ঢাকা (৩১জানুয়ারী) : বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বলেছেন, তাদের দেওয়া শর্ত পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সংস্থাটি পদ্মাসেতু প্রকল্পে অর্থায়ন করবে না। একই সঙ্গে একটি পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ ফৌজদারি তদন্তের নিশ্চয়তা তাদের দিতে হবে।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংন ডিসিতে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জিম ইয়ং কিম এ কথা বলেন।
‘অ্যান্টি করাপশন ইফোটর্স ইন আ গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট: আ কমিটমেন্ট টু অ্যাক্ট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “আমি জানি, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ ও অর্থনীতির জন্য এই সেতু কী গুরুত্ব বহন করে।”
গত বছর ১২০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণচুক্তির কথা উল্লেখ করে কিম বলেন, “দুর্নীতির প্রমাণ দেওয়ার পরও তারা (বাংলাদেশ) আমাদেরকে যথাযথ জবাব দেয়নি।”
পদ্মাসেতু প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংকের নিজস্ব মাথা ব্যথা নেই মন্তব্য করে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বলেন, “এরপরও বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৩০টির বেশি প্রকল্পে ৪৩০ কোটি মার্কিন ডলার অনুদান দিয়ে কাজ করছে বিশ্বব্যাংক।”
আইন তার নিজের গতিতে চলবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, “দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য ডিগ্রী সহনশীলতা মানে এই নয় যে, আমরা উন্নয়ন প্রকল্পকে এড়িয়ে যাচ্ছি।”
কিম বলেন, “বিশ্বব্যাংক প্রতিকূল পরিবেশে কাজ করতে পারে। তবে, প্রতিকূল পরিবেশ কখনোই দুর্নীতির ব্যাপারে বিশ্বব্যাংককে সংশয়ে ফেলবে না।”
তিনি বলেন, “আমি জোরালো ও পরিষ্কারভাবে বলতে চাই। যখন আমাদের প্রকল্পে ও কাজে দুর্নীতি ধরা পড়বে তখন এ ব্যাপারে কোনো ধরনের সমঝোতা সহ্য করা হবে না।“
বিশ্বব্যাংকের অনুসন্ধান দল ছাড়া অন্যান্য অনুসন্ধান দলও এ প্রকল্পে নেতিবাচক কাজের প্রমাণ পেয়েছে বলে জানান কিম।
তিনি বলেন, “প্রতি বছর উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে প্রায় ২ হাজার থেকে ৪ হাজার কোটি মার্কিন ডলার এ ধরনের উন্নয়ন প্রকল্পে চুরি হয়ে যায়!”
উল্লেখ্য, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও পদ্মাসেতু প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে ঋণচুক্তি স্থগিত করে বিশ্বব্যাংক। প্রধান অনুদানদাতা বিশ্বব্যাংকের পদাঙ্ক অনুসরণ করে ঋণচুক্তি বাতিল করে এডিবি, জাইকা ও আইডিবিও। এ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করলেও আবুল হোসেনকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেয় সরকার।
বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ, পদ্মা সেতু প্রকল্পে কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য কমিশন বা ঘুষ চায় সৈয়দ আবুল হোসেনের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান সাকো ইন্টারন্যাশনাল।
নিউজরুম