কৃষি ডেস্ক(৫ জানুয়ারী): মিরসরাইয়ে উৎপাদিত শিমের বিচি রফতানি হচ্ছে ইউরোপে। এ ছাড়া নিজ উপজেলার প্রয়োজন মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। শিম বিক্রি করে লাভবান হয়েছেন উপজেলার প্রায় ১২ হাজার কৃষক।
পূর্ব দুর্গাপুর এলাকার স্কুলশিক আলাউদ্দিন নিজের বসতবাড়ির আঙিনায় এ বছর আট শতক জমিতে শিম চাষ করেছেন। তার ধারণা জমিতে ফলনকৃত শিম দিয়ে পরিবারের সবজির চাহিদা মিটবে। কিন্তু এ বছর শিমের বাম্পার ফলন হওয়াই তিনি এ পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার টাকার শিম বিক্রি করেছেন। শুধুই স্কুলশিক আলাউদ্দিনই নন, এবার শিম চাষ করে লাভবান হবেন চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের ১২ হাজার কৃষক।
মিরসরাই উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তা শহীদ উদ্দিন জানান, চলতি মওসুমে উপজেলার দুই পৌরসভা ও ১৬ ইউনিয়নে প্রায় চার হাজার একর জমিতে শিমের চাষ করা হয়। এ মওসুমে কেবল শিম চাষ করেই স্বাবলম্বী হন ছয় হাজার কৃষক।
গত বছর মিরসরাইয়ে উৎপাদিত শিমের বিচি বিক্রি হয়েছে প্রচুর। এখানকার শিমের বিচি রফতানি করা হয় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। ২০১১ সালে কেবল রফতানিকৃত বিচির পরিমাণ ২০ টন। আর এসব বিক্রি করে আয় হয়েছে প্রায় ছয় লাখ ৬০ হাজার টাকা।
মিরসরাইয়ের কৃষিভিত্তিক সংগঠন ওয়াইজ–এর (উই ফর ইন্টিগ্রেটেড সোচিও এগ্রিকালচারাল এপোর্ট) কৃষিবিষয়ক সম্পাদক কমরআলী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক নুর মোহাম্মদ এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, গাজীপুরের ইউরেশিয়া ফুড প্রসেসিং কোম্পানি লিমিটেডের মাধ্যমে মিরসরাইয়ে উৎপাদিত শিমের বিচি বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হয়।
বিভিন্ন শিম েেত গিয়ে দেখা গেছে, সারা বছর যেসব জমি অনাবাদি পড়ে থাকে এবং ফলনের অনুপযোগী, সেসব জমিতেও শিম চাষ করছেন কৃষকেরা। এ ছাড়া যেসব জমিতে বর্ষা মওসুমে ১–২ ফুট পানি থাকে এমন জমির পাশ থেকে মাটি তুলে সারিবদ্ধভাবে ডিপ তৈরি করে শিম চাষ করা হয়। প্রত্যেক ডিবিতে আলাদা করে খুঁটি দেয়া হয়। জমি ছাড়াও পাহাড়, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কের দুই ধার, জমির আইল, পুকুরপাড়, বাড়ির আঙ্গিনা, ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই পাশে এ বছর প্রচুর শিম চাষ হয়েছে।
মিরসরাইয়ের ১৫ নম্বর ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের মধ্যম ওয়াহেদপুর এলাকার কৃষক শামসুদ্দীন ও জহুরুল হক জানান, বর্তমানে শিম বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২২–২৫ টাকা দরে। অবশ্য মওসুমের শুরুতে কেজি ৮০–১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া শিমের বিচি বিক্রি করা হয় প্রতি কেজি ৪৫–৫০ টাকা দরে। মিরসরাইয়ে সবজি সংরণের জন্য হিমাগার থাকলে কৃষকেরা আরো দীর্ঘমেয়াদি লাভবান হতেন।
উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা আইয়ুব আলী জানান, লাভ বেশি হওয়ায় মিরসরাইয়ে কৃষকেরা আগের তুলনায় বেশি শিম চাষে আগ্রহী হয়েছেন। ইতোমধ্যে শিম চাষকে ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত করতে কৃষি বিভাগ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
নিউজরুম