বিনোদন ডেস্ক(৩১ জানুয়ারী): আর মাত্র এক দিন। সব প্রস্তুতি শেষ। কলকাতার টালিগঞ্জের গলফ ক্লাব রোডের মল্লিকবাড়িতে এখন শুধু বিয়ের আনন্দ। কাল শুক্রবার এ বাড়ির মেয়ে ভারতের বাংলা ছবির অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী কোয়েল মল্লিকের বিয়ে।
কোয়েলের বর নেসপাল সিং রানে। পাঞ্জাবের ছেলে। ভারতের বাংলা ছবি প্রযোজনা করছেন। পারিবারিকভাবে কলকাতায় আছেন অনেক বছর ধরে।
এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। কোয়েলের বাবা অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক আগেই জানিয়েছেন, বাঙালি ও পাঞ্জাবি—দুভাবেই হবে কোয়েলের বিয়ে।বিয়ের অনুষ্ঠান হবে পাঁচ দিন। থাকছে আশীর্বাদ, সংগীত, গায়েহলুদ, বিয়ে, বউভাত—সবই।
বিয়ের আগে অনেক ব্যস্ততা। এরই ফাঁকে ১৭ জানুয়ারি সকাল ১০টায় কিছুক্ষণের জন্য পাওয়া গেল কোয়েলকে। শুরুতেই তিনি জানান, তাঁর হাতে একদম সময় নেই। এখনো অনেককে দাওয়াত দেওয়া হয়নি। কিছু জায়গায় তিনি নিজেই যাচ্ছেন। কিছু কেনাকাটাও বাকি রয়ে গেছে।
‘বাবার অনুরোধ আর ফেলতে পারিনি। আপনি বাংলাদেশ থেকে এসেছেন। তাই সকালে বাইরে বের হওয়ার আগেই সময়টা বের করেছি,’ বলেন কোয়েল।
আড্ডার ঢঙেই শুরু হলো কথোপকথন।
বিয়ের আর মাত্র ১৫ দিন বাকি। অনুভূতি কেমন?
আমি দারুণ এক্সাইটেড!
পর্দায় তো অনেক বিয়ে করেছেন…
সেই বিয়ে আর এই বিয়ে এক নয়। ওখানে থাকেন পরিচালক আর তাঁর সঙ্গে থাকে স্ক্রিপ্ট। এখানে তো ওসব কিছু নেই।
রানের সঙ্গে আপনার পরিচয় কত দিনের?
আমাদের আলাপ হয়েছে বছর দশেক হবে। তবে প্রেম করছি আট বছর হলো।
বিয়ের সিদ্ধান্ত কবে নিয়েছেন?
সাত-আট মাস আগে। হঠাৎ মনে হলো, এবার বিয়ে করব। রানের সঙ্গে আলোচনার পর মা-বাবাকে বললাম। তাঁরাও রাজি হয়ে গেলেন।
রানের সঙ্গে কথা হয়?
প্রতিদিনই মুঠোফোনে অসংখ্যবার কথা হচ্ছে। দেখাও হচ্ছে।
আপনি বাঙালি মেয়ে আর বর পাঞ্জাবের ছেলে।
আমি কিন্তু প্রদেশকে গুরুত্ব দিইনি। দেখেছি মানুষটাকে। রানে চমৎকার ছেলে।
আপনি গত বছর এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, বিয়ের পর আর অভিনয় করবেন না।
আমি চলচ্চিত্রে কাজ করছি ১০ বছর হলো। চলচ্চিত্র থেকে আমি অনেক কিছু পেয়েছি।আর পরিকল্পনা করে কোনো কাজ করতে পারি না। একটা কথা জানি, আমি খুব সংসারী হব। আমি আমার জীবনের সব কটি অধ্যায় উপভোগ করতে চাই। এখন যেমন এই কাজে জীবনটা উপভোগ করছি। এরপর রানের স্ত্রী, সন্তানের মা আর ভবিষ্যতে ঠাকুরমা হয়ে জীবনের শেষ পর্যন্ত উপভোগ করতে চাই। তাই ওই সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলাম।
আপনার বাবার কাছ থেকে জেনেছি, সিদ্ধান্তটা নাকি পাল্টেছেন?
হ্যাঁ, তবে খুব বেশি কাজ করব না। এমনিতেও আমি একসঙ্গে একাধিক কাজ করিনি। রানেও চাইছে আমি যেন অভিনয় করি।
বিয়ের পর নিজের সংসার কীভাবে সাজানোর পরিকল্পনা করেছেন?
বিয়ের পর বাবার বাড়ি থেকে চলে যাব আলিপুরে, আমার শ্বশুরবাড়িতে। ওই বাড়িটিই হবে আমার নতুন ঠিকানা।
আপনার অভিনীত ছবিগুলো বাবা দেখেন?
যে কয়টা দেখেছেন, তা বেশ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছেন, আর বাড়ি ফিরে আমার অভিনয় নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন।
আপনার বাবা রঞ্জিৎ মল্লিক তো একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা।
তাই তো কাজ করতে গিয়ে যা ইচ্ছা হয়, তা-ই করতে পারি না। বাবার জনপ্রিয়তা আর সুনামের দিকটি সামনে চলে আসে। মেয়ে হয়ে তা ধরে রাখা তো আমার দায়িত্ব।
পর্দায় জিৎ ও দেবের সঙ্গে আপনার রসায়ন চমৎকার। বাস্তবে কার সঙ্গে আপনার বেশি বন্ধুত্ব?
দেব বন্ধু হিসেবে খুব ভালো। মজা, আড্ডা আর হইচই করে পুরোটা সময় জমিয়ে রাখে। জিতের সঙ্গে আমার বন্ধুত্বটা অনেক দিনের।
বিয়ের পর মধুচন্দ্রিমায় কোথায় যাচ্ছেন?
ইউরোপের একটা দেশে যাব।
অভিনেত্রী না হলে কী হতেন?
মনস্তত্ত্ববিদ।
নিজের অবসর সময়টা কীভাবে কাটান?
আমি ছবি আঁকতে ভালোবাসি। আমার মা কিন্তু চমৎকার আঁকেন। তাঁকে দেখেই শিখেছি।
কোয়েল কথা বলছেন আর কার্ড ভাঁজ করছেন। বলেন, ‘আরেকটি কথা, সবাই যেন আমাদের আশীর্বাদ করেন। ধন্যবাদ।’
নিউজরুম