আর্ন্তজাতিক ডেস্ক(২১ জানুয়ারী):ভারতে কংগ্রেসের সহসভাপতি পদে রাহুল গান্ধীকে নির্বাচিত করা হয়েছে। আর এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রী পদে দলের পক্ষ থেকে তাঁর মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা আরও বাড়ল।
বিশ্লেষকদের মতে, শহরের মধ্যবিত্ত সম্প্রদায় এবং তরুণ প্রজন্মের সমর্থন লাভের বিষয়টিকে কংগ্রেস বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। দলটির নীতিনির্ধারকেরা আগামী বছরের শুরুতে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনে রাহুল গান্ধীর তারুণ্যের ওপর আস্থা রাখতে চান। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, কংগ্রেসের প্রধান সোনিয়া গান্ধী এবং শীর্ষস্থানীয় অন্যান্য নেতা সম্প্রতি জয়পুরে অনুষ্ঠিত দলীয় বৈঠকে এসব বিষয়ে একমত হয়েছেন।
১২০ কোটি জনগণের দেশ ভারতের দুই-তৃতীয়াংশের বয়স ৩৫ বছরের মধ্যে। শহরমুখী মানুষের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। তাই গ্রামাঞ্চলের ভোটারদের ওপর রাজনৈতিক দলগুলোর নির্ভরশীলতা কমে আসছে। এই পরিবর্তনের বিষয়টি মাথায় রেখে কংগ্রেস নিজেদের রাজনৈতিক কৌশল পাল্টানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। টানা নয় বছর ক্ষমতায় থেকে দলটি অনেকটা গণবিমুখ হয়ে পড়েছে বলে প্রচার রয়েছে। সোনিয়া গান্ধী গ্রামোন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করে দরিদ্র জনসাধারণের সমর্থন অর্জনে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি এবার নাগরিক মধ্যবিত্ত শ্রেণীর তরুণদের কর্মসংস্থানের বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন।
দলীয় বৈঠকে সোনিয়া বলেন, পরিবর্তনশীল ভারতকে উপলব্ধি করতে হবে। এখনকার তরুণেরা আগের তুলনায় উচ্চশিক্ষা অর্জন করছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁদের উৎসাহ-উদ্দীপনা ও চাহিদাও পাল্টেছে। সমাজের এই অংশটিকে কোনোভাবেই বিভ্রান্ত বা বঞ্চিত হতে দেওয়া যাবে না।
ভর্তুকি হ্রাসসহ বিভিন্ন সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ করে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বিষয়টি সামনে এনে মনমোহনের নেতৃত্বাধীন সরকার তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে চায়। রাজনৈতিক বিশ্লেষক অমূল্য গাঙ্গুলি বলেন, শহরবাসী ও তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করার পাশাপাশি কংগ্রেসকে আরও সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। দুর্নীতিগ্রস্ত আমলাতন্ত্র ও পুলিশ প্রশাসনে পরিবর্তন আনতে হবে। অর্থনৈতিক সংস্কারের পথ সুগম করতে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী পদে যদি মনোনয়ন পান, তাহলে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বিতর্কিত নেতা নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে রাহুল গান্ধীর লড়াই হবে। গুজরাট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মোদি সুশাসন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও গণমাধ্যম প্রসঙ্গে আধুনিক কৌশল গ্রহণ করে ইতিমধ্যে জনগণের আস্থা অর্জনের প্রমাণ দিয়েছেন।
বিশ্লেষকেরা মনে করেন, রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা বিবেচনায় তাঁর তুলনায় রাহুল অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছেন। তবে মোদির বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ হয়তো রাহুলকে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে যাবে। তা ছাড়া কেন্দ্রীয় শাসক দল হিসেবে গত নয় বছরে কংগ্রেসের সাফল্যও রাহুলকে এগিয়ে রাখবে।
নিউজরুম