নাটোর,(১ ফেব্রুয়ারি): নাটোরের লালপুর উপজেলার নর্থবেঙ্গল সুগার মিলে আখ সরবরাহকারী কয়েক শ’ চাষি গত সোমবার তাদের পাওনা টাকার দাবিতে বিােভ করেন। মিলে উৎপাদিত চিনি বিক্রি না হওয়ায় অর্থাভাবে আখচাষিদের পাওনা আট কোটি টাকা এবং চিনিকলের কর্মকর্তা ও শ্রমিক-কর্মচারীদের দুই মাসের বেতন পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে চিনিকল কর্তৃপ। চিনিকলটির গুদামে এখন ৮৫ কোটি ২৩ লাখ ৮৭ হাজার টাকার চিনি অবিক্রীত রয়েছে।
নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল সূত্রে জানা যায়, গত ২০১১-১২ আখ মাড়াই মওসুমের সাত হাজার ৮৭৬ মেট্রিক টনসহ ১৭ হাজার ৪৭ দশমিক ৭৫ মেট্রিক টন চিনি সোমবার পর্যন্ত চিনিকলের গুদামে মজুদ রয়েছে, যার মূল্য ৮৫ কোটি ২৩ লাখ ৮৭ হাজার ৫০০ টাকা। এতে অর্থসঙ্কটে পরে মিলে আখ সরবরাহকারী চাষিদের পাওনা প্রায় আট কোটি টাকা পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিদিন আখ কেনার জন্য চাষিদের কাছে আরো ৪৭ লাখ টাকা করে পাওনা বাড়ছে। অন্য দিকে চিনিকলের কর্মকর্তা ও শ্রমিক-কর্মচারীদের ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসের বেতনভাতা বকেয়া পড়ে গেছে। বেতনভাতা দেয়ার জন্য প্রয়োজন প্রায় দুই কোটি টাকা। এসব ব্যয় মেটাতে চিনিকলটির সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকার প্রয়োজন। এক বছর ধরে চিনিশিল্প করপোরেশনের নির্ধারিত ডিলারেরা নিয়মিতভাবে তাদের জন্য বরাদ্দকৃত চিনি উত্তোলন করছেন না।
মিলের একটি সূত্র জানায়, কম দামের বিদেশী চিনির কারণে স্থানীয় বাজারে দেশীয় মিলের চিনির চাহিদা না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম জানান, দুই মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় শ্রমিক-কর্মচারীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অভাবের কারণে তাদের অনেকেই সুদ ব্যবসায়ীদের জালে আটকে পড়ছেন।
চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবর রহমান আখচাষিদের বিক্ষোভের কথা স্বীকার করে বলেন, ডিলারেরা নিয়মিত চিনি উত্তোলন না করায় অর্থসঙ্কট দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় চিনি ব্যবসায়ীরা জানান, বিদেশ থেকে আমদানি করা চিনি মাত্র ৪৫ টাকায় বিক্রি হওয়ায় নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের চিনি ৫২ টাকা কেজি দরে কেউ কিনতে রাজি হচ্ছেন না।
নিউজরুম