ঢাকা (২৮ ডিসেম্বর) : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং আইনজীবী প্যানেলের জন্য গবেষক নিয়োগ করা হচ্ছে। সরকার এ সম্পর্কিত প্রস্তাবে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়।
বিবিসি বাংলা জানায়, প্রবাসী একজন আইন বিশেষজ্ঞের সাথে কথোপকথন ফাঁস হওয়ার জের ধরে সম্প্রতি ট্রাইব্যুনালের একজন বিচারপতি পদত্যাগ করেছেন। সেই পটভূমিতে গবেষক নিয়োগের বিষয়টি এসেছে বলে আইনজীবীদের অনেকেই বলছেন।
আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেন, ট্রাইব্যুনালের শুরু থেকেই গবেষক নিয়োগের পরিকল্পনা ছিল। প্রক্রিয়াটা শুধু এগিয়ে নিতে বিলম্ব হয়েছে।
তবে, এমন উদ্যোগে বিলম্বের কথা স্বীকার করে সরকার বলছে, পরিকল্পনা অনেক আগে নেওয়া হলেও এখন তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন এবং এর কার্যক্রম শুরুর আড়াই বছরেরও বেশি সময় পর গবেষক নিয়োগ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটকদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর নেতা গোলাম আযম এবং দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ অনেকেরই বিচার কাজ শেষ পর্যায়ে এসেছে। বিচার প্রক্রিয়ার এই পর্যায়ে সরকার গবেষক নিয়োগের পে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে জানান, ট্রাইব্যুনাল এবং আইনজীবী প্যানেলের জন্য আলাদা আলাদা গবেষক নিয়োগ করা হবে। আইনজীবী প্যানেলের জন্য থাকবে তিনজন গবেষক, আর ট্রাইব্যুনালের জন্যও নিয়োগ করা হবে দু’জন গবেষককে।
ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার একেএম নাসিরউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিয়ে গবেষণা করবে গবেষকরা। এটা ট্রাইব্যুনালের কাজে সহায়ক হবে।
সম্প্রতি ব্রাসেলসে সাথে ড. আহমদ জিয়াউদ্দিনের সাথে কথোপকথন ফাঁস হওয়ার ঘটনার জেরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক পদত্যাগ করেন।
অনেক অভিযুক্তের বিচার কার্যক্রমের শেষ পর্যায়ে এসে এই পদত্যাগের ঘটনা ছিল একটা বড় ধাক্কা বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়।
এই প্রেক্ষাপটে কি বক্তব্য উঠে এসেছে তাও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের বিচারের বিষয়টি বিচারপতি এবং আইনজীবী সবার কাছেই নতুন। ফলে বিশ্বের যেসব জায়গায় এ ধরণের বিচার হয়েছে, সে ব্যাপারে গবেষণা প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের অনেকেই অবশ্য বলেছেন, গবেষক নিয়োগের পরিকল্পনা আগে নেওয়া হলেও কথোপকথন ফাঁস হওয়ার পরই বিষয়টা গতি পেয়েছে বলে তাদের ধারণা।
তবে এখন এই নিয়োগের প্রক্রিয়াতেও সময় লেগে যেতে পারে বলে সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন। তারা জানিয়েছেন, আইন বিশেষজ্ঞ এবং গবেষণার কাজে অভিজ্ঞতা আছে, এমন ব্যক্তিদের গবেষক হিসেবে নিয়োগ করা হবে।
নিউজরুম