পাবনা (২৮জানুয়ারী) : গত কয়েকদিন ধরে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এর মধ্যে বেশিরভাগই শিশু।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত এক সপ্তাহে ঠাণ্ডাজনিত রোগে ১৯ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আক্রান্ত হয়ে ২শ ৬ জন শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, ঠাণ্ডাজনিত রোগ যেমন নিউমোনিয়া, সেফটিসেমিয়া, পিএনএ রোগে আক্রান্ত হয়ে এসব শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া লো বার্থ ওয়েট (জন্মের সময় ওজন কম হওয়া) কারণেও কয়েকজন শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার দুপুরে পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ২০ জানুয়ারি ৩০টি শিশু ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ৪টি শিশু মারা যায়। ২১ জানুয়ারি ২৩টি শিশু ভর্তি হয়। এর মধ্যে ১টি শিশু মারা যায়। ২২ জানুয়ারি ভর্তি হয় ২৫টি শিশু। এর মধ্যে ১টি শিশু মারা যায়। ২৩ জানুয়ারি ২০টি শিশু ভর্তি হলেও কেউ মারা যায়নি। ২৪ জানুয়ারি ৩১টি শিশুর মধ্যে ৪টি মারা যায়। ২৫ জানুয়ারি ২৪টির মধ্যে ২টি মারা যায়। ২৬ জানুয়ারি ভর্তি হওয়া ৯টির মধ্যে ৫টি মারা যায় এবং ২৭ জানুয়ারি ভর্তি হওয়া ২৪টির মধ্যে ২টি শিশুর মৃত্যু হয়।
মৃত ১৯ শিশুর মধ্যে ১৪ শিশুর নাম জানা সম্ভব হয়েছে। এরা হলো, সদর উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের বাবু (১ দিন), আহম্মদপুর গ্রামের সুবর্ণা (২ বছর), আরিফপুর গ্রামের বাবু (১ ঘণ্টা), দোগাছি গ্রামের রাহাত (৬ মাস), দীপচর গ্রামের ইভা (৪ মাস), খয়েরবাগান গ্রামের বাবু (১ ঘণ্টা), ঈশ্বরদী উপজেলার লামাইয়া (৪ দিন), বিথি (১ দিন), দাশুড়িয়া গ্রামের বাপ্পি (১ দিন), আতাইকুলা থানার নেওয়াজ (১ দিন), মোহন (১১ দিন), একই থানার বাবু (১ দিন), বেড়া উপজেলার রোহান (২ দিন) ও সুজানগর থানার বাবু (১ দিন)।
এদিকে হাসপাতালে প্রতিদিনই ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশু রোগী ভর্তি করা হচ্ছে। শয্যা সংকটের কারণে একই শয্যায় গাদাগাদি করে একাধিক শিশুকে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে।
এক সপ্তাহে ১৯ শিশুর মৃত্যুর সত্যতা স্বীকার করে পাবনার সিভিল সার্জন ডা. তাহসিন বেগম জানান, শুধু ঠাণ্ডাজনিত রোগে শিশু মারা যাচ্ছে তা নয়। এর পাশাপাশি গর্ভবতী মায়েদের প্রসবজনিত জটিলতা, হাসপাতালে না গিয়ে বাড়িতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত না এমন দাই দিয়ে সন্তান প্রসব করানো, স্বল্প ওজনের শিশুর জম্মসহ এমন কিছু জটিলতার কারণেও শিশু মারা যাচ্ছে। আর শীতের সময় শিশু মৃত্যুর হারটা একটু বেড়ে যায়।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের করণীয় সম্পর্কে সিভিল সার্জন জানান, মাঠ পর্যায়ে গর্ভবতী মা ও তার স্বজনদের মা-শিশু স্বাস্থ্য সেবা সম্পর্কে সচেতন করতে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা কাজ করছেন।
পাশাপাশি গর্ভকালীন জটিলতা ও জন্মের পর শিশুর জটিলতা দেখা দিলে দ্রুত তাদের হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
নিউজরুম