবার। এর আগে করা হয়েছে একটাএক্স-রেও। এ ছাড়া আজ পায়ের হাড়েরও জটিল একটা পরীক্ষা করার কথা আছে। এসবপরীক্ষারই চূড়ান্ত রিপোর্ট পাওয়ার কথা আগামীকাল। গতকাল সাকিবকে এ্যাপোলোহাসপাতালে নিয়ে যাওয়া বিসিবির চিকিৎসক দেবাশিস চৌধুরী বলেছেন, ‘চূড়ান্তরিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই বোঝা যাবে সাকিবের সমস্যাটা আসলে হাড়েই কি না। যদিহাড়ে সমস্যা হয়, তাহলে দু-তিন মাসের বিশ্রামের প্রয়োজন হতে পারে। সাকিবআপাতত টেস্ট ক্রিকেট খেলবেন কি না, রিপোর্ট পাওয়ার পর সেটাও ভেবে দেখাহবে।’
তবে, একটি সূত্রে জানা গেছে, না খেললে যদি দ্রুত সুস্থ হওয়ারসম্ভাবনা থাকে, তা হলে আপাতত কোনো ধরনের ক্রিকেটই খেলবেন না সাকিব।বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্ব চলাকালীন প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাকিবওবলেছিলেন, ‘আমি এখনো পুরোপুরি ফিট নই। এত দিন বিশ্রাম নেওয়ার পরওপ্রত্যাশামতো কিছু হয়নি। প্র্যাকটিস শুরু করতেই আবার ব্যথা হচ্ছে। আমিপুরোপুরি সুস্থ না হয়ে খেলতে চাই না। সুস্থ হওয়ার জন্য যা করার দরকার, তা-ইকরব। মাঠে নেমে শতভাগ পারফর্ম করতে না পারলে আমার খারাপ লাগে। এখন সেটাপারছি না। পারফরম্যান্স ভালো হচ্ছে না, আবার নিজেকে দোষও দিতে পারছি না।আমার এভাবে খেলতে ভালো লাগে না।’
চোট থেকে সেরে উঠতে যদি বিদেশে গিয়েচিকিৎসা নিতে হয়, মনে মনে সেই প্রস্তুতিও নেওয়া ছিল তাঁর, ‘যদি মনে হয়বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করালে উপকার হবে, তা-ই করব। আমার নিজের শান্তির জন্যহলেও আমি তা করব। এর আগে আমার কুঁচকিতে সমস্যা ছিল। এখন সেটা একদমই নেই।আমি চাই এই সমস্যাটাও পুরোপুরি চলে যাক। এর জন্য দু-তিন মাস না খেললেও সেটাকোনো সমস্যা না।’
সাকিবের এই চোট নিয়ে এর মধ্যেই অনেক গবেষণা হয়ে গেছে।জন্মগতভাবেই তাঁর পায়ের পাতা স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি সমান (ফ্ল্যাট)। এধরনের পাতা যাদের, পায়ের চোট তাদের একটু বেশিই ভোগায়। তবে আধুনিকচিকিৎসাবিজ্ঞানে এই সমস্যা এড়ানোর সুযোগ আছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় চ্যাম্পিয়নসলিগ খেলতে গিয়ে জুতার মধ্যে পরার জন্য বিশেষ ধরনের ‘ইনসোল’ নিয়ে এসেছিলেনসাকিব। পায়ের পাতার গঠন অনুযায়ী তৈরি করা হয় এ ধরনের ইনসোল। সাকিব এখনজুতার ভেতর সেই বিশেষ ‘ইনসোল’ পরেই খেলছেন। কিন্তু তাতেও সমস্যার সমাধান নাহওয়ায় চিন্তাটা বাড়ছে। শেষ চিকিৎসা হিসেবে লম্বা বিশ্রামে যেতে হওয়ারশঙ্কাই উঁকি দিচ্ছে তাই। যদিও সাকিব বা বিসিবির চিকিৎসক কেউই শেষ কথাটাবললেন না কাল। ‘রিপোর্ট হাতে পাওয়ার আগ পর্যন্ত কিছুই বলা সম্ভব নয়’—বলেছেনসাকিব। চিকিৎসক দেবাশিস এর সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট বাশ্রীলঙ্কা-জিম্বাবুয়ে সফর, এমনকি বিপিএলে পরের ম্যাচগুলোও সাকিব খেলবেন কিনা, সবই বোঝা যাবে রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর।’
এখন সেই রিপোর্টের জন্যই অপেক্ষা করছেন সাকিব। বাংলাদেশ ক্রিকেটও কি নয়!
নিউজরুম