এক শ থেকে দেড় শ টাকা লোকসান গুনছেন কৃষকেরা

0
205
Print Friendly, PDF & Email

কৃষি ডেস্ক(২ জানুয়ারী): সরকারের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান থেকে লাভবান হচ্ছেন চালকলমালিক, ফড়িয়া ও বড়চাষিরামোট উপাদনের বেশির ভাগ ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকেরা জোগান দিলেওতাঁরাই ধানের দাম সবচেয়ে কম পানখোদ খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে কৃষকেরাধান বিক্রি করে প্রতি মণে এক শ থেকে দেড় শ টাকা লোকসান গুনছেন
দেশেরখাদ্য-পরিস্থিতি নিয়ে পরিচালিত বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণায় বলা হয়েছে, সরকারের ধান-চাল সংগ্রহের প্রধান উদ্দেশ্যহওয়া উচিত দাম স্থিতিশীল রাখাঅর্থা ধানের দাম বেশি কমে গিয়ে কৃষক যাতেলোকসানে না পড়েন এবং চালের দাম বেশি বাড়লে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ যেনবিপদে না পড়ে
কিন্তু ওই গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, সরকারের ধান-চাল সংগ্রহঅভিযান থেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকেরা লাভবান হন নাকেননা, খাদ্যঅধিদপ্তরের সংগ্রহ করা ধান-চালের প্রায় পুরোটাই চালকল মালিকদের সঙ্গেচুক্তির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়
চালকলমালিকেরা ৯৯ শতাংশ ধান সংগ্রহ করেনফড়িয়াদের কাছ থেকেধান কাটার পরপরই ফড়িয়ারা ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকদের কাছথেকে ধান কিনে নেনবাজারে ধানের জোগান কমে এলে ও সরকারের ধান-চাল সংগ্রহপুরোদমে শুরু হলে ধান-চালের দর বাড়েকিন্তু তখন ধান-চালের মজুত থাকে বড়চাষি, ফড়িয়া ও চালকলমালিকদের কাছে
বিআইডিএস পরিচালিত বাংলাদেশে একটিসামগ্রিক ও কার্যকর খাদ্যবণ্টনব্যবস্থা পরিকল্পনার জন্য সঠিক হিসাবশীর্ষকওই গবেষণায় কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে ধান কাটার সময়কে বিবেচনা করেসংগ্রহ অভিযান শুরুর পরামর্শ দেওয়া হয়েছেখাদ্য মন্ত্রণালয় থেকেপ্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো এক প্রতিবেদনেও সংগ্রহ অভিযানের সময়কালকেপুনর্বিবেচনা করার সুপারিশ করা হয়েছেসেখানে বোরোর সংগ্রহমূল্যফেব্রুয়ারি-মার্চে ও আমনের সংগ্রহমূল্য সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ঘোষণা করার কথাবলা হয়েছে
কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এ ব্যাপারে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগাম সংগ্রহমূল্য ঘোষণা করে ধান কাটার সঙ্গে সঙ্গে সংগ্রহ শুরু করতে পারলেআমিই সবচেয়ে খুশি হবকেননা এতে কৃষক ধানের ন্যায্যমূল্য পাবেএ ধরনেরউদ্যোগ আগেও নেওয়া হয়েছিলকিন্তু শুরুতে ধানে আর্দ্রতা বেশি থাকায় তাসরকারি গুদামে রাখার পর মান নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যায়বিষয়টি ভেবে দেখাযেতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন
বিআইডিএসের গবেষণা প্রতিবেদনে বলাহয়েছে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকেরা বাজারে আসা চালের ৬৩ শতাংশ জোগান দেনবাকি ৩৭ শতাংশ বৃহ চাষিরা সরবরাহ করেনকিন্তু ক্ষুদ্র চাষিরা উপাদনেরসময়ে বিভিন্ন উস থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধ করে ধান বিক্রি করেনআবার ক্ষুদ্রকৃষকেরা ধান কাটার পর উপাদনের একটি বড় অংশ বিক্রি করে দিয়ে পরে আবার তাবাজার থেকে কিনে খানঅর্থা ধানের দাম যখন কম থাকে তখন তাঁরা বিক্রি করেন, আর চালের দর বেড়ে যাওয়ার পর তাঁদের আবার তা কিনতে হয়
বিআইডিএসের সাবেকগবেষণা পরিচালক, অর্থনীতিবিদ ড. এম আসাদুজ্জামানের মতে, সরকার ইউনিয়নপর্যায়ে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ করে তা চালকলমালিকদের কাছে দেবেচালকলগুলোতা আর্দ্রতা কমিয়ে ও ভাঙিয়ে চাল আকারে সরকারি গুদামে সরবরাহ করবেএভাবেএকটি প্রক্রিয়া তৈরি করতে পারলে সরকারি সংগ্রহ অভিযানের মাধ্যমে কৃষকলাভবান হতে পারে
বিআইডিএসের গবেষণায় বলা হয়েছে, দেশে সারা বছরে যেপরিমাণে চাল উপাদিত হয় তার ৫৩ শতাংশ বোরো মৌসুমে, ৪৩ শতাংশ আমনে ও চারশতাংশ আউশ মৌসুম থেকে আসেএপ্রিল থেকে বোরো ও নভেম্বরে আমন কাটা শুরু হলেওসরকার মে-জুন মাসে বোরো এবং ডিসেম্বর-জানুয়ারি থেকে আমন সংগ্রহ শুরু করে
খাদ্যমন্ত্রীআব্দুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, ‘ধানের সংগ্রহমূল্য ঘোষণা পুনর্বিবেচনাকরার জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করছিগুদাম বাড়িয়ে সংগ্রহের পরিমাণবাড়ানোরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে
বিআইডিএসের ওই গবেষণায় এক থেকে আড়াই একরজমি আছে, এমন কৃষকদের ক্ষুদ্র চাষি হিসেবে চিহ্নিত করে বলা হয়েছে, তাঁরামোট উপাদনের ২৭ শতাংশ, আড়াই থেকে সাড়ে সাত একর জমিতে চাষকারী মাঝারিকৃষকেরা ৪০ শতাংশ এবং সাড়ে সাত একরের চেয়ে বেশি চাষ করেন এমন বৃহ চাষিরামোট উপাদনের ৩৩ শতাংশ জোগান দেন
কৃষকের এই ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় গততিন বছরে দেশে কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি ধারাবাহিকভাবে কমছেগত ২০১০-১১অর্থবছরের তুলনায় ২০১১-১২ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি অর্ধেকে নেমে এসেছেবর্তমানসরকার ক্ষমতায় আসার বছর কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি ছিল ৫.২৪ শতাংশ, ২০১১-১২অর্থবছরে তা ২.৫৩ শতাংশে নেমে এসেছেএতে জাতীয় প্রবৃদ্ধিও লক্ষ্যমাত্রাছুঁতে পারেনিবাংলাদেশ ব্যাংকও বলেছে, এর অন্যতম কারণ ফসলের দাম ক

 

নিউজরুম

 

শেয়ার করুন