কৃষি ডেস্ক(৯ জানুয়ারী): রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় বিষ দিয়ে এক রাতে ছয় শতাধিক পাখি হত্যার খবরপাওয়া গেছে। এর মধ্যে পরিযায়ী পাখিও রয়েছে। এক মাস ধরে পরিযায়ী পাখিহত্যাযজ্ঞ চলছে বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শীত মৌসুমেবাঘাইছড়ির বিভিন্ন বিলে পরিযায়ী পাখি আসে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বিভিন্নপ্রাকৃতিক খাদ্য খেতে দল বেঁধে আসছে পাতি হাঁস, সরালি হাঁস, পানকৌড়ি, বকসহনানা প্রজাতির পাখি। প্রাকৃতিক খাদ্যের সঙ্গে মাছ ও ধানে বিষ মিশিয়ে ফেলেরাখা হয়। সেই বিষ খেয়ে শত শত পাখি মারা যাচ্ছে। এসব পাখি বিভিন্ন হোটেল ওগ্রামের দোকানগুলোতে অবাধে বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
শিকারি ওবিলের পার্শ্ববর্তী লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শীতের শুরুতেইবাঘাইছড়ি, খেদারমারা, আমতলী ও সারোয়াতলী ইউনিয়নের ছোট-বড় সাত-আটটি বিলেপরিযায়ী পাখির আগমন ঘটে। এদের কলকাকলিতে এসব বিল মুখরিত হয়ে ওঠে। এ সুযোগে৫০-৬৬ জন শিকারি পাখি ধরতে তৎপর হয়ে ওঠে। গত সোমবার রাতে এসব বিলে ছয়শতাধিক অতিথি পাখি বিষ দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া, গত ডিসেম্বর মাসেরপ্রথম সপ্তাহ থেকে বিষ দিয়ে অতিথি পাখি হত্যা চলছে।
গতকাল মঙ্গলবারকয়েকটি বিল ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন এলাকায় মৃত অতিথি পাখি ভাসছে। মৃতপাখিগুলো তুলে নিচ্ছে শিকারিরা। বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বিষমাখানো ধান ও মলা মাছ।
লাল্যাঘোনা গ্রামের শিকারি বিদ্যুৎ রত্ন চাকমাজানান, সোমবার রাতে ছয় শতাধিক বিভিন্ন ধরনের পরিযায়ী পাখি বিষ দিয়ে হত্যাকরা হয়েছে। পাতি হাঁস ৬০ টাকা, বক ও পানকৌড়ি ৪০ টাকা করে বিক্রি হয়। এক মাসধরে এভাবে বিষ দিয়ে অতিথি পাখি হত্যা করা হচ্ছে। এখানে ৫০-৬০ জন শিকারিপাখি হত্যা করে।
বাঘাইছড়ির বন বিভাগের মারিশ্যা বিট কর্মকর্তা মো. আবদুলসাত্তার বলেন, ‘পরিযায়ী পাখি শিকার করা দণ্ডনীয় অপরাধ। বিভিন্ন বিলে অতিথিপাখি শিকার করা হচ্ছে। আমরা যাওয়ার পর শিকারিরা পালিয়ে যায়। এলাকাবাসীরসহযোগিতা পেলে শিকারিদের ধরা সম্ভব হবে।’
বাঘাইছড়ি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, পরিযায়ী পাখি হত্যা বিষয়েথানায় কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেননি। অভিযোগ পেলে শিকারিদের ধরে আইনানুগ ব্যবস্থানেওয়া হবে।
বাঘাইছড়ি পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলন কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশপ্রাণীবিজ্ঞান সমিতির সদস্য মো. আবুল ফজল প্রথম আলোকে বলেন, পরিযায়ী পাখিরাপরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। তাদের আগমনে বিলের জমিগুলোতে উর্বরতা শক্তিবৃদ্ধি পায়। সম্প্রতি পরিযায়ী পাখি হত্যা বাড়ছে।
এসব রোধ করতে হলে এলাকায় সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
নিউজরুম