স্পোর্টস ডেস্ক(৬ জানুয়ারী): চির প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডের জন্য নতুন কোনো ভেনু বেছে নেয়ার উপায় নেই ভারতের। তাই দিল্লিতেই আজ মুখোমুখি এই দুই দল। এখানে এখন ঠাণ্ডা। সকালে কুয়াশার চাদর, বিকেলের পর ফিকে হয়ে যাওয়া আলো। হতাশায় পর্যুদস্ত ভারতকে এখানেই খেলতে হচ্ছে। শীতের দিন তাই কুয়াশা, হালকা আলো ও উজ্জ্বল পাকিস্তানÑ এই তিন প্রতিদ্বন্দ্বীর সাথে তাদের কঠিন পরীক্ষা। এর আগে ভারত নিজ দেশে কত বছর আগে ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল, তা দেখতে হলে পেছন ফিরে তাকাতে হবে। বিশ্বকাপ ফাইনালের পর ১৯৮৩–৮৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুর্দান্ত খেলেছিল এবং ভারতকে তারা হোয়াইটওয়াশ করেছিল। এ ছাড়া গত ১০ বছরে ভারতের মাটিতে ভারতকে সিরিজে হারানোর রেকর্ড এখনো অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তানের কাছে রয়েছে। তবে এসবই এখন রেকর্ড। এ অতীতকে ভুলে ভারত ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে দিল্লিতে মাঠে নামবে। তাদের মনের মধ্যে হালকা আশা, শেষ ওয়ানডে জিতে কিছুটা হলেও হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা। কিন্তু তা কি সম্ভব? কারণ পাকিস্তান যে দারুণ ফর্মে। তারা এরই মধ্যেই চেন্নাই ও কলকাতায় ভারতকে হারিয়ে ওয়ানডে সিরিজ নিজের করে নিয়েছে। এই দুই ম্যাচে একটি বিষয় খুবই পরিষ্কার, তা হলো পেস ও বাউন্সে ভারত নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি। তবে বল যদি হাঁটুর নিচে থাকে, তাহলে তাদের চেয়ে দারুণ শক্তিশালী দল আর কেউ নেই। পিচের চরিত্রে ভিন্নমাত্রিক হলে চেনা ভারত অচেনা হয়ে যায়। পাকিস্তানি দুই ওপেনার মোহাম্মদ হাফিজ ও নাসির জামসেদ ভারতীয় আক্রমণকে পাত্তাই দিচ্ছে না। তরুণ প্রতিভা নাসির প্রথম দুই ওয়ানডেতে ইতোমধ্যেই সেঞ্চুরি পেয়েছেন। এ ছাড়া তাদের একাদশে অন্য যারা আছেন, তারা ভালো খেলছেন, তা কিন্তু নয়। তবে সেরা একাদশের মধ্যে আজহার আলী ও মিসবাহ–উল–হক মোটেই ভালো করেননি। তাদের দুর্বলতা চোখে পড়েছে। উমর আকমল ও আসাদ শফিক এখনো মাঠের বাইরে। তাদের যেকোনো একজনকে আজ দেখা গেলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। সিনিয়র ইউনুস খান ও কামরান আকমল ছাড়াও দলে আছেন শোয়েব মালিক। যারা রান করতে ভালোবাসেন। এটি ঠিক, পাকিস্তানের আক্রমণভাগ এককথায় দুর্দান্ত। তাদের জুনায়েদের সুইং ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের জন্য ভয়ের কারণ। তবে সবচেয়ে লম্বা বোলার মোহাম্মদ ইরফানকে দেখে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের হৃদকম্পন বেড়ে যায়। এই বোলার তার বাউন্স ও গতি দিয়ে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের পিচ থেকে বিদায় করার খেলায় মেতে ওঠেন। এ ছাড়া মিসবাহ–উল–হকের হাতে আছে দুই বিশ্বসেরা স্পিনার সাঈদ আজমল ও মোহাম্মদ হাফিজ। তাদের ঘূর্ণি বল যে কাউকে এলোমেলো করে দিতে পারে। আর উমর গুল পুরনো বলে এখনো মাস্টার।
অন্য দিকে ভারত আছে মানসিক চাপে। তারা ঘুরে দাঁড়াবে, এমন কথা অনেকেই বলছেন। দেশের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ হবে নাÑ এ প্রত্যাশা সবার। কিন্তু দলের টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানেরা নিজেদের মেলে ধরতে পারছেন না। গম্ভীর ও শেওয়াগ দু’টি ম্যাচেই ফপ। তাদের নিয়ে কিছুটা হলেও ভাববেন নির্বাচকেরা। তবে আজকের ম্যাচে তাদের একজনকে মাঠের বাইরে থাকতে হতে পারে। তার জায়গায় আসবেন আজিঙ্কা রাহানে। এ ছাড়া লম্বা ব্যাটিংলাইনআপে কোহলি, যুবরাজ সিং, সুরেশ রায়না, অধিনায়ক ধোনি এবং অলরাউন্ডার আশ্বিন ও জাদেজা রয়েছেন। কিন্তু তাসের ঘরের মতো টপঅর্ডাররা ভেঙে পড়লে মিডল অর্ডারের আর কী–ই বা করার থাকে। পেসার হিসেবে অশোক দিনদা ও ইশান্ত শর্মা চেষ্টা করছেন; কিন্তু প্রাধান্য বিস্তার করতে পারছেন না। ভারতের অধিনায়ক ধোনি বলেছেন, দলের সবাই হতাশাগ্রস্ত। তবে আজ ধোনিকে খেলতে নাও দেখা যেতে পারে। তিনি প্র্যাকটিসের সময় পিঠে ব্যথা অনুভব করেন। ফলে নির্বাচকেরা দিনেশ কার্তিককে দলে ডেকেছেন।
নিউজরুম