কৃষি ডেস্ক(১৬ জানুয়ারী): জলবায়ু পরিবর্তন ও লবণাক্ততার প্রভাবে দণিাঞ্চল থেকে বাঁশ আজ বিলুপ্তির পথে। গ্রামাঞ্চলের গৃহ নির্মাণের এই অন্যতম উপকরণ আজ হুমকির মুখে। মাটিতে লবণের মাত্রা বৃদ্ধি, উৎপাদনে অনাগ্রহ ও অপরিকল্পিতভাবে বাঁশঝাড় ধ্বংসের ফলে দণিাঞ্চল বাঁশশূন্য হয়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ বাঁশ সঙ্কটের কারণে পুরনো গৃহ মেরামত কিংবা নতুন গৃহ নির্মাণকাজে মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এ অঞ্চলের বাঁশ শিল্পনির্ভর পরিবারগুলো আজ দারুণ সমস্যার সম্মুখীন। এক সময় এ এলাকাতে প্রচুর বাঁশ উৎপাদন হতো। গ্রামাঞ্চলের প্রতিটি বাড়িতেই ছিল বড় বড় বাঁশঝাড়। পরিচর্যা ছাড়াই বেড়ে উঠত এ বাঁশগুলো। বাঁশঝাড়গুলোতে বাস করত বিভিন্ন জাতের পশু-পাখি। পাখির কলতানে মুখরিত হতো এ বাঁশঝাড়গুলো। কিন্তু দণিাঞ্চলে লবণাক্ততার মাত্রা বৃদ্ধি, অপরিকল্পিতভাবে বনাঞ্চল উজাড়, বনাঞ্চল কেটে গৃহ নির্মাণ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার অভাবে এ অঞ্চল থেকে বাঁশ আজ বিদায়ের পথে। এলাকাবাসী জানান, এক সময় এসব এলাকার বাঁশ বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হতো। সে কথা এখন স্বপ্নে পরিণত হতে চলছে। গ্রামাঞ্চলের আশি ভাগ ঘর এখন কাঁচা কিংবা শন, টিন ও মাটি দিয়ে তৈরি হয়। এসব গৃহ নির্মাণে বাঁশের ব্যবহার বহুল রয়েছে। কিন্তু বাঁশ বর্তমানে দুর্মূল্য ও দুষ্প্রাপ্য হওয়ায় দরিদ্র মানুষ ভোগান্তিতে রয়েছেন। এ দিকে বাঁশজাত কুটির শিল্পের ওপর নির্ভরশীল শত শত পরিবার বর্তমানে চরম আর্থিক সঙ্কটে রয়েছে। এক সময় এসব শিল্পী বাঁশের তৈরি চাটাই, ঝুড়ি, কুলা, ডোল, ডালা, পলো, চালুনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তৈরি ও বিক্রি করে সচ্ছলভাবে জীবনযাপন করত।বতর্মানে মাকলা বাঁশ ১৫০-২০০ টাকা এবং বুড়ো বাঁশ ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ এলাকায় বুড়ো, তল্লা ও মাকলাসহ বিভিন্ন জাতের বাঁশ জন্মে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বাঁশ চাষের অর্থনৈতিক সফলতা সম্পর্কে অবহিতসহ চাষের নতুন পদ্ধতি চালুর মাধ্যমে বাঁশ চাষ করা দরকার। তা না হলে এ জনপদ এক দিন সত্যিই বাঁশশূন্য হয়ে পড়বে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। ।
নিউজরুম