আর্ন্তজাতিক ডেস্ক(২৮ জানুয়ারী): যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে ‘নিশ্চিত’ করে বলা যায়, এমন বিষয় খুব কম আছে। তারপরও এটি মনে হয় লিখে রাখা যায়, হিলারি ক্লিনটন আগামী মার্কিন প্রেসিডেন্টনির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনয়ন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাইলেতিনিই হবেন দেশটির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট!
বিদায়ী মার্কিনপররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারির সঙ্গে ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনয়ন পেতে লড়াই করতেপারেন, এমন নেতার তালিকা অবশ্য দীর্ঘ। তালিকার শুরুর দিকে আছেন বর্তমানভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ডেমোক্র্যাট অ্যান্ড্রু কুমো, মার্ক ওয়ার্নার, মার্টিন ও’মালে প্রমুখ। তবে এই নেতাদের সবার মনেই হয়তো একটি প্রশ্ন উঁকিদেয়, হিলারি কি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে চান?
প্রতিদ্বন্দ্বীব্যক্তিদের মনে এমন প্রশ্ন উঁকি দেওয়ার কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতমজনপ্রিয় রাজনীতিবিদ হিলারি। বিদায়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এবং এর আগেবিভিন্ন দায়িত্ব পালনে সাফল্যই তাঁকে এ অবস্থানে নিয়ে এসেছে। এর সঙ্গে যোগহয়েছে তাঁর বৈবাহিক সম্পর্ক। স্বামী বিল ক্লিনটন সাবেক মার্কিনপ্রেসিডেন্টদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়। এ ছাড়া দেশজুড়ে রয়েছে তাঁর দাতানেটওয়ার্ক, প্রচারকর্মী, একনিষ্ঠ সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষী। হিলারি ইচ্ছাকরলেই তাঁর সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের তহবিল সংগ্রহ বা প্রেসিডেন্টপ্রার্থী হতে শক্ত রাজনৈতিক ভিত্তি তৈরির চেষ্টা এক কথাতেই শেষ করে দিতেপারেন। এটি করতে তাঁর ‘নির্বাচনের ব্যাপারে আমি এখনো সিদ্ধান্ত নিইনি’ বলাইযথেষ্ট।
যুক্তরাষ্ট্রের গত দুই দশকের ইতিহাসে হিলারিকেই সবচেয়ে সফলপররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ভাবা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, আধুনিক যুক্তরাষ্ট্রেরপররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার বা জেমস বেকারের মতোই সমান সফল হিলারি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীহিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তো বটেই, মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে দারুণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন হিলারি। শুধু তা-ইনয়, মার্কিন সামরিক ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গেও তাঁর ইতিবাচক সম্পর্কউল্লেখ করার মতো। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে হিলারির সাফল্যের মধ্যে রয়েছেলিবিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা সক্রিয় করা, এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্ববাড়ানোর কাজের সূচনা, বিশেষ করে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে কাজ করা, ইরানের ওপর নজিরবিহীন অবরোধ আরোপে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রাজি করানোপ্রভৃতি। অবশ্য লিবিয়ার বেনগাজিতে হামলায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতসহ চারজন নিহতহওয়ার ঘটনায় ব্যর্থতার দায় স্বীকার করতে হয়েছে তাঁকে।
হিলারিপ্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে চাইলে দল ও মার্কিন জনগণ অবশ্যই তাঁর সার্বিকসাফল্যের কথা বিবেচনা করবে। আর ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনয়ন তাঁরই পাওয়ারকথা। কারণ, এখন সক্রিয় ডেমোক্র্যাট দলীয় রাজনীতিকদের মধ্যে তিনিই সুপরিচিত ওজনপ্রিয়। হিলারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হলে তিনিই হবেন দেশটির প্রথম নারীপ্রেসিডেন্ট। আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে ২০১৬ সালে। হিলারির জন্যসুবিধা হলো, নির্বাচন করতে চাইলে সেই প্রচারণা শুরুর জন্য দুই বছর সময়পাচ্ছেন তিনি। এই সময়ে তিনি শক্তি সঞ্চয় ও প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।সিএনএন।
নিউজরুম