ঢাকা (২৭জানুয়ারী) : তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, সরকার গণমাধ্যমে কর্মরতদের আইনগত নিরাপত্তা বিধানের জন্য অতি জরুরি কয়েকটি নীতিমালা প্রণয়ণের উদ্যোগ নিয়েছে।
তিনি সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে আগামী ৩ মাসের মধ্যে জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা, জাতীয় চলচ্চিত্র নীতিমালা এবং বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সংক্রান্ত, তিনটি নীতিমালার একটি চূড়ান্ত রূপ দাঁড় করাতে পারবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন।
তিনি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা শিার ৫০ বছর পূর্তি উপলে ইউনেস্কো-এর সহোযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবপ্রতিষ্ঠিত ‘টেলিভিশন অ্যান্ড ফিল্ম স্টাডিজ’ বিভাগের উদ্যোগে কাওরান বাজারস্থ টি.কে ভবনের যাত্রী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ সব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা, চলচ্চিত্র নীতিমালা এবং বেসরকারি টেলিভিশন সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের কাজে হাত দিয়েছি। আশা করছি আগামী তিন মাসের মধ্যে এর সাথে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আমরা এর একটি চূড়ান্ত রূপ দিতে পারবো। এটা গণমাধ্যমের জন্য একটি বড়ো অর্জন হবে বলেও আমি মনে করি।
তিনি বলেন, তথ্য পণ্য নয় এটি একটি সামাজিক বিষয়। তাই তথ্য নিয়ে যারা নাড়াচাড়া করবেন তাদের একটা দায়বদ্ধতা রয়েছে- সমাজের প্রতি, রাষ্ট্রের প্রতি এবং বস্তুনিষ্ঠতার প্রতি। তিনি অবাধ তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগকে একটি স্বচ্ছ কাঁচের ঘরের সাথে তুলনা করে বলেন, এই ঘরের ভেতরেই নারী-শিশু, সমাজ, রাষ্ট্র, সংস্কৃতি ও সার্বভৌমত্ব এবং অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা বিধান করতে হবে।
তিনি বলেন, গণমাধ্যম হলো আয়নার মতো, যাতে একজন সংবাদকর্মী সবকিছু দেখতে পাবেন। কিন্তু কতটুকু দেখবেন আর কতটুকু দেখানো যাবে তার বিচার বা সেলফ সেন্সরশীপ, সেলফ এডিটিং থাকতে হবে।
এজন্য শিাগত যোগ্যতার পাশাপাশি গুণগত প্রশিণে উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে কর্মনিষ্ঠ হতে তিনি সাংবাদিক সমাজের প্রতি আহবান জানান।
গণমাধ্যমকে কোন আইনদ্বারা অস্বচ্ছ করতে চান না উল্লেখ করে ইনু বলেন, নেগেটিভিজম এবং পজেটিভিজমের সীমারেখা কোথায়, সে সম্পর্কে গণমাধ্যমকর্মীদের স্পষ্ট ধারনা থাকতে হবে।
অসত্য, অর্ধসত্য, আংশিক তথ্য সম্বলিত এবং সমাজে হিংসা-বিদ্বেশ ছড়াতে পারে এমন কোন কিছু প্রচার না করে বস্তুনিষ্ঠ, সৎ ও নির্ভিক সাংবাদিকতার পথে এগিয়ে যাবার জন্য তিনি তরুণ সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানান।
কর্পোরেট স্বার্থ ত্যাগ করে সংবাদ পরিবেশিত হলে দেশ ও জাতি সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
টেলিভিশন অ্যান্ড ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এজেএম শফিউল আলম ভূইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন দেশে সাংবাদিকতা শিার অন্যতম প্রথিকৃৎ প্রবীণ অধ্যাপক ড.শাখাওয়াৎ আলী খান এবং দেশে ইউনেস্কো’র দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কিচি ওয়াসু।
অধ্যাপক ড. শাখাওয়াৎ আলী খান গণমাধ্যমে শুধু নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশন না করে ইতিবাচক এবং উন্নয়নমূলক সংবাদ পরিবশেনের আহবান জানিয়ে বলেন, বেশি নেতিবাচক সংবাদে দেশের জণগণের মাঝে হতাশার সৃষ্টি হতে পারে।
নিউজরুম