তুমি বড় হয়ে কী হতে চাও?

0
234
Print Friendly, PDF & Email

জানুয়ারি, ২০১৩:তুমি বড় হয়ে কী হতে চাও? ছোটবেলার এই প্রশ্নের জবাবে অনেকেই মাথা চুলকে, এদিক-ওদিক ভেবে উত্তর দিয়ে দেয়ডাক্তার না হয় ইঞ্জিনিয়ার, না শিক্ষক, উহু পাইলটকিন্তু এসব উত্তর হয়তো অনেক সময়ই টিকে থাকতে পারে নাসেখানে জড়ো হতে থাকে নানা স্বপ্ন, সৃজনশীলতার রঙিন কল্পনাসেই কল্পনা আর চাওয়ার সঙ্গে বাস্তবের সাক্ষা সবার জীবনে কি হয়? তারুণ্যের স্বপ্ন ও পোশাকশিল্পের ভবিষ্য সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করে ২০১২ সালের ১৪ মার্চ থেকে যাত্রা শুরু করেছে বিজিএমইএ ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকার উত্তরায় অবস্থিত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে একদিন সকালে হাজির হইবাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে ভেতরে একঝাঁক সৃষ্টিশীল তরুণের আনাগোনা চলছেতবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর পা রাখতেই রঙিন দেয়াল আর নানা নকশার পোশাক আয়োজনে তা বোঝা হয়ে যায়সাধারণ ক্লাসরুমগুলোর মতো এখানকার রুমগুলো কেবল একঘেয়ে চেয়ার-টেবিলে ঠাসা নয়একেকটা ক্লাসরুমের গড়ন একেক রকমশিক্ষার্থীদের এখানে বই পড়ার পাশাপাশি হাতে-কলমে কাজ শেখার ওপর জোর দেওয়া হয়এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাশন ডিজাইন অ্যান্ড টেকনোলজি, নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচার অ্যান্ড টেকনোলজি, অ্যাপারেল ম্যানুফ্যাকচার অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগসহ মোট ১১টি বিভাগ রয়েছেকথা হলো কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গেনিজেদের পড়াশোনা ও কাজের ব্যাপারে ভীষণ উচ্ছ্বসিত তাঁরাকেউ গভীর মনোযোগে ডিজাইন আঁকছেন, কেউ কাপড় কাটছেন, কেউ মেশিনপত্র নিয়ে ব্যস্তআবার আরেক দলকে দেখা গেল লাইব্রেরির বইয়ের পাতায় নিমগ্ন
ফ্যাশন ডিজাইন অ্যান্ড টেকনোলজি বিষয়ে পড়তে আসা প্রসঙ্গে তামান্না হায়দার বলেন, ছোটবেলা থেকে খুব করে ছবি আঁকতামমা-বাবার ইচ্ছা ছিল ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হবকিন্তু আমি নিজের শখটা পূরণ করতে চেয়েছিতাই এখানে পড়তে আসানিজেদের স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যাওয়া অনেক তরুণের সঙ্গেই কথা হলোতাঁদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম বললেন ভবিষ্য সম্ভাবনার কথাবর্তমান চাকরির বাজারে বস্ত্রশিল্প খাতে কাজের প্রচুর সুযোগ আছেঅনেক ক্ষেত্রেই যোগ্য ব্যক্তির অভাবে বিদেশিদের নিয়োগ দেওয়া হয়তাই যোগ্যতা তৈরি করতে পারলে কাজের অভাব হবে নাযে যেমনটাই সেজে আসুক না কেন, এখানে সেটাই ফ্যাশন আর তা নিয়েই চলে আলোচনা, গবেষণাহাসতে হাসতে বললেন মিতু, নীলা ও বনিএখানকার বেশ দারুণ ও আকর্ষণীয় একটা ব্যাপার হচ্ছে, ফ্যাশন শোশিগগিরই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় একটি জাতীয় প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে যাচ্ছে, সেটি হচ্ছে ন্যাশনাল ফ্যাশন ডিজাইন কনটেস্টএ ছাড়া আমাদের প্রতিটি উসবেই আয়োজন করা হয় ফ্যাশন শোরআমাদের চেষ্টা থাকছে আশপাশের দেশগুলো যেন আমাদের দেশের ফ্যাশনকে প্রভাবিত করতে না পারে, বরং আমাদের কাজ দিয়ে আমরা যেন বিশ্বের মানুষের কাছে দেশকে তুলে ধরতে পারিতাঁদের সবার কথাই হলো, বস্ত্রশিল্পের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন কাজে, যেমন মেশিনারি, টেকনোলজি ইত্যাদি প্রয়োজনে আয়ের একটা বড় অংশ খরচ হয়ে যায়আমাদের দেশের তরুণেরা এখন এসব বিষয়ে ধীরে ধীরে দক্ষতা অর্জন করছেনএমন একদিন আসবে, যেদিন এসবের পেছনে আর খরচ করতে হবে নাআমাদের বস্ত্রশিল্প পুরোপুরি স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠবে
প্রথম বর্ষ থেকেই এ বিশ্ববিদ্যালয় সত্যিকারের জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র হয়ে উঠবে এবং সৃজনশীল ও স্বনির্ভর বস্ত্রশিল্প প্রসারের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখবে, এমনটাই সবার প্রত্যাশা
বিজিএমইএ ফ্যাশন ডিজাইন অ্যান্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জানান, দেশের পোশাকশিল্পের ব্যাপক প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন শ্রমশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন, বিজিএমইএর তত্ত্বাবধানে বিজিএমইএ ইনস্টিটিউট অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৯ সালে২০১২ সালের মার্চে এটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ২২টা ল্যাবরেটরি আছেএগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার করার জন্য যে কজন শিক্ষার্থী দরকার, আমরা ততজন শিক্ষার্থীই ভর্তি করিয়ে থাকিভর্তি পরীক্ষায় লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার পাশাপাশি ড্রয়িং, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞানের ওপর জোর দেওয়া হয়প্রতি ক্রেডিটের খরচ সাড়ে তিন হাজার টাকাচার বছরের কোর্স শেষ করতে এখানে গড়ে চার থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা দরকার হয়

 

শেয়ার করুন