সিলেটে ট্রেনে ভাঙচুর-আগুন

0
180
Print Friendly, PDF & Email

সিলেট (২৪জানুয়ারী) : পরীক্ষায় ফেল করার পরও উত্তীর্ণ করিয়ে দেওয়ার দাবিতে ট্রেন আটকে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কয়েকশ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে, নিজেরদের ভুল বুঝতে পেরে আন্দোলন থেকে সরে এসেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা আর আন্দোলন করবেন না বলে জানিয়েছেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে অধ্যক্ষ সুশান্ত কুমার বসু বাংলানিউজকে বলেন, “শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষক ও পুলিশের যৌথ আলোচনা হয়। আলোচনায় শিক্ষার্থীদের পলিটেকনিকের ‘ছাত্র প্রবিধান’ বুঝিয়ে দেওয়া হলে তাদের ভুল বুঝতে পারে ও আন্দোলন থেকে সরে আসার ঘোষণা দেয়।”

তবে ট্রেন থামিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের জন্য জিআরপি পুলিশ মামলা দায়ের করবে বলে জানান বৈঠকে উপস্থিত সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আইয়ুব।

এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুরমা ফাঁড়ি পুলিশের ইন-চার্জ তারেক জানান, বৃহষ্পতিবার সকাল ১০টায় ছাতক থেকে সিলেটের উদ্দেশে ছেড়ে আসা ট্রেনটি পলিটেকনিকের কয়েকশ শিক্ষার্থী সিলেট স্টেশনের কাছে ২ ঘণ্টা থামিয়ে রাখে।

এসময় ট্রেনের দুটি হেডলাইট ভাঙচুর করা হয়। এছাড়া সকাল সোয়া ১০টার দিকে বিভিন্ন বগির ১৫টি গ্লাসও ভাঙচুর করা হয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা দুটি বগিতে আগুন ধরিয়ে দিলে ৪টি সিট পুড়ে যায়।

এজন্য জিআরপি পুলিশ মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানান তিনি। এতে কয়েকশ জনকে আসামি করা হতে পারে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে কয়েকশ শিক্ষার্থী ছাতক রেললাইনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে ট্রেন এলে ট্রেন থামিয়ে ভাঙচুর করেন তারা। কিছু ছাত্র বগিতে ঢুকে আগুন ধরিয়ে দেয়।

এসময় শিক্ষার্থীরা দাবি জানায়, সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের যেসব শিক্ষার্থী ড্রপ আউটের শিকার হয়েছেন, তাদের পাস করিয়ে পরবর্তী সেমিস্টারে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতে হবে। নইলে ট্রেন ছাড়া হবে না।

শিক্ষার্থীদের এ দাবি অহেতুক উল্লেখ করে পলিটেকনিকের অধ্যক্ষ সুশান্ত কুমার বসু জানান, সারাদেশে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলো একই নিয়মে পরিচালিত হচ্ছে। ছাত্রদের প্রবিধান অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা ঠিক রয়েছে। এ নিয়ে ছাত্রদের আন্দোলন করা ঠিক নয়।

শিক্ষার্থীদের ট্রেন আটকে দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “কিছু উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী কয়েকশ শিক্ষার্থীকে আন্দোলনের দিকে নিয়ে গেছে। সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের আলোচনায় বসার আহ্বান জানানো হলেও তারা তা না মেনে ট্রেন আটকে দিয়েছে।”

অধ্যক্ষ আরও জানান, ৪ সেমিস্টারের এক সেমিস্টারে ১৮ থেকে ১৯ জন শিক্ষার্থী ৩টির বেশি বিষয়ে ফেল করে। এসব ফেল করা শিক্ষার্থী নেতৃস্থানীয় হওয়ায় তারাই কয়েকশ ছাত্রকে আন্দোলনের দিকে নিয়ে গেছে।

পরে বেলা সাড়ে ১১টায় শিক্ষক, পুলিশ ও ছাত্ররা বৈঠকে বসে বিষয়টির সমাধান করে। এর পর আন্দোলন থেকে সরে আসে শিক্ষার্থীরা।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিলেট পলিটেকনিকের অধ্যক্ষ সুশান্ত কুমার বসু, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ) আমিনুল ইসলাম. অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আইয়ুব, দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশের ওসি মো. নাসির উদ্দিন, জিআরপি পুলিশের পরিদর্শক আলমগীর প্রমুখ।

জিআরপি পুলিশের পরিদর্শক আলমগীর জানান, রেলওয়ে সিলেট স্টেশন কর্তৃপক্ষ এজাহার দিলে যথাসময়ে মামলা দায়ের করা হবে।

নিউজরুম

শেয়ার করুন