ঢাকা (৩১ ডিসেম্বর) : সংবিধান এখন নিজেই বিচারপ্রার্থী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও প্রধান সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “সংবিধান নিজেই এখন বিচারপ্রার্থী। মানবাধিকারের নিজেরই এখন অধিকার নেই। যে সরকারের আমলে বিকাশের মতো সন্ত্রাসীরা ছাড়া পায়, আর ফখরুলের মতো ভালো লোকেরা জেলে যায়, সে সরকারের কাছে আর কী-ই বা আশা করা যায়!”
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিকেল সাড়ে ৩টায় শ্রমিক দলের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও প্রধান সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নামে মিথ্যা মামলাসহ নেতাকর্মীদের মুক্তি, নির্যাতনের প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
বিক্ষোভ কমসূচিতে তরিকুল ইসলাম বলেন, “২০১২ সাল খুন, গুম, কেলেঙ্কারি, লুটপাটের বছর হিসেবে বিদেশে পরিচিতি পেয়েছে।”
তিনি বলেন, “এ সরকার জনগণের জন্য কিছু করতে না পারলেও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নামে মামলা-হামলা, দমন-পীড়ন অব্যাহত রেখেছে। সে কারণে বিএনপির প্রায় ২৫ হাজার নেতাকর্মী পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা ঘরে ফিরতে পারছে না।
বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে বিদ্যুতের দাম মাত্র একবার বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে একবার মাত্র ২৩ পয়সা বাড়িয়েছিল। আর এ সরকারের সময় ৬ বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে।”
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের ঊর্ধ্বগতির কথা উল্লেখ করে বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম বলেন, “এসরকার বুঝতে পারছে না এ দেশের গরিব কিংবা মধ্যবিত্ত কী কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। তারা কিছু জানে না, বুঝতেও চায় না। সরকার এখন অন্ধ। কিছুই দেখতে পায়না।”
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তরিকুল ইসলাম বলেন, “মন্ত্রীরা বলেন, উন্নয়ন হয়েছে। হ্যাঁ, আসলে উন্নয়ন হয়েছে, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মন্ত্রী, এমপি, প্রধানমন্ত্রী এবং তাদের আত্মীয়-স্বজনদের উন্নয়ন হয়েছে। তারা ব্যাংক-বীমা, টেন্ডার, সব কিছু খেয়ে ফেলছে। আগে যাদের একটা গাড়ি ছিল, তাদের এখন ৬টি গাড়ি হয়েছে। তারা একদিন বঙ্গোপসাগরও শুষে খেয়ে ফেলবে। একদিন ঘুম থেকে উঠে দেখা যাবে, এ সরকার বঙ্গোপসাগরের সব পানি-দ্বীপ সব খেয়ে ফেলেছে।”
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি তুলে তিনি বলেন, “আল্লাহর দোহাই, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার মাধ্যমে নির্বাচন দিন। তা নাহলে জনগণ যখন আন্দোলন শুরু করবে, তখন আন্দোলনের তোড়ে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাবেন না।”
তিনি ক্ষুব্ধকণ্ঠে বলেন, “এ সরকার গণতন্ত্র বোঝে না। তারা বোঝে একদলীয় শাসন। তারা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করে, বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ করে এবং বিচারকে প্রভাবিত করেছে।”
তিনি বলেন, “এ জন্য কি আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি?”
তরিকুল ইসলাম এসময় শ্রমিকদের উদ্দেশে বলেন, “শীত যখন আপনাদের কাবু করতে পারেনি, তখন এ সরকারও আপনাদের কাবু করতে পারবে না।”
শ্রমিক দলের সভাপতি ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলামের খানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন-শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক জাফরুল হাসান, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব আব্দুস সালামসহ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও প্রধান সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম।
এর আগে ঢাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে শ্রমিক দলের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দেন। বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরুর আগেই বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তার একপাশে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসময় রাস্তার অপর পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
সমাবেশে জিয়া, খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও মির্জা ফখরুলের নানা ব্যানার পোস্টার নিয়ে ফখরুলসহ বিএনপি ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে নানা স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
নিউজরুম