ব্যবসা ও অর্থনীতিডেস্ক(৯ জানুয়ারী): দেশের পুঁজিবাজারে কেবলই ভারী হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লা।প্রতিদিন ভালা বাজারের প্রত্যাশা নিয়ে লেনদেনে অংশ নিলেও প্রতিদিনই স্বপ্নভঙ্গ ঘটছে বিনিয়োগকারীদের। হারানো মূলধন ফিরে পাওয়ার আশায় বারবার শেয়ার কিনেও তা প্রত্যাশিত দরে বিক্রির সুযোগ পাচ্ছেন না তারা। উল্টো লোকসানের পাল্লাই ভারী হচ্ছে।
নতুন বছরে পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে বাজার আচরণের পরিবর্তনের কথা বলা হলেও এখনো তার কোনো প্রতিফলন দেখছেন না বিনিয়োগকারীরা। নতুন বছরেও টানা পতনের শিকার হচ্ছে দেশের দুই পুঁজিবাজার। গতকাল নিয়ে বছরের প্রথম মাসে ছয় কর্মদিবসের পাঁচ দিনই দুই বাজার ছিল নেতিবাচক। এ সময়ে ঢাকা শেয়ারবাজার হারায় সাধারণ সূচকের ১০০ পয়েন্টের বেশি। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ হারিয়েছে সিএসসিএক্স সূচকের ১৭২ পয়েন্ট। এ সময়ে লেনদেনও কমে গেছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। ২৫০ কোটি টাকা লেনদেনে গত বছর শেষ করে ঢাকা স্টক। এখন সেখানে লেনদেন ঘুরপাক খাচ্ছে ১২০ কোটি টাকার ঘরে। গতকাল ঢাকায় লেনদেন হয়েছে ১২৪ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১৫ কোটি টাকায় নেমে আসে লেনদেন।
গতকাল প্রথম এক ঘণ্টা ভালোই কেটেছিল। সাধারণ সূচকের ৪ হাজার ১২৬ পয়েন্ট থেকে লেনদেন শুরু করে সকাল সাড়ে ১১টায় ডিএসই সূচক পৌঁছে যায় ৪ হাজার ১৪৬ পয়েন্টে। এর পরই বিক্রয় চাপ শুরু হয় এবং শেয়ারদর কমতে থাকে। সেই সাথে কমতে থাকে সূচকও।সূচকের ৪ হাজার ১১৮ পয়েন্টে লেনদেন শেষ করে ডিএসই।
পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্টরা বিনিয়োগকারীদেরকে আরো কিছু দিন ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়েছেন। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের প্রেসিডেন্ট আল মারুফ খান বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের মনিটিরি পলিসি ঘোষণার সময় হয়েছে। সঙ্কট উত্তরণে ইতোমধ্যে নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগ অবশ্যই কিছু ভালো ফল নিয়ে আসবে। তবে এ জন্য বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য ধরতে হবে। এভাবে এক সময় বাজার ভালোর দিকে যাবে।
গতকাল দুই বাজারে খুব বেশি দরপতন না ঘটলেও বেশির ভাগ কোম্পানিই দর হারায়। ঢাকায় ২৬৬টি কোম্পানির লেনদেন হয়; দর বৃদ্ধি পায় ১০৪টির। ১১৪টি কোম্পানি পতনের শিকার হয়। ৪৮টি কোম্পানির দর থাকে অপরিবর্তিত। চট্টগ্রামে লেনদেন হওয়া ১৬৪টি কোম্পানির মধ্যে ৫০টির দাম বাড়লেও কমেছে ৮৭টি কোম্পানির দাম। সেখানে ২৭টি কোম্পানির দর থাকে অপরিবর্তিত।
লেনদেনে গতকাল ডিএসইর শীর্ষে উঠে আসে বেক্সিমকো লিমিটেড। ১১ কোটি টাকায় ১৭ লাখ ১৯ হাজার শেয়ার লেনদেন করে কোম্পানিটি। ১০ কোটি টাকা লেনদেন করে ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট ছিল দ্বিতীয়। ডিএসইর শীর্ষ দশে উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলো ছিল আরএন স্পিনিং, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, এনবিএল, বেক্সিমকো ফার্মা, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, সাবমেরিন ক্যাবলস, এনভয় টেক্সটাইল ও ন্যাশনাল টি কোম্পানি। লেনদেন হওয়া খাতগুলোর মধ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আগের দিনের মতো নেতিবাচক আচরণ গতকালও বজায় ছিল। খারাপ আচরণ দেখা যায় সিমেন্ট ও জ্বালানি খাতেও। তবে সিরামিক, প্রকৌশল ও টেক্সটাইল খাতের অবস্থা ছিল কিছুটা ভালো।
নিউজরুম