প্রথম মোবাইল ফোন সেট

0
144
Print Friendly, PDF & Email

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক(০১ ফেব্রুয়ারী): আজ থেকে প্রায় চার দশক আগে মানুষের হাতে এসেছিল প্রথম মোবাইল ফোন সেটসেটি ছিল মটোরোলার গবেষক মার্টিন কুপারের আবিষ্কৃত ডায়না টিএসিকুপার সেই মোবাইল ফোন দিয়ে প্রথম কথা বলেছিলেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বেল ল্যাবসের গবেষক জোয়েল এনজেলের সঙ্গেপ্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট গিজম্যাগের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে
মোবাইল ফোন সেট তৈরির জন্য তখন আলাদাভাবে কাজ করছিলেন মটোরোলার গবেষক মার্টিন কুপার ও বেল ল্যাবসের জোয়েল এনজেলতবে শেষ পর্যন্ত বিজয়ের হাসি হেসেছিলেন কুপার
মটোরোলা কোম্পানিতে কাজ করতেন মার্টিন কুপারওই সময় প্রতিষ্ঠানটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন প্রযুক্তিবিদ জন মিশেলতিনি একদিন কুপারের সামনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, বিশ্বের প্রথম মুঠোফোন তৈরি করবে মটোরোলা আর আবিষ্কারক হবেন কুপারকুপার সেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে জয়ী হয়ে গর্বিত করেছিলেন জন মিশেল ও তাঁর প্রতিষ্ঠান মটোরোলাকে
মার্টিন কুপার ডায়না টিএসি তৈরিতে সফল হন ১৯৭৩ সালের ৩ এপ্রিলসেটি বর্তমান সময়ের হালকা-পাতলা স্মার্টফোনের মতো ছিল নাসোয়া এক কেজি ওজনের সেই সেলুলার ফোনটি লম্বায় ছিল ১০ ইঞ্চিএকবার ব্যাটারি চার্জ হলে ২০ মিনিট কথা বলা যেতআর ব্যাটারি চার্জ করতেও লাগত অনেক সময়একসময় এর পরিচিতি দাঁড়ায় ব্রিক ফোন বা ইট আদলের ফোন
নিউইয়র্ক সিটির সিক্সথ অ্যাভিনিউয়ে হাঁটতে হাঁটতে প্রথমবারের মতো সেলুলার নেটওয়ার্কে ফোনকল করেন কুপারটেলিফোনে বিশ্বের প্রথম ফোনকল গ্রহণ করেছিলেন বেল ল্যাবসের প্রধান গবেষক জোয়েল এনজেলসেসময় সেলুলার নেটওয়ার্কে স্থানান্তরযোগ্য মুঠোফোন তৈরিতে কাজ করছিলেন জোয়েল এনজেলওজোয়েলের অফিসে সরাসরি ফোনকল করার এ ঘটনাটিই বিশ্বের প্রথম ফোনালাপ
ঘটনার প্রায় ১০ বছর পর প্রথমবারের মতো বাজারে আসে মটোরোলার তৈরি ডায়না টিএসিএ মুঠোফোনটিতে বড় বড় ২০টি বাটন বা বোতাম ছিল, বিশাল একটি রাবারের অ্যানটেনা ছিলবর্তমান যুগের তারবিহীন চার্জার ছিল না তখনএকবার চার্জ হওয়ার পর কিছুক্ষণ কথা বলেই আবারও ১০ ঘণ্টা চার্জ দিতে হতো
এখন হয়তো মুঠোফোন, স্মার্টফোনের দাম হাতের নাগালেইতবে প্রথমবারের মতো সেলুলার ফোন কেনার খরচ কম ছিল নাডায়না টিএসির দাম ছিল চার হাজার ডলারএত দাম সত্ত্বেও এ মুঠোফোন দ্য ব্রিক হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেআর এ ফোনের জনপ্রিয়তার ফলেই সেলুলার যুগের সূচনা ঘটে
১৯৯১ সালে দ্বিতীয় প্রজন্ম বা টুজি প্রযুক্তির সূচনা ঘটেফিনল্যান্ডের রেডিওলিনিয়া এ প্রযুক্তির সূচনা করেসো দ্যাট ফিনস ক্যান টক মোরস্লোগানে বাজারে আসে টুজি প্রযুক্তি
টুজির প্রায় এক দশক পর অর্থাত্ ২০০১ সালে বাজারে আসে থ্রিজি প্রযুক্তি২০০৯ সাল পর্যন্ত থ্রিজির চাহিদা বাড়তেই থাকে
বর্তমানে উন্নত মাল্টিমিডিয়া অ্যাপ্লিকেশন আর দ্রুতগতির ইন্টারনেট সম্ভাবনা নিয়ে চালু হয়েছে ফোরজি প্রযুক্তিগবেষণা চলছে ফাইভজি নিয়েও
২০০৮ সাল পর্যন্ত ধরা হতো বিশ্বের প্রতি দুজন মানুষের মধ্যে একজন মুঠোফোন ব্যবহার করে১৯৯০ সালে যেখানে এক কোটির মতো মুঠোফোন ব্যবহারকারী ছিল, ২০১১ সালে সে সংখ্যা ৬০০ কোটি পার হয়েছে২০১২ সালে মুঠোফোন ব্যবহারকারী ৭০০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে
মুঠোফোন উদ্ভাবনের পর থেকে ক্রমেই পাল্টেছে মুঠোফোনের ধরনএকসময় যা ছিল ইটের মতো মোটাসোটা, এখন তা এতটাই হালকা-পাতলা হয়েছে যে পকেটে সহজেই ধরে যায়এখন সাধারণ কথা বলার মুঠোফোন থেকে উন্নত হয়েছে স্মার্টফোন হিসেবেএকসময় যা ছিল দামি আর ব্যবসার উপকরণ, তা এখন মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় উপকরণে পরিণত হয়েছেপ্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা হিসাব করে দেখেছেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতিতে বড় ধরনের অবদান রাখছে মুঠোফোন

একনজরে বিশ্বের প্রথম মুঠোফোন
মুঠোফোনের নাম : ডায়না টিএসি, যা পরে ব্রিক নামে পরিচিতি পায়
উদ্ভাবক: মার্টিন কুপার
নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান: মটোরোলা
উদ্ভাবনের সময়: ৩ এপ্রিল, ১৯৭৩
বাজারে আসে: ১৯৮৪
দাম: প্রায় চার হাজার ডলার
ওজন: ১.১৫ কেজি
চার্জ : ১০ ঘণ্টা
টকটাইম: ২০ মিনিট
(তথ্যসূত্র: স্যালফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও পিসি সেলফ)

 

নিউজরুম

 

শেয়ার করুন