ঢাকা (০৭জানুয়ারী) : জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইনের খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এটি অনুমোদিত হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, নদ-নদী দখলমুক্ত করা, তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, নদী খনন, পানি দূষণমুক্ত রাখাসহ আটটি সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব দিয়ে গঠন করা হবে নদী রক্ষা কমিশন। কমিশনে একজন চেয়ারম্যান ও পাঁচজন সদস্য থাকবেন। পাঁচ সদস্যের একজন হবেন সার্বক্ষণিক, চারজন অবৈতনিক। সদস্যদের মধ্যে একজন নদী বা পানি বিশেষজ্ঞ, একজন পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, একজন নদী প্রকৌশলী, একজন মানবাধিকারকর্মী বা আইনবিদ থাকবেন। এঁদের একজন হবেন নারী। চেয়ারম্যান হবেন কমিশনের প্রধান নির্বাহী।
চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগের জন্য ছয় সদস্যের একটি বাছাই কমিটি করা হবে। কমিটির প্রধান হবেন মন্ত্রিপরিষদের সচিব। কমিটির সুপারিশে কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা নিয়োগ পাবেন। এর কার্যকাল হবে তিন বছর। একই ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি দায়িত্বে থাকতে পারবেন না। কমিশনের প্রধান কার্যালয় হবে ঢাকায়। তবে সরকারের অনুমোদন নিয়ে আঞ্চলিক কার্যালয় করা যেতে পারে।
কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নিল কি না, তা জানার এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে কমিশনকে। সুপারিশের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নেওয়া না হলে, তা কমিশন রাষ্ট্রপতিকে জানাবে। প্রতিবছর ৩১ মার্চের মধ্যে কমিশন তার আগের বছরের কার্যক্রম সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে প্রতিবেদন দেবে।
খসড়ায় বলা হয়েছে, নদী নিয়ে গবেষণা, নদীর পরিবেশগত ভারসাম্য ও টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা, নদী রক্ষায় স্বল্প ও দীর্ঘকালীন পরিকল্পনা নেওয়া এবং নদী রক্ষার্থে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করবে কমিশন। নদীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় বা বিভাগের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে অবৈধ দখলমুক্ত ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন।
বাংলাদেশে ছোট-বড় ২৩০টি নদ-নদী আছে। এর মধ্যে ৯৭টি মৃতপ্রায়। নদ-নদী পুনরুজ্জীবিত করার সুপরিকল্পিত কর্মকৌশল প্রণয়নের জন্য নদী কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে আসছেন পরিবেশবাদীরা। কমিশন গঠনের নির্দেশ ছিল আদালতেরও।