বিচারপতি থেকে শিরানি অপসারণ

0
172
Print Friendly, PDF & Email

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক(১৩ জানুয়ারী): শ্রীলঙ্কার প্রধান বিচারপতি শিরানি বন্দরনায়েকেকে গত শুক্রবার রাতেপার্লামেন্টে অভিশংসন করা হয়েছেদেশটির প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষেরমুখপাত্র জানিয়েছেন, দু-এক দিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট অভিশংসনসংক্রান্ত নথিতেস্বাক্ষর করবেনআগামী সপ্তাহেই শিরানিকে অপসারণ করে নতুন প্রধান বিচারপতিনিয়োগ দেওয়া হবে
আর শেষ পর্যন্ত এটি হলে দেশটিতে সাংবিধানিক সংকট দেখাদেবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরাশিরানিকে অপসারণের প্রক্রিয়ার কঠোরসমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য
সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকেশিরানির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ তোলা হয়ওইঅভিযোগেই তাঁকে অভিশংসিত হতে হলোযদিও শুরু থেকেই দুর্নীতির অভিযোগঅস্বীকার করে আসছেন তিনিএর আগে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট শিরানির বিরুদ্ধেঅভিশংসনের প্রক্রিয়াকে অসাংবিধানিকবলে ঘোষণা করেন
পার্লামেন্টেশিরানিকে অপসারণের পক্ষে ১৫৫ ভোট পড়েবিপক্ষে পড়ে ৪৯ ভোটগত নভেম্বরেঅভিশংসনের প্রক্রিয়া শুরু হয়বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, অভিশংসনউপেক্ষা করে আগামী সপ্তাহে অফিস করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন শিরানি
শ্রীলঙ্কারপ্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষের আস্থাভাজন বলেই পরিচিত ছিলেন শিরানিকিন্তু গত সেপ্টেম্বরে দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়নমন্ত্রীর ক্ষমতাবাড়ানোসংক্রান্ত আইনের একটি অনুচ্ছেদ নিয়ে তাঁদের মতবিরোধ হয়প্রেসিডেন্টচাইলেও শিরানি ক্ষমতা বাড়ানোর ওই অনুচ্ছেদ বাতিল করেনঅর্থনৈতিকউন্নয়নমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন প্রেসিডেন্টের ভাই বাসিল রাজাপক্ষে
শিরানিরবিরুদ্ধে অভিশংসনের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন মানবাধিকারসংগঠন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, আইনজীবী, বিরোধী দল ও ধর্মীয় নেতারাসহবিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ এর প্রতিবাদ জানানসুশীল সমাজের অনেকেপ্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষের সমালোচনা করে বলেন, প্রধান বিচারপতি যত দিন তাঁরঅনুগত ছিলেন, সব ঠিক ছিলমানবাধিকারবিষয়ক আইনজীবী লাখসান দিয়াস বর্তমানপরিস্থিতিকে দেশের জন্য হুমকিবলে আখ্যা দিয়েছেনতিনি বলেন, ‘পার্লামেন্টে ক্ষমতাসীন দলের দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন রয়েছেপার্লামেন্টসদস্যদের বেশির ভাগই প্রেসিডেন্টের পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্তএকমাত্রনিরপেক্ষ ও স্বাধীন ছিল বিচার বিভাগসেখানেও এ পরিস্থিতির সৃষ্টি করাহলো
প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষের সমালোচকেরা বলছেন, প্রধান বিচারপতিকেসরিয়ে দিলে প্রেসিডেন্ট ও তাঁর পরিবারের ক্ষমতা আরও সুসংহত হবেশ্রীলঙ্কারসংবিধান অনুযায়ী এক ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রেসিডেন্ট পদে থাকতেপারবেন না বলে উল্লেখ ছিলরাজাপক্ষে ২০১০ সালে সংবিধান সংশোধন করে তা তুলেদেনএখন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের মেয়াদের কোনো সীমা নেই
লন্ডনভিত্তিকদ্বন্দ্ব-সংঘাতবিরোধী অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপেরশ্রীলঙ্কার পরিচালক অ্যালান কেনান বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি শিরানিকেঅভিশংসনের পুরো প্রক্রিয়া রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতরাজাপক্ষের প্রশাসনেরবিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় তাঁকে অভিশংসিত করা হয়েছে

 

নিউজরুম

 

শেয়ার করুন