রুপসীবাংলা, (০১ ডিসেম্বর) : দেশের উত্তরাঞ্চলে দেড় হাজার ইট ভাটা গিলে খাচ্ছে হাজার হাজার একর জমি। অথচ দেখার কেউ নেই। স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে এবং এল আর ফান্ডে নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে অবৈধ ভাবে চলছে এসব ইট ভাটা।
কৃষি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা জানান, কৃষি জমির মাটি কেটে নেওয়ায় জমির উর্বরা শক্তি হ্রাস পাচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোন দেশে মাটি পুড়িয়ে ইট তৈরি করা হয় না। কিনতু এই সোনার বাংলার সোনার মাটি দিয়ে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি ইট তৈরী করে ভারতে রপ্তানী করায় রাতারাতি বেড়ে যাচ্ছে ইটের দাম। গত তিন ’বছর আগেও প্রতি হাজার ইটের দাম ছিল সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। এখন প্রতি হাজার ইট সাড়ে ৬থেকে ৭ হাজার টাকা।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, গত কয়েক ’বছরে হিলি ও সোনা মসজিদ সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে প্রায় ৫০হাজার কোটি ইট ভারতে রপ্তানী করা হয়েছে। মাঝে মধ্যে ইট ভাটা গুলোতে অভিযান চালিয়ে জ্বালানী কাঠ জব্দ এবং জরিমানা করার পরও প্রতিনিয়ত ভাটার সংখ্যা বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এক কোটি ইট তৈরি করতে কমপক্ষে ৭০ হাজার মেট্রিক টন মাটির দরকার হয় এবং কয়লা ছাড়াও কয়েক লাখ মে.টন জ্বালানী কাঠের প্রয়োজন পড়ে। আর মাটি পুরোটাই আসে উর্বর ফসলি জমির উপরিভাগ থেকে। একটি জমির ‘টপসয়েল’ তৈরী হতে প্রায় হাজার বছর সময় লাগে। কৃষক রুহল আমিন জানান, ভাটা মালিকরা কৃষকদের টাকার লোভ দেখিয়ে ফসলী জমির উর্বর মাটি কেটে নেয়। ফলে ওই সমস্ত জমির উর্বরা শক্তি নষ্ট হয়ে অনাবাদীতে পরিণত হচ্ছে।
বিশেষ করে রোপা-আমনের উর্বরা জমিগুলো লীজ নেয় ভাটা মালিকরা। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে এবং এল আর ফান্ডে নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে অবৈধ ভাবে চলছে এসব ইট ভাটা। রাজশাহী বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক নাজমুল হক জানান, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে প্রায় দেড় হাজার ইট ভাটা রয়েছে। যার অধিকাংশরই ছাড়পত্র নেই।
স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে অবৈধ ভাবে চলছে এসব ইট ভাটা। তিনি বলেন, অবৈধ ভাটাবন্ধ করতে ইতোমধ্যে গনবিজ্ঞপ্তি জারি সহ তদারকী অব্যহত রয়েছে। আর যারা বন্ধ করেননি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে। তবে ভাটা মালিকরা এব্যপারে কথা বলতে রাজি হননি।
নিউজরুম