রুপসীবাংলা ডেস্ক (১১জানুয়ারী) : নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তির বিরাট পরিবর্তন এসেছে। পরিবেশ ও সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া গেলে মানুষ নিজেই তার দারিদ্র্য দূরীকরণ, শিক্ষা ও চিকিৎসার সমস্যা সমাধান করতে পারবে। আজকের দুনিয়ায় প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ঘরে বসেই আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা ও চিকিৎসা লাভ সম্ভব। বুধবার র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে গ্রামীণ শক্তির ১০ লাখ পরিবারে সোলার বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার সাফল্য উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সন্ধ্যায় তিনি এসব কথা বলেন। গ্রামীণ শক্তির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইউনূস তার বক্তৃতায় আরও বলেন, গ্রামীণ শক্তি দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় পরিবার পর্যায়ে ১০ লাখ সৌরবিদ্যুৎ সিস্টেম স্থাপন করেছে। যা এখন বিশ্বের সর্ববৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ কর্মসূচি।
এর ফলে বাংলাদেশে কেরোসিনের ব্যবহার হ্রাস পেয়েছে। ফলে পরিবেশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন হ্রাস পাচ্ছে যা পরিবেশ রক্ষায় সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০১৫ সালে গ্রামীণ শক্তি আরও দশ লাখ পরিবারে সৌরবিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলেও তিনি জানান।
একই সঙ্গে সৌরবিদ্যুৎ নিয়ে প্রথমদিকে যেসব গ্রাহক সন্দেহের আবরণ থেকে বিশ্বাসের আবহ তৈরি করতে ভূমিকা রেখেছেন তাদের তিনি সশ্রদ্ধ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি এলেন গোল্ডস্টেইন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আইনুন নিশাত, ইউআইইউবি’র ভিসি অধ্যাপক রেজওয়ান খান, বুয়েটের অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম খান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে গ্রামীণ শক্তির এক্টিং ম্যানেজিং ডাইরেক্টর আবছার কামাল স্বাগত বক্তব্য রাখেন। সৌর বিদ্যুতের গ্রাহক গাজীপুর জেলার বিলকিছ বেগম ও নরসিংদী জেলার রায়পুরার আওলাদ হোসেন সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে তাদের উপকারিতা ও অভিজ্ঞতার কথা সবার সঙ্গে বিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক আসিফ নজরুল প্রমুখ।
উল্লেখ্য, অধ্যাপক ইউনূসের উদ্যোগে ১৯৯৬ সালে গ্রামীণ শক্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। যাত্রা শুরুর পর চৌদ্দ বছরে পাঁচ লাখ পরিবারে সৌরবিদ্যুৎ পৌঁছানো হয়। এর পরের দু’বছরে আরও ৫ লাখ পরিবার যুক্ত হয়ে এবার মোট দশ লাখ পরিবারে সৌরবিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে গ্রামীণ শক্তি।
নিউজরুম