ঢাকা (৩০ ডিসেম্বর) : নয়াদিল্লির চলন্ত বাসে গণধর্ষণের শিকার মেয়েটির শান্তিপূর্ণভাবে মৃত্যু হয়েছে, সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকের এই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন বিতর্কিত নারীবাদী লেখক তসলিমা নাসরিন।
ভারতের একটি সংবাদ মাধ্যমে তাকে উদ্ধৃত করে এসংক্রান্ত খবর প্রকাশ করা হয়। এতে তসলিমা নাসরিনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, “তার বয়স হয়েছিল মাত্র ২৩ বছর। সমগ্র ভবিষ্যৎ তার সামনে পড়েছিল। তিনি তার জীবন যাপন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি নির্মমভাবে গণধর্ষণ, নিপীড়ন, অঙ্গহানি ও হত্যার শিকার হলেন। এর মধ্যে কোনো শান্তি নেই।”
তসলিমা বলেন, “প্রতিদিন লাখ লাখ নারী নির্যাতন, নিপীড়ন, হয়রানি, পাচার, অগ্নিদগ্ধ হয়, ধর্ষণ, গণধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়। নারীর বেঁচে থাকা বা মৃত্যু কোনোটাই শান্তিপূর্ণভাবে হয় না।”
‘পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা যতদিন টিকে আছে ততদিন মানসিক অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব নয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ছেলেরা বেড়ে ওঠে এই বিশ্বাস নিয়ে যে, নারীদের স্বাধীনতা, ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা, দেহ, মন সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে।”
নারীদের যৌন পরিতৃপ্তির বস্তু হিসেবে বিবেচনা করার জন্য বলিউডেরও সমালোচনা করেন তসলিমা। তিনি বলেন, “সবখানে নারী মানে দেহ। তার মস্তিষ্ক গুরুত্বপূর্ণ নয়। ধর্ষণ যুদ্ধের অস্ত্র, সেনারা এটা করে থাকে। সম্প্রদায় ও গোত্রে নারীরা ধর্ষণের শিকার হয় আধিপত্য করার কৌশল হিসেবে।”
সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে মৃত্যু হয় গণধর্ষণের শিকার মেয়েটির। রোববার সকালে তার মৃতদেহ বিশেষ বিমানে করে নয়াদিল্লিতে নেওয়া হয়। বিমানবন্দরে তার মরদেহ গ্রহণ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও ক্ষমতাসীন কংগ্রেস প্রধান সোনিয়া গান্ধী।
বিতর্কের মুখে ১৯৯৪ সালে দেশান্তরি হন তসলিমা নাসরীন। প্রবাসে তিনি প্যারিস, কলকাতা, নয়াদিল্লিসহ বিভিন্ন শহরে বসবাস করেন। প্রবাসে গিয়েও বিভিন্ন সময় তিনি বিতর্কের মুখে পড়েন।
নিউজরুম