ঢাকা (২০ জানুয়ারী) : দেশের সাদা সোনা নামে খ্যাত চিংড়ি শিল্পের উন্নয়নে সরকার তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করা হচ্ছে বাংলাদেশ হিমায়িত খাদ্য রফতানিকারক সমিতি (বিএফএফইএ) থেকে।
যার প্রভাবে হিমায়িত খাদ্য রপ্তানি গত বছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় ২০১২-১৩ অর্থ বছরের জুলাই-ডিসেম্বর মাসে কমেছে প্রায় ৬’শ কোটি টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএফএফইএ’র পরিচালনা পর্ষদের এক সদস্য বলেন, নানা ঝুঁকি নিয়ে বর্তমানে ব্যবসা টিকিয়ে রেখেছেন চিংড়ি শিল্পের উদ্যোক্তারা। প্রতিনিয়ত লোকসান গুণতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে যাবে। চিংড়ির দাম বেশি থাকার কারণে বিশ্ববাজারে এর চাহিদা হ্রাস পাচ্ছে। বাড়ছে চিংড়ির বিকল্প ভেন্নামি মাছের উৎপাদন।
তিনি আরও বলেন, এ মাছ দেখতে প্রায় চিংড়ির মতোই। তাছাড়া এর স্বাদ চিংড়ির কাছাকাছি এবং এর দাম কম থাকায় আন্তর্জাতিক ক্রেতারা ভেন্নামি মাছের দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশ এ মাছ উৎপাদনের অনুমতি নেই। বিশ্ব বাজার খারাপ হওয়ায় বছর খানেক ধরে ভেন্নামি মাছ উৎপাদনের ব্যাপারে অনুমতি চাওয়া হচ্ছে বিএফএফইএ থেকে। কিন্তু এ বিষয়ে সরকার থেকে তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছেনা।
এ বিষয়ে বিএফএফইএ সভাপতি কাজী শাহনেওয়াজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা বেশ কিছুদিন যাবৎই ভেন্নামি মাছ উৎপাদনের অনুমতি সরকারের কাছে চেয়েছি। এ ব্যাপারে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। তবে এখনো আমরা ভেন্নামি মাছ উৎপাদনের অনুমতি পাইনি। আর মূলত এই ভেন্নামি মাছের প্রভাবেই আমাদের দেশের চিংড়ি রপ্তানি কমে যাচ্ছে। এমনটা চলতে থাকলে এ শিল্প ভবিষ্যতে বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়তে পারে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সদস্যরা বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। ইপিবির সহ-সভাপতি শুভাসিষ বসুর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০১২-১৩ অর্বছরের প্রথম ছয় মাসে হিমায়িত খাদ্য রফতানি করে আয় হয়েছে ২ হাজার ৩শ’ ৩৫ কোটি (২৮ দশমিক ৯৭ কোটি ডলার) টাকা। এর মধ্যে চিংড়ির রপ্তানি আয় ছিলো ২ হাজার ৩শ ২১ কোটি টাকা। অথচ একই সময়ে ২০১১-১২ হিমায়িত খাদ্য রপ্তানি আয় ছিলো ২ হাজার ৯শ’ ৭৩ কোটি ডলার (৩৬ দশমিক ৭৬ কোটি ডলার)। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে হিমায়িত খাদ্য রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২ হাজার ৬শ’ ৭৪ কোটি টাকা।
নিউজরুম