সাভার (৪জানুয়ারী) : সাভারে এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ ও তা ভিডিওচিত্র ধারণের অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের পর সাভার ও মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়েছে।
আটকরা হলেন- মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার আজিমপুর গ্রামের সুজন (২৫), একই উপজেলার কাংসা গ্রামের সূচি ওরফে লিজা (১৮), রায়হান (২২) ও মহিউদ্দিন (২৪)।
এর মধ্যে রায়হান ঢাকার শান্তা-মারিয়ম ইউনিভার্সিটির অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র, মহিউদ্দিন সাভার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র, সূচি ওরফে লিজা এবং সুজন সিংগাইর ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনা করে বলে জানা গেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কলেজছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণ ও ভিডিওচিত্র ধারণ করে তা প্রকাশের হুমকির ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
এদিকে, মামলা দায়েরের পর বৃহস্পতিবার সাভার মডেল থানা পুলিশ ঢাকার সাভার ও মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেফতার করে শুক্রবার দুপুরে আদালতে পাঠিয়ে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়েছে।
এ ব্যাপারে সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মুহাম্মদ আশরাফুল আলম জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেফতার করে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়াও তাদের কাছ থেকে ধর্ষণের সময় ডিজিটাল ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিওচিত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
অপরদিকে, গ্রেফতারদের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, “ধর্ষণ ঘটনার সঙ্গে আমাদের লোকেরা জড়িত না থাকলেও অজ্ঞাতপরিচয় আসামি হিসেবে তাদের ধরে এনে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করছে পুলিশ।”
উল্লেখ্য, গত ২৫ নভেম্বর সিংগাইর ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে পরীক্ষার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসে তার আরেক বান্ধবী লিজা।
পথে এসে লিজা তার ফুফুর অসুস্থতার কথা বলে তাকে দেখার জন্য কলেজছাত্রীকে সঙ্গে নিয়ে সাভারের ব্যাংক কলোনি ছাপড়া মসজিদের উত্তর পাশের এম.এ. মান্নান ভিলার ৫ম তলার নিচতলায় ব্যাচেলর মেসে নিয়ে আসে।
এরপর ছাত্রীটিকে ওই মেসের একটি কক্ষের মধ্যে ধাক্কা দিয়ে ঢুকিয়ে দিয়ে লিজা ‘আসতেছি বলে চলে যায়।’ এসময় ওই রুমের মধ্যে ৫ থেকে ৬ যুবককে দেখতে পেয়ে ছাত্রীটি চিৎকার দিলে শাহীন নামে একজন তার মুখ চেপে ধরে মারধর করতে থাকে।
একপর্যায়ে তারা রুমের মধ্যে উচ্চ শব্দে কম্পিউটারে গান বাজিয়ে ছাত্রীকে ধর্ষণ করে এবং ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে ধর্ষণের ভিডিওচিত্র ধারণ করে রাখে।
এরপর জাহেদ ওরফে রাজু, শামীম ও শাহীন নামে ৩ যুবক ঘটনাটি কাউকে জানালে ডিজিটাল ক্যামেরায় ধারণ করা ধর্ষণের ভিডিওচিত্র ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়াসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ছাত্রীকে বাসে তুলে দেয়।
বিষয়টি কলেজ ছাত্রী তার পরিবারকে জানালে নির্যাতনকারীরা ভিডিওচিত্রটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে আবারও হুমকি দিতে থাকে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
এর পর বৃহস্পতিবার ওই কলেজ ছাত্রীর মা বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।