আর্ন্তজাতিক ডেস্ক(৩ জানুয়ারী):যুক্তরাষ্ট্রে বহুল আলোচিত আর্থিক সংকট বলে পরিচিত ‘ফিসক্যাল ক্লিফ’ এড়ানো সম্ভব হয়েছে। সিনেটে পাস হওয়া বিল গত মঙ্গলবার রাতে প্রতিনিধি পরিষদেও পাস হয়েছে। এখন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা স্বাক্ষর করলেই তা কার্যকর হবে।
‘ফিসক্যাল ক্লিফ’ এড়ানো সম্ভব না হলে নতুন বছরে মার্কিন করদাতাদের সবার কর বৃদ্ধি এবং সরকারি ব্যয় হ্রাস স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হতো। আর এটা হলে দেশটিতে অর্থনৈতিক মন্দার সৃষ্টি হতো, যার প্রভাব পড়ত সারা বিশ্বে।
মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে ক্ষমতাসীন দল ডেমোক্রেটিক পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠ। অন্যদিকে নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ রিপাবলিকান পার্টির নিয়ন্ত্রণে। তাই ‘ফিসক্যাল ক্লিফ’ এড়াতে আনা বিল সিনেটে পাস হলেও প্রতিনিধি পরিষদে পাস হওয়া নিয়ে সংশয় ছিল। কারণ, বিলে শুধু বিত্তশালীদের কর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। রিপাবলিকানরা যেকোনো ধরনের কর বাড়ানোর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সমঝোতা ভিত্তিতে সিনেটে পাস হওয়া বিল গত মঙ্গলবার রাতে প্রতিনিধি পরিষদেও পাস হয়েছে।
প্রতিনিধি পরিষদে বিলের পক্ষে ২৫৭ ও বিপক্ষে ১৬৭ ভোট পড়ে। বিল পাসের পর প্রেসিডেন্ট ওবামা সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার আগে অর্থনৈতিক সমতার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা রাখতে পেরেছেন। ওবামা বলেন, ‘আমি শিগগিরই নতুন আইনে স্বাক্ষর করব। এই আইন বলবৎ হলে, বিত্তশালীদের কর বাড়বে। যারা মার্কিন জনগণের মোট দুই শতাংশ। এটা করতে না পারলে সব করদাতার কর বেড়ে যেত, এতে অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হতো।’
প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ও রিপাবলিকান দলের নেতা জন বোয়েনার বলেন, ‘এখন আমাদের মূল লক্ষ্য হবে ‘ফিসক্যাল ক্লিফে’ সরকারি ব্যয় হ্রাসের যে সংকট থেকে যাচ্ছে, তা নিয়ে কাজ করা।’ সিনেটে রিপাবলিকান নেতা মিচ ম্যাককনেল বলেন, ‘সরকারি ব্যয় হ্রাসের সংকট নিয়ে মার্কিন জনগণ বিতর্ক দেখতে চায়। রিপাবলিকানরা এই বিতর্কের জন্য প্রস্তুত।’
বিশ্লেষকেরা বলছেন, কর নিয়ে একটি সমঝোতা হলে সরকারি ব্যয় হ্রাসের সংকট নিয়ে নতুন আইনে খুব সুস্পষ্টভাবে বেশি কিছু বলা হয়নি। এর কারণ ব্যয় হ্রাসের সংকট নিয়ে ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান পার্টির নেতারা মতৈক্যে পৌঁছাতে পারেননি। সামরিক ও বেসামরিক—দুই খাতেই সরকারি ব্যয় হ্রাসের সংকট জিইয়ে থাকছে।
এদিকে প্রতিনিধি পরিষদে বিল পাস হওয়ার খবরে ইউরোপ ও এশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন শেয়ারবাজারে তেজি ভাব লক্ষ করা গেছে। বিবিসি, এএফপি।
নিউজরুম