নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে জনগণের মাঝে সংশয়

0
141
Print Friendly, PDF & Email

চট্টগ্রাম (৩ জানুয়ারী) : নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে জনগণের মাঝে সংশয় থাকার কারণেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি উঠছে মন্তব্য করে নির্বাচন কমিশনার মো. আবু হাফিজ বলেছেন, ‘এ সংশয় কাটিয়ে উঠে জনগণের আস্থা অর্জন করতে চাই।’

তিনি বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন জনগণের প্রত্যাশা। সে প্রত্যাশা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন দৃশ্যমান অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চায়। এজন্য জনপ্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বুধবার সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার।

 

চট্টগ্রাম-১২(আনোয়ারা) আসনের উপ-নির্বাচন ও ভোটার তালিকা হালনাগাদ উপলক্ষে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় এ সভার আয়োজন করে।

 

আবু হাফিজ বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে জনগণের মনে সংশয় থাকে। কারণ আগে এ ধরণের ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু আগের সেদিন এখন আর নেই। ছবিযুক্ত ভোটার কার্ডের কারণে দ্বৈত আর জাল ভোট দেয়ার কোন সুযোগ নেই। ফলে নির্বাচন এখন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।

 

এর আগে অনেকগুলো নির্বাচন সুষ্ঠুভাবেই সম্পন্ন হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, আনোয়ারা উপ-নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের অবস্থান কি সে বিষয়টি জানাতে এখানে এসেছি। মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চাই।

 

নির্বাচনে কমিশনের সকল কর্মকর্তাসহ জনপ্রশাসনের সবাইকে নিরপেক্ষ বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের কোন দল নাই। সুতরাং আমরা নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারবো। নিরপেক্ষ ভূমিকার মাধ্যমে দেশের মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে।

 

তিনি বলেন, কেবল সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করলেই হবে না। এর ফলাফলও মানুষকে জানতে হবে। কারণ অতীতে সুষ্ঠু নির্বাচনের পর ব্যালট ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। তাই ফল পৌছে দেয়া পর্যন্ত সবাইকে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে।

 

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষ ও সততার মনোভাব রাখার আহ্বান জানিয়ে আবু হাফিজ বলেন, সততার সঙ্গে কাজ করলে নির্বাচনে কোন সমস্যা হবে না।নির্বাচন কমিশন মানুষের এ আস্থা অর্জন করতে চায়।

 

চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার সিরাজুল হক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অপর নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো.জাবেদ আলী, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নওশের আলী খান, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আব্দুল মান্নান ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তা ফরহাদ আহম্মদ খান বক্তব্য রাখেন।

 

আনোয়ারা উপ-নির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার ‍জাবেদ আলী বলেন, আশা করি আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারবো।

 

নির্বাচনে কোন ঘাটতি থাকলে তা কমিশনকে অবহিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ ‍জানিয়ে তিনি বলেন, আনোয়ারা নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। এরই মধ্যে খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। শিগরিই চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।

 

সুষ্ঠ‍ু নির্বাচনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

 

সভায় ফরহাদ আহম্মদ খান জানান, আনোয়ারা উপ-নির্বাচনে চট্টগ্রাম১২(আনোয়ারা) আসনে দুটি উপজেলার মোট ১৬টি ইউনিয়নে ৯০ ভোট কেন্দ্র ও ৬১৫টি ভোট কক্ষ রয়েছে।

 

এ ‍আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৫০ হাজার ২৫৭ জন। এরমধ্যে ১ লাখ ২৬ হাজার ২৯৩ জন পুরুষ ও ১ লাখ ২৩ হাজার ৯৬৪ জন নারী ভোটার।

 

উল্লেখ্য, আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও আনোয়ারা আসনের সাংসদ আখতারুজ্জামান চৌধুরীর মৃত্যুর কারণে গত ৪ নভেম্বর আসনটি শূণ্য ঘোষণা করা হয়। এরপর ১০ ডিসেম্বর এ আসনে নির্বচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

 

গত ২০ ডিসেম্বর মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিনে মোট ছয়জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করে। ২৩ ডিসেম্বর যাচাই বাছাই করে ৪জনের প্রার্থীতা বাতিল করে কমিশন। ৩১ ডিসেম্বর ছিল প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন।

 

আগামী ১৭ জানুয়ারি এ আসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও গণফোরামের উজ্জ্বল ভৌমিক প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। জাবেদ আখতারুজ্জামান চৌধুরীর বড় ছেলে।

নিউজরুম

 

শেয়ার করুন