রুপসীবাংলা বিনোদন ডেস্ক: রক গানের শিল্পী বলেই শুভকে চেনেন সবাই। তবে অন্য ধাঁচের গানেও রয়েছে তাঁর পারদর্শিতা। গত বছর প্রকাশিত হয়েছিল শুভর দ্বিতীয় একক `অনেক কিছু`। এবার আসছে তার তৃতীয় একক। নতুন এ অ্যালবামের নাম ‘অনেক স্বপ্ন’।
অ্যালবামটির নাম প্রসঙ্গে শুভ বাংলানিউজকে বলেন, ‘এবারের অ্যালবামটির বেশির ভাগ গানে অনেক স্বপ্নের কথা বলা হয়েছে, যা শ্রোতারা হাতে পেলেই বুঝতে পারবেন। আর তাই অ্যালবামের নামও রাখা হয়েছে ‘অনেক স্বপ্ন’। নতুন অ্যালবামে মেলো ইলেকট্রনিক সাউন্ডের প্রভাবই বেশি থাকবে। আর এবারে দ্রুতলয়ের কিছু গান করছি। পপ রক ও ফোক ধরনের গানও থাকবে।’
এ অ্যালবামের বেশির ভাগ গানের কথা ও সুর শুভর। অ্যালবামটির গানগুলোর সুর ও এর সংগীত পরিচালনার কাজ করবেন ফুয়াদ, আমজাদ, অদিত ,শাকের ও মাসুম। অ্যালবামটি বাজারে আনবে জি-সিরিজ।
এসব তো গেলো নতুন অ্যালবামের কথা। এবার জানতে চাইলাম গানের সাথে শুভর সখ্যতার কথা।
‘ছোট্টবেলায় ঘুম থেকে উঠতেই বাবার কণ্ঠে রেওয়াজের সুর ভেসে আসত কানে। কিন্তু গানের প্রতি তখন ঝোঁক ছিল না। অনেকটা জোর করেই শিশু একাডেমীতে তবলা শেখার জন্য ভর্তি করিয়ে দেন মা। তখন আমার বয়স পাঁচ কি ছয়। গান শিখতে শিখতেই এসএসসি পর্যন্ত বেড়ে ওঠা। এর মধ্যে গানটাও আমাকে টানতে লাগল। ভালো লাগত রক ধাঁচের গান। সেই কৌতূহল থেকেই বন্ধুদের নিয়ে গড়ে তুলি রক ব্যান্ডদল `মেটাল মেইজ`’- গান শেখার গল্প বলছিলেন শুভ।
ব্যান্ড গড়ার আগে সংগীতের চেয়ে খেলাধুলাতেই তাঁর মনোযোগ ছিল বেশি। সমানতালে চালিয়ে যান লেখাপড়াটাও। ঢাকা সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে [আইইআর] বিভাগে। সেখানে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডার ফাঁকে খালি গলায় গান করতেন শুভ। অনেকে তাঁর গান শোনার জন্য ক্লাস শেষে আড্ডায় অপেক্ষা করত।
২০০০ সালে `মেটাল মেইজ` ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন বন্ধু মিলে গড়ে তোলেন নতুন ব্যান্ড `অ্যাকুয়স্টিকা`। কিন্তু নিয়মিত না হওয়ায় এই ব্যান্ডও বেশিদিন স্থায়ী হয়নি শুভ।
শুভ বলেন, `এই ব্যান্ড নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আমরা নিয়মিত স্টেজ শো করতাম, কিছু টাকাও পকেটে আসত। কিন্তু ব্যান্ডে আমি নিয়মিত সময় দিতে পারতাম না।`
২০০২ সালে `রুটস [কমল]` নামের এক ব্যান্ডে ভোকাল হিসেবে যোগ দেন শুভ। তাঁর দুই বছর পর নাম লেখান ‘বেনসন অ্যান্ড হেজেস : স্টার সার্চ` প্রতিযোগিতায়। সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়ে সেই প্রতিযোগিতার সেরা ব্যান্ডের পুরস্কার লাভ করে `রুটস`। কিছু দিনের মধ্যেই সর্বত্র নতুন এই ব্যান্ডের পরিচিতি বাড়ে। বাড়ে স্টেজ শো, ডাক আসতে থাকে বিভিন্ন জায়গা থেকে। এভাবেই কাটে কয়েকটা বছর।
২০০৬ সালটা শুভর জন্য আরো সুখকর। নির্বাচিত হন `ডি-রকস্টার` প্রতিযোগিতার সেরা ভোকাল। এবার শুভর সুযোগ আসে বিভিন্ন মিক্সড অ্যালবামে গাওয়ার। ফুয়াদের সংগীতে মিক্সড অ্যালবাম `ক্রমান্বয়`-এ গান করার সুযোগ আসে তাঁর।
ওই অ্যালবামে শুভর গাওয়া `জানি না` এবং `ক্লান্তির এই শহর ছেড়ে` গানগুলো বেশ প্রশংসিত হয়। এরপর `বাপ্পা উইথ রকারস`, `জুয়েল উইথ স্টারস`সহ বেশ কিছু মিক্সড অ্যালবামে কণ্ঠ দেন তিনি। এসব অ্যালবামের `ভুল জানালা`, `তুমিহীনা সারা বেলা`, `বৃষ্টি` গানগুলো শ্রোতারা পছন্দ করেন বলে জানান শুভ।
২০০৮ সালে বের হয় তাঁর প্রথম একক অ্যালবাম `রকারস ইন করপোরেটেড`। অ্যালবামটি বাণিজ্যিকভাবে সফল না হলেও নিজের গায়কির জন্য আলোচিত হন শুভ। পরের বছর `সাউথ এশিয়ান সুপারস্টার` প্রতিযোগিতায় অংশ নেন তিনি। সেখানেও অর্জন করেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব।
অগ্নিবীণার ব্যানারে নিজের দ্বিতীয় একক অ্যালবাম `অনেক কিছু` প্রকাশ করেন শুভ। এতে মোট ৯টি গান ছিল।
এবার শুভর তৃতীয় অ্যালবামে গান থাকবে মোট ১০টি। এরই মধ্যে চারটি গানের কাজ শেষ হয়েছে। বাকি গানগুলোর সুর করা হয়েছে। গানগুলোর শিরোনাম হলো – ‘তোমার স্বপ্ন আছে বলেই’, ‘বনভোজন’, ‘কেন বা তারে’,‘টিপ টিপ বৃষ্টি’, ‘স্বপ্নস্বাধীন’, ‘দৃষ্টি বহুদুর’ প্রভৃতি। গানগুলো লিখেছেন-শাহান কবন্ধ,জনি হক, জাহিদ বাবুল, রবিউল ইসলাম জীবন এবং শুভ।
পুরনো গান ‘সোনাবন্ধু’সহ একটি দ্বৈত গান থাকবে বলেও জানিয়েছেন এ রকশিল্পী। অ্যালবাম প্রকাশের পূর্বে ৩-৪ টি গানের মিউজিক ভিডিও নির্মাণের জন্য দেশের বাইরে যাবেন বলেও জানান। এছাড়া রবি ট্যালেন্ট হান্ট নামক এ অনুষ্ঠানে বর্তমানে বিভিন্ন জেলায় ফুয়াদের সাথে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন শুভ।
নিউজরুম