প্রচণ্ড শীত ও ঘন কুয়াশায় আলু ক্ষেতে লেটব্লাইট রোগের আশঙ্কা দেখা দেয়ায় বগুড়ার শিবগঞ্জ ও দুপচাঁচিয়ার আলুচাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় কৃষি বিভাগের কোনো কর্মকর্তাকে তারা পরামর্শক হিসেবে পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে করে আলুর ফলনে মারাত্মক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শিবগঞ্জ (বগুড়া) সংবাদদাতা জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে যেকোনো মুহূর্তে আলু ক্ষেতে লেটব্লাইট রোগের আশঙ্কা করছেন চাষিরা। এ অবস্থায় কৃষি বিভাগের কোনো কর্মকর্তাকে পরামর্শক হিসেবে কাছে পাচ্ছে না বলে অভিযোগ কৃষকদের।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার শিবগঞ্জ উপজেলায় ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আলু লাগানো হয়েছে।এর মধ্যে কার্ডিনাল, ডাইমন্ড,এসস্ট্রিকস, গ্রানুলা, লেডি রোজেটা, পাকড়ি জাতের আলু রয়েছে। উৎপাদন লমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় তিন লাখ ৬০ হাজার টন।সূত্র আরো জানায়, গত বছরের চেয়ে এ বছর প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে বেশি আলু আবাদ হয়েছে। বর্তমানে আলু ক্ষেতে টপ ড্রেসিংয়ের (নিরানী) কাজে আলুচাষিরা ব্যস্ত।
এ ব্যাপারে একজন কৃষিবিদের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আলু গাছ পরিপক্ব হওয়ার আগেই অধিক মাত্রায় ওষুধ ¯েপ্র করা হলে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা আছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম কৃষকের পাশে তারা নেই এমন অভিযোগ সত্য নয় উল্লেখ করে জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে আলু খেতে লেটব্লাইট বা পাতা মড়ক রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ অবস্থায় ফসল রায় কৃষকদের বিভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) সংবাদদাতা জানান, উপজেলায় দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো দুই দফায় কয়েক দিনে অব্যাহত তীব্র ঘন কুয়াশা ও প্রচণ্ড শৈত্যপ্রবাহের কারণে আলুর জমিতে লেটব্লাইট রোগের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে কৃষকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।
দুপচাঁচিয়া উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে ছয় হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আলু লাগানো হয়েছে। এর মধ্যে কার্ডিনাল, ডাইমন্ড, এসস্ট্রিকস, পাকড়ি জাতের আলু রয়েছে। কৃষক ও কৃষিবিদদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে আলুচাষিরা ক্ষেতে টপ ড্রেসিংয়ের কাজে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন। জমির আলুগাছগুলো সবুজ রঙ ধারণ করে সজীব হয়ে উঠেছে। ঠিক সেই মুহূর্তে দুই দফায় প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহে আলু ক্ষেতে দেখা দিতে পারে লেটব্লাইট বা পাতা মোড়ক রোগ। এ কারণেই আলুচাষিরা ফসল রক্ষায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সেই সাথে ফসল রক্ষার জন্য তারা বিভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন।
কৃষকেরা জানান, গত বছর এক বিঘা জমিতে আলু আবাদে আট হাজার টাকা খরচ হলেও এবার সার ও কীটনাশকের দাম বেড়ে যাওয়ায় ১০ হাজার টাকা খরচ পড়ছে। সব মিলিয়ে আলু ঘরে তোলার সময় দাম কমে যাওয়ায় এবং কম ফলনের আশঙ্কায় তারা উদ্বিগ্ন।
এ ব্যাপারে সোমবার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তাহেরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বর্তমানে বৈরী আবহাওয়ায় আলু ক্ষেতে লেটব্লাইট বা পাতা মোড়ক রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই ফসল রক্ষায় ইতঃমধ্যে লিফলেট বিতরণসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সেই সাথে রোগ বালাই প্রতিরোধে চাষিদের কৃষি অফিসের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে পরামর্শ গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।
নিউজরুম