ব্যবসা ও অর্থনীতিডেস্ক(৭ জানুয়ারী): জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ১৮ দলের ডাকা হরতালের প্রভাব পড়েছেঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায়। ক্রেতা ও দর্শনার্থীর আগমন কম হয়েছে গতকালরোববার। তবে বিকেলের পর থেকে ধীরে ধীরে মেলা প্রাঙ্গণে লোকসমাগম শুরু হয়।সন্ধ্যার পর ভিড় খানিকটা বাড়ে।
মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ষষ্ঠ দিনের চিত্র এটি। মেলার প্রথম সপ্তাহে এমনিতেই ভিড় একটু কম হয়।বেচাকেনাও প্রাথমিক পর্যায়ে। তাই খুব একটা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত নন বিক্রেতারা।বরং শিগগিরই মেলা জমে ওঠবে—এমনটাই প্রত্যাশা তাঁদের।
গতবারের মতোএবারের মেলায়ও বিভিন্ন ধরনের ছাড়ের সুবিধা দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করারচেষ্টা করছে অনেক প্রতিষ্ঠান। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছাড়ের নামে একধরনের প্রতারণাই করছে অনেক বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান। পণ্যসামগ্রীর গায়ে বাড়তিমূল্যের ট্যাগ লাগিয়ে তার ওপর ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছেন তাঁরা।
মেলায়আগত এক তরুণ অভিযোগ করে বলেন, ‘গত মাসে পলওয়েল মার্কেট থেকে এক হাজার ৭০০টাকায় আমি একটি জ্যাকেট কিনি। মেলায় একই জ্যাকেটের মূল্য চাওয়া হচ্ছে দুইহাজার ৮০০ টাকা। তবে ২০ শতাংশ মূল্যছাড় দেওয়ার কথা বলছেন বিক্রেতা। এইছাড়ের পরও জ্যাকেটটির দাম দুই হাজার ২৪০ টাকা।’
মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখাগেছে, মহিলা ও তরুণীরাই বেশি কেনাকাটা করছেন। যেসব প্যাভিলিয়ন ও স্টলেইমিটেশনের গয়না, মেয়েদের পোশাক, কাশ্মীরি শাল, চাদর, কসমেটিকসহ বিভিন্নসামগ্রী প্রদর্শিত হচ্ছে, সেসব স্টলে ভিড় ছিল বেশ।
পাশাপাশি প্লাস্টিক ওঅ্যালুমিনিয়ামের গৃহস্থালি ও ইলেকট্রনিকস পণ্যসামগ্রীর স্টলগুলোতে ভালোক্রেতাসমাগম লক্ষ্য করা যায়। দেশি-বিদেশি এসব স্টলে হাঁড়ি-পাতিল থেকে শুরুকরে ওভেন, টিভি, ফ্রিজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক জিনিসপত্র যাচাই-বাছাই করেকিনতে দেখা যায় অনেককে। তবে বেশির ভাগ ক্রেতাই খুঁজে খুঁজে ছাড় দিচ্ছেন—এমনপ্রতিষ্ঠানেই বেশি যাচ্ছেন।
মেলায় আগত দর্শনার্থী ও ব্যবসায়ীদেরব্যাংকিং সুবিধা দিতে আছে সোনালী, জনতা, ডাচ্-বাংলা, মার্কেন্টাইল ও ইসলামীব্যাংকের মিনি প্যাভিলিয়ন। টাকা তোলার সুবিধা দিতে মেলায় এটিএম বুথবসিয়েছে ব্যাংকগুলো। এ ছাড়া মোবাইল ব্যাংকিং, বিভিন্ন সেবা ও তথ্য দিয়েসহায়তা করছেন ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
তবে প্রতিবারের মতো এবারও ‘গলাকাটা’ ব্যবসা করছে খাবারের দোকানগুলো। খাবার আগে দাম জিজ্ঞেস না করলেই সুযোগনিচ্ছে তারা। অনেক ক্ষেত্রেই মূল্যতালিকার চেয়ে দুই-তিন গুণ দাম বেশিরাখছে। আবার সার্ভিস চার্জের নামে বাড়তি টাকা আদায় করছেন কর্মচারীরা। এনিয়ে প্রতিদিনই ক্রেতাদের সঙ্গে বচসা হচ্ছে বলে জানা যায়।
রাজধানীরশেরেবাংলা নগরে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়যৌথভাবে মাসব্যাপী ১৮তম এই ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার আয়োজন করেছে। ১জানুয়ারি শুরু হওয়া এবারের মেলায় সব মিলিয়ে পাঁচ শতাধিক স্টল আছে। এর মধ্যে৯০টি প্যাভিলিয়ন, ৪২টি মিনি-প্যাভিলিয়ন ও স্টল ৩৬২টি। এবারও বঙ্গবন্ধুস্মৃতি প্যাভিলিয়নের পাশাপাশি সরকারি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের স্টল আছে।
মেলায়তিনটি মহাদেশের ১২টি দেশের ৩১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। ভারত, চীন, জাপান, হংকং, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। এবার মেলায় প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২০ ওশিশুদের জন্য ১০ টাকা প্রবেশমূল্য ধরা হয়েছে।
নিউজরুম