হলমার্ক কেলেঙ্কারি শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ

0
188
Print Friendly, PDF & Email

ঢাকা (২৭জানুয়ারী) : বহুল আলোচিত হলমার্কের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় ‘নন ফান্ডেড’ ঋণে কারসাজির অভিযোগে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের ৭ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্র্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রোববার বেলা ১১টায় সেগুন বাগিচা দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তারা হলেন- শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড ইস্কাটন শাখার অ্যাসিসট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (এভিপি) ও ডেপুটি ম্যানেজার এস  এম হাসানুল কবীর, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপক মো. আসলামুল হক, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম। পান্থপথ শাখার রিলেশনশিপ ম্যানেজার শামসুল আরেফিন সিদ্দিকী, ফার্স্ট এভিপি হেলাল উদ্দিন আহম্মেদ, এভিপি নিয়াজ মোহাম্মদ খান  এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ঐ শাখার ব্যবস্থাপক মো. আব্দুর রহিম।

দুদকের প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা ও জ্যেষ্ঠ উপ-পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে একটি টিম তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।

শিবলী বাংলানিউজকে জানান, নন-ফান্ডেড অংশের প্রায় ১১০ কোটি টাকা  জালিয়াতির ঘটনায় জিজ্ঞাসাদের জন্য তাদের তলব করা হয়েছে।

দুদক জানায়,  ১৯ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশে ২৭ জানুয়ারি ৭ কর্মকর্তাকে, ২৮  তারিখ ৬ কর্মকর্তাকে এবং ২৯ তারিখ ৬ কর্মকর্তাকে সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে।

২৮ জানুয়ারি ব্যাংকটির যে ৬ কর্মকর্তাকে তলব করা হয়েছে তারা হলেন- গুলশান শাখার এভিপি মো. মনোয়ারুল ইসলাম, সিনিয়র অফিসার জান্নাত লুনা, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডেপুটি ম্যানেজার মো. নজরুল ইসলাম, জুনিয়র অ্যাসিসট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট গালিব মাহবুব, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও গুলশান শাখার ম্যানেজার মোতালেব হোসেন ও নারায়ণগঞ্জ শাখার অফিসার তাহমিনা আক্তার।

২৯ জানুয়ারি যে ৬ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে তারা হলেন, ব্যাংকটির নারায়ণগঞ্জ শাখার, জুনিয়র এভিপি ও ডেপুটি ম্যানেজার হরিলাল দেবনাথ, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. কামরুল ইসলাম, অফিসার সাজিয়া ইসলাম, মো. ওয়াজিদুল ইসলাম, জুনিয়র এভিপি ও ডেপুটি ম্যানেজার নাফিসা হাবিব এবং সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ম্যানেজার এস এম রাশেদুল করিম।   

নন-ফান্ডেড অংশের অনুসন্ধান পর্যায়ে জনতা ব্যাংকের ৩ শাখার ১৭ জনকে এবং সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের (এসআইবিএল) ২০ কর্মকর্তাকে ২০, ২১ ও ২২ জানুয়ারি জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক।

তদন্ত টিম জানায়, হলমার্কসহ টি অ্যান্ড ব্রাদার্স, ডিএন স্পোর্টস, প্যারাগন গ্রুপ, নকশী নিট, খান জাহান আলী গ্রুপসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে ঋণ পেতে সহযোগিতা করেন শাহাজালাল ইসলামী ব্যাংকসহ প্রায় ৩০টি ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এলসির বিপরীতে পণ্য সরবরাহকারী বিভিন্ন নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে ঋণ নেয় এসব প্রতিষ্ঠান।
আদতে এসব প্রতিষ্ঠান কোনো পণ্য সরবরাহ করেনি। তবে পণ্য সরবরাহের স্বপক্ষে ভুয়া কাগজপত্রের ভিত্তিতে বিল তৈরি করা হয়।

জানা গেছে, সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা হোটেল শাখা থেকে সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা হোটেল (সাবেক হোটেল শেরাটন) শাখা থেকে হলমার্ক মোট দুই হাজার ৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে।
এর মধ্যে স্বীকৃত বিলের বিপরীতে পরিশোধিত (ফান্ডেড) অর্থ হচ্ছে এক হাজার ৫৬৮ কোটি ৪৯ লাখ ৩৪ হাজার ৮৭৭ টাকা এবং নন ফান্ডেড হলো এক হাজার একশত সতের লাখ টাকা।
 
গতবছরের ৪ অক্টোবর ফান্ডেড টাকা আত্মসাতের অভিযোগে  সোনালী ব্যাংক ও হলমার্কের ২৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা করে দুদক।

এছাড়া গত ১ জানুয়ারি ফান্ডেড প্রায় সাড়ে তিনশত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৩৫ জনের বিরুদ্ধে ২৬টি মামলা করে দুদক। যে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয় সেগুলো হলো- টি অ্যান্ড ব্যাদার্স, প্যারাগন নিট অ্যান্ড কম্পোজিট, খানজাহান আলী সোয়েটার, নকশী নিট কম্পোজিট এবং ডিএন স্পোটর্স।

মামলায় এই পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের মালিক, কর্মকর্তা এবং সোনালী ব্যাংকের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা রয়েছেন। এখন নন ফান্ডেড টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে দুদক।

শেয়ার করুন