২৯ জানুয়ারি, ২০১৩: পরীক্ষা নিয়ে…!!
এবারও দারুণ তর্জন-গর্জনে আনুষ্ঠানিকভাবে, সারা দেশেএকযোগে শুরু হতে যাচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা ২০১৩। কিছু পরীক্ষার্থীর চোখে ঘুমনেই। আছে শুধু এ+ এর স্বপ্ন, জীবন গড়ার স্বপ্ন, এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন। তারারাত-দিন জেগে জেগে খালি বইয়ের পাতা ওল্টাচ্ছে, পড়ছে আর প্রস্তুতি নিচ্ছেআগত পরীক্ষার। তাদের ভাবনা—তাদের কষ্ট কি সফল হবে? সার্থক হবে কি তাদের রাতজেগে পড়া?
আর কিছু পরীক্ষার্থীর ঘুম নেই মোবাইল নিয়ে, ‘১০ হাজার টাকানা, ১০ লাখ টাকা লাগলে তাও দেব, প্রশ্নপত্র পেলেই হচ্ছে…! রাত নয়টার আগেমোবাইলে পুরো প্রশ্ন এসএমএস করতে হবে…!’ পরীক্ষা-প্রস্তুতি বলে তাদেরকিছু নেই, নেই পরীক্ষার ভীতিও। তাহলে রাত জেগে পড়া পরীক্ষার্থীদের কষ্ট কিটাকার কাছে হেরে যাবে? আর যারাই বা এই অপকর্মের (প্রশ্নপত্র ফাঁস) সঙ্গেজড়িত, তাদের কি কোনো ভয় নেই? চিন্তা নেই দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে, কিংবা দেশগড়ার কান্ডারিদের নিয়ে? প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ, ‘আমরা ক্ষমতায় আসার পর থেকেএসএসসির রেজাল্ট প্রতিবারই ৮০ শতাংশের ওপরে। বাড়ছে এ+ এর সংখ্যা…।’ কিন্তু যে এ+ ধারী ছাত্রছাত্রী ৩৩ পাওয়ার যোগ্য না, তাদের নিয়ে কিসের এতহাঁকডাক? কিসেরই বা এত নটাঘটা? খারাপ ছাত্রছাত্রীরা যেখানে না পড়ে সহজেই এ+পেয়ে যাচ্ছে, ভালো ছাত্রছাত্রীরা সেখানে হাজার পড়ার পরও এ+ পাচ্ছে না। ফলেঝরে পড়ছে অনেক মেধাবী মুখ। আশা করি, দেশের স্বার্থে, দেশের জনগণেরস্বার্থে, শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বার্থে প্রশ্নপত্র ফাঁস নামের (অপ) কর্মটি আর করবেন না।
মো. সাকিব হাসান সানভী
উত্তর আধুনগর, আবাবর পাড়া লোহাগড়া, চট্টগ্রাম।
চাকরির বয়সসীমা
বর্তমানসরকার এরই মধ্যে জনগণের অনেক দাবি পূরণ করেছে। বিশেষ করে শিক্ষা খাতে বেশকিছু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, শিক্ষা কমিশন গঠন, শিক্ষার হার বৃদ্ধিইত্যাদি ক্ষেত্রে সরকার বেশ সাফল্য অর্জন করেছে। ২০০৯ সালে নির্বাচনীইশতেহারে প্রতিশ্রুতি ছিল, শিক্ষিত তরুণদের কর্মসংস্থানের বিশেষ ব্যবস্থাকরা। এই প্রত্যাশায় আমাদের তরুণ সমাজ বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগকে বিপুল ভোটে জয়ী করে সরকার গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। যার ফলেসরকার ক্ষমতায় আসার পর সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে বিপুলসংখ্যক লোক নিয়োগ করে।সরকারের এত ভালো চিন্তাভাবনা থাকা সত্ত্বেও শিক্ষিত যুবকদের প্রত্যাশিতসরকারি চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধির বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছে না কেন, তা আজ যুব সম্প্রদায়ের কাছে প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক দাবি পূরণ হচ্ছেক্ষমতায় যাওয়ার আশায়, আবার কতগুলো আন্দোলনের মুখে পড়ে। যেমনটি হয়েছেরেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলন ও প্রাণদানেরবিনিময়ে। আমরা এমন এক দেশে বাস করছি, যেখানে কোনো কিছু আপনাআপনি আসে না।ন্যায্য দাবি হলেও প্রয়োজন হয় আন্দোলন ও রক্ত। সরকারের স্বার্থসংশ্লিষ্টবিষয়ে দেশকে ধ্বংস করে হলেও তা হাসিল হয়। এটি সরকার বা বিরোধী দল, যা-ই হোকনা কেন।
প্রায় পত্রিকার পাতা খুললেই দেখা যায় সরকারি চাকরির প্রবেশেরবয়সসীমা প্রসঙ্গে অনেক লেখালেখি চলছে। কিন্তু তা শুধু ছোট কলাম চিঠিপত্রেরমধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। অনেক ছাত্রছাত্রী যুক্তিসংগতভাবেই উপস্থাপন করছেন।বয়স বৃদ্ধিতে সবার যুক্তি একই, কিন্তু আমার যুক্তি হলো, এই দাবি কিংবালেখালেখি কত দিন চিঠিপত্র কলামের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে, নাকি সরকারের এবিষয়ে যে অন্ধ দৃষ্টি আছে তার দৃষ্টিপাত ঘটবে। তা না হলে নির্বাচনের আগে এইনিয়েও রাজনীতি হবে যে, ক্ষমতায় গেলে আমাদের সরকার সরকারি চাকরিতে প্রবেশেরবয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ করা হবে। আমরা আর কোনো ইশতেহার চাই না, কোনোআন্দোলন কিংবা প্রাণ হারানোর মতো ঘটনা ঘটুক, তা-ও চাই না।
আমরা চাই, যেহেতু মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি চাকরিজীবীদেরচাকরির মেয়াদ বাড়িয়ে ৫৯ বছর করা হয়েছে, সেই প্রেক্ষাপটে শিক্ষাজীবনের শুরুআর পরিসমাপ্তির অঙ্ক একবার ভালোভাবে কষিয়ে সরকার দেখুক বয়স বাড়ানোর প্রয়োজনআছে কি না। বর্তমান সরকারের আশু দৃষ্টি কামনা করে সরকারি চাকরিতে প্রবেশেরবয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ বছর করা হোক।
মো. ইবনে সাউদ
মিঠাপুকুর, রংপুর।