সাভার (৫ জানুয়ারী) : ধর্ষণের ভিডিও দেখিয়ে ব্লাকমেইল করে মোটা অংকের টাকা নেওয়াই ছিলো সাভারের কলেজছাত্রীর ধর্ষকদের মূল উদ্দেশ্যে। রিমান্ডে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এমনই তথ্য দিয়েছে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্ত দানেশ(৩৫), সুচী ওরফে লিজা (১৮), রায়হান(২২) ও মহিউদ্দিন(২৪)। এদিকে এ ঘটনায় শনিবার সকালে ওয়াসীম(২৫) নামের আরো একজনকে সাভার ব্যাংক কলোনি এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এ পর্যন্ত এ ঘটনায় ৫জনকে গ্রেফতার করা হলো। মামলায় অপর আসামি সাভার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র জাহেদ ওরফে রাজু(২২), বন্ধু শাহীন (২৫), শামিম (২৪), মো: লুৎফর (২৩), আলীম (২৫) মাসুদ (২৪) কে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।বৃহস্পতিবার সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের হওয়ার পর পুলিশ সাভার ও মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এই ৪জনকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারের পর শুক্রবার আদালতে পাঠিয়ে পুলিশ ৭দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তাদের প্রত্যেককে চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুহাম্মদ আশরাফুল আলম জানান, ”জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে যা যাচাই করা প্রযোজন, আসামিরা একে অপরের কাছের বন্ধু, পুর্ব পরিকল্পিতভাবে তারা ওই মেয়ে কে ফুঁসলিয়ে তার বান্ধবী সুচী ওরফে লিজাকে দিয়ে ডেকে নিয়ে এ ঘটনা ঘটায়”।
সে সময় তাদের কাছ থেকে ধর্ষণের সময় ডিজিটাল ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গত ২৫ নভেম্বর ২০১২ ইং তারিখে সিংগাইর ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ১ম বর্ষের ছাত্রী সূচি ওরফে লিজা তার বান্ধবী জান্নাতুল ফেরদৌসকে (১৮) পরীক্ষার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসে। পথে এসে লিজা তার ফুফুর অসুস্থতার কথা বলে তাকে দেখার জন্য জান্নাতুল ফেরদৌসকে সঙ্গে নিয়ে সাভারের ব্যাংক কলোনি ছাপড়া মসজিদের উত্তর পার্শের এম,এ মান্নান ভিলার ৫ম তলার নিচ তলায় ব্যাচেলর মেছে নিয়ে আসে।
এরপর লিজা জান্নাতুল ফেরদৌসকে ওই মেছের একটি কক্ষের মধ্যে ধাক্কা দিয়ে ঢুকাইয়া দিয়া আসতেছি বলে চলে যায়। এসময় উক্ত রুমের মধ্যে ৫-৬ জন যুবককে দেখতে পেয়ে সে চিৎকার দিলে শাহীন নামের একজন তার মুখ চেপে ধরে মারধর করতে থাকে।
একপর্যায়ে তারা রুমের মধ্যে উচ্চ শব্দে কম্পিউটারে গান বাজিয়ে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে ধর্ষণের ভিডিও চিত্র ধারণ করে। এরপর জাহেদ ওরফে রাজু, শামীম ও শাহীন নামের ৩ যুবক ঘটনাটি কাউকে জানালে ডিজিটাল ক্যামেরায় ধারণকৃত ধর্ষণের ভিডিও চিত্র ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়াসহ প্রাননাশের হুমকি দিয়ে তাকে বাসে তুলে দেয়।
বিষয়টি কলেজছাত্রী তার পরিবারকে জানালে ধর্ষণকারীরা ভিডিও চিত্রটি আবারও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে হুমকি দিতে থাকে।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় ব্যপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ফলে বৃহস্পতিবার ওই কলেজ ছাত্রীর মা ফাতেমা খানম বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করে।
নিউজরুম