নাটোর (২০জানুয়ারী) : নাটোরে ৫০ সহস্রাধিক শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে রাসায়নিকমুক্ত বারোমাসি পেয়ারা, যার ফলে স্বাবলম্বী হয়েছে গ্রামীণ জনপদের শত শত বেকার যুবক। অন্যান্য ফসলের চেয়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় যেমন বাণিজ্যিকভাবে এই পেয়ারার চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে, অন্যদিকে বিষমুক্ত হওয়ায় কারণে ভোক্তাদের কাছেও এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে।
জেলার চাহিদা মিটিয়ে এসব পেয়ারা এখন পৌঁছে যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। নাটোর সদর উপজেলার কদম সাতুরিয়া গ্রামের উচ্চ শিক্ষিত যুবক সেলিম রেজা। অন্য দশজনের মত শিক্ষাজীবন শেষে চাকরি নামক সোনার হরিণের পিছে না ছুটে পেয়ারা চাষ করে নিজের ভাগ্য গড়ে স্বাবলম্বী হতে পেরেছেন। অনেককে দেখিয়েছেন তিনি কর্মসংস্থানের পথ।
কম পরিশ্রম, স্বল্প বিনিয়োগ ও অন্যান্য ফসলের চেয়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় সেলিম রেজার দেখাদেখি এগিয়ে এসেছেন কদম সাতুরিয়া গ্রামের শাজাহান, আব্দুস সামাদসহ আরো অনেকে। বারোমাসি পেয়ারা চাষ করে অভাবনীয় সাফল্যে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন এলাকার মানুষ।
অন্যদিকে, গ্রামীণ জনপদের কৃষি শ্রমিকদের সারা বছর কাজের সংস্থান করে দিয়েছে পেয়ারা বাগান। কৃষি শ্রমিক আমির হামজা জানান, আগে সারা বছর কাজ পেতেন না। এখন মাসিক ৬ হাজার টাকা বেতনে কাজ পেয়েছেন পেয়ারা বাগানে।
নাটোরের উদ্যান তত্ত্ববিদ আব্দুল আওয়াল জানান, বারোমাসি পেয়ারা চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয় ৩ থেকে ৪ বছর আগে। জেলার প্রায় ৬০০ হেক্টর জমিতে বারোমাসি পেয়ারার বাগান আছে। বাগান মালিক বা চাষীদের জন্য অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায় এসব বাগানগুলোতে প্রতিদিন প্রায় ৪/৫ হাজার লোকের প্রয়োজন হচ্ছে। এছাড়া বছরে ৫০ থেকে ৬০ হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান সম্ভব হচ্ছে এই সব পেয়ারা বাগানে। তিনি আরো জানান, দেশের মানুষ বাগান থেকে মানুষ সারা বছর রাসায়নিকমুক্ত ফল খেতে পারছে। স্থানীয় কৃষিবিভাগ উন্নত জাতের ও মানসম্মত চারা দিয়ে বাগান চাষীদের সহায়তা করছে।
অন্যান্য ফসলে যেমন প্রথমেই অর্থব্যয় বেশি হয় কিন্তু বারোমাসি পেয়ারা চাষে শুরুতে খুব বেশি পুঁজি বিনিয়োগ করতে হয় না। বাগান তৈরির প্রথম ৬ মাস সরিষা, রাই, আলু, মুগডাল প্রভৃতি প্রাথমিক পর্যায়ের ফসল থেকেই আয় হতে থাকে।
এরপর ফল দেওয়া শুরু হলে প্রায় প্রতিদিনই পেয়ারা বিক্রির টাকা ঘরে আসে। একটি পেয়ারা গাছ থেকে বছরে ১৬ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হয়।
নিউজরুম