মজুদ বা রিজার্ভ নতুন উচ্চতায়

0
160
Print Friendly, PDF & Email

ব্যবসা ও অর্থনীতিডেস্ক(৮ জানুয়ারী): দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বা রিজার্ভ নতুন উচ্চতায় অবস্থান করছেবাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে সংরক্ষিত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গতকাল সোমবারসব রেকর্ড অতিক্রম করে এক হাজার ৩০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে
পরিস্থিতিএমন হয়েছে যে এখন অনেক বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছেই প্রয়োজনের অতিরিক্তডলার রয়েছেকারও কারও সংরক্ষণের সীমাও অতিক্রম হয়ে গেছেফলে বাংলাদেশব্যাংককে নিয়ম অনুসারে এসব ব্যাংক থেকে ডলার কিনতে হচ্ছে
মুদ্রাবাজারেডলারের তেমন চাহিদা নেইবাংলাদেশি টাকা দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছেবিপরীতেমূল্যমান খোয়াচ্ছে মার্কিন ডলারটাকা শক্তিশালী হলে প্রবাসী-আয় (রেমিট্যান্স) ও রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়মধ্য মেয়াদে এই দুই পক্ষইনিরুসাহিত হয়যে কারণে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে ডলারের মূল্যমান ধরেরাখার একটা চ্যালেঞ্জ নিয়ে থাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকবাজারভিত্তিক ব্যবস্থাহলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটা প্রচ্ছন্ন তপরতা থাকে ডলারের মূল্য ধরেরাখার
কিছুদিন আগেও এ পরিস্থিতি ছিল নাতখন ডলারের জন্য হাহাকার ছিলবাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) মাধ্যমে জ্বালানি তেল আমদানিকরতে ডলার জোগান দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছিল রাষ্ট্রমালিকানাধীনব্যাংকগুলোকেবাংলাদেশ ব্যাংকও নানা বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়ে আসছিলইসলামীউন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) কাছ থেকে শেষমেশ একটা বড় সহায়তা মেলেআগে ১০০কোটি ডলারে একটা ঋণসুবিধার ব্যবস্থা ছিলএখন তা ২৫০ কোটিতে উন্নীতহয়েছেএর মধ্যে যে পরিমাণ অর্থ জ্বালানি কিনতে ব্যয় হবে, আইডিবি তাপরিশোধ করবেআর ছয় থেকে নয় মাসের ভিত্তিতে সেগুলোকে পরিশোধ করতে হচ্ছে
আবারসমসাময়িক সময়ে সার্বিক বৈদেশিক বিনিময় পরিস্থিতির কথা চিন্তা করেআন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকেও সরকার ১০০ কোটি ডলার ঋণনেয়এর প্রথম কিস্তিটি ছাড় করেছে সংস্থাটি
কিন্তু, এরই মধ্যে অনেকটাউল্টো পথে ঘুরছে চাকাকেউ আর সেভাবে ডলার চায় নাযে সময়টা ডলারের জন্যহাহাকার ছিল, তখন আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য বাড়ছিলএখন পণ্যমূল্যকমে গেছেতখন একই সঙ্গে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ভাড়াভিত্তিকবিদ্যু প্রকল্প চালুর একটা তোড়জোড় পড়েছিলযার চাপ গিয়ে পড়ে বৈদেশিকমুদ্রার রিজার্ভেএই বিদ্যু প্রকল্পের জন্য হঠা করে জ্বালানি তেলেরচাহিদাও বাড়েযার জোগান দিতে বেশি আমদানি করতে হয় বিপিসিকেএখন তারপরিমাণ না কমলেও বৃদ্ধির চাপ নেইকিন্তু, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানিতেলের দাম কিছুটা কমেছেও
সব মিলিয়ে সার্বিক আমদানি ব্যয় কমেছেব্যয়কমেছে দুইভাবেআন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য কমে যাওয়ায় আমদানি কমেছে, আবার পরিমাণেও কমেছে আমদানিভাড়াভিত্তিক বিদ্যু প্রকল্প আমদানিও এখননেইসামগ্রিক মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি কমেছেকমেছে খাদ্যসহ অন্যান্যআমদানিজুলাই-নভেম্বর সময়ে (সিঅ্যান্ডএফ) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায়আমদানি ব্যয় কমেছে ৬ দশমিক ৮৮ শতাংশআর শুধু নভেম্বর মাসে কমেছে ৭ দশমিক৩৭ শতাংশকিন্তু, রপ্তানিতে কম হলেও প্রবৃদ্ধি রয়েছে ৪ দশমিক ৩৬ শতাংশশুধু নভেম্বর মাসে প্রবৃদ্ধি প্রায় ১১ শতাংশঅন্যদিকে প্রবাসী-আয়ে (জুলাই-নভেম্বর) প্রবৃদ্ধির হার ছিল ২৪ শতাংশের কাছাকাছি
এ পরিস্থিতিতেবৈদেশিক বিনিময়ের চলতি হিসাবে বাংলাদেশ অনেকখানি এগিয়ে গেছেজুলাই-অক্টোবর সময়ে যা হয়েছে ৪৬ কোটি ৪০ লাখ ডলারের বেশিএসব কারণেইদেশে বৈদেশিক মুদ্রার বিজার্ভ ক্রমশই বাড়ছেগতকাল রিজার্ভ হয় এক হাজার৩০৫ কোটি ডলারকিন্তু, এক মাসেরও কম সময় আগে অর্থা ১০ ডিসেম্বরবাংলাদেশের রিজার্ভ এক হাজার ২০০ কোটি ডলার অতিক্রম করেছিল
পরিস্থিতিতে ডলারের চাহিদা না থাকায় মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার বিক্রি হচ্ছে৭৯ দশমিক ৬৮ টাকা থেকে ৭৯ দশমিক ৭০ টাকা দরেএক বছর ব্যবধানে মার্কিনডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান প্রায় ৩ শতাংশ বেড়েছে
বাংলাদেশব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগেরমহাব্যবস্থাপক (জিএম) কাজী ছাইদুর রহমান এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরধারণা, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ ভাগে গিয়ে দেশের আমদানির ধীরগতি কেটেযাবেতখন আবার ডলার-টাকার মান পুনর্নির্ধারিত হবে

 

নিউজরুম

 

শেয়ার করুন