অটিজম: ট্রাস্ট আইন
অটিজম, সেরিব্রাল পালসি, ডাউন সিনড্রোম, বুদ্ধি ও অন্যান্য স্নায়বিক প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় ট্রাস্ট আইনটি এসব প্রতিবন্ধী ব্যক্তির নিরাপত্তার জন্য অত্যাবশ্যকীয় পদক্ষেপ। এ আইনের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মা-বাবা অথবা অভিভাবক তাঁদের অবর্তমানে সন্তানের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সক্ষম হবেন। অনেকে প্রতিবন্ধী অধিকার আইনের সঙ্গে এই ট্রাস্ট আইনকে মিলিয়ে ফেলছেন বা অপ্রয়োজনীয় হিসেবে উল্লেখ করছেন। এটি প্রতিবন্ধী অধিকার আইন ২০১১-এর সম্পূরক, সাংঘর্ষিক নয়।
গত ১৩ নভেম্বর ২০১২ প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে আইনের খসড়াটি তৈরিতে প্রতিবন্ধীদের অভিভাবক বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি; কথাটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে খসড়াটি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মা-বাবারাই যৌথভাবে তৈরি করেছেন। ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের চাহিদা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই এ খসড়া তফসিল প্রস্তুত করা হয়েছে।
ট্রাস্ট আইন মা-বাবাকে তাঁদের অবর্তমানে সন্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য অভিভাবক নির্বাচনের ক্ষমতা দেবে। অভিভাবক যদি তাঁর দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করেন, তবে এ আইনে তাঁর অভিভাবকত্ব বাতিলের বিধানও রয়েছে। কিন্তু তিনি যদি তাঁর দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেন বা অর্থ-সম্পদের খেয়ানত করেন, তবে সে ক্ষেত্রে দেশের প্রচলিত আইনে পর্যাপ্ত ও কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, অভিভাবক যদি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে তার প্রাপ্য সম্পত্তি বা অধিকার থেকে বঞ্চিত করেন, তবে তাঁর জন্য আত্মসাৎ আইনে পর্যাপ্ত শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। আবার অভিভাবক যদি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে শারীরিক বা মানসিকভাবে নির্যাতন করেন, তবে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে এরও প্রতিকারের ব্যবস্থা রয়েছে। সুতরাং, জাতীয় ট্রাস্ট আইনে আলাদাভাবে শাস্তির ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করা অপ্রয়োজনীয়।
এ আইনের ফলে অটিস্টিক, সেরিব্রাল পালসি, ডাউন সিনড্রোম, বুদ্ধি ও অন্যান্য স্নায়বিক প্রতিবন্ধিতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিরাপত্তার দায়িত্ব সরকারের ওপর পড়বে। শুধু তা-ই নয়, এই ট্রাস্ট আইনের বিধান দ্বারা এসব প্রতিবন্ধী ব্যক্তির নিরাপত্তা ও কল্যাণে যে বিপুল অর্থ-সম্পদ প্রয়োজন, তার জন্য প্রাথমিক ১০০ কোটি টাকার অনুদান প্রদানসহ অন্যান্য উৎস থেকে তহবিল সংগ্রহের ব্যবস্থাও সরকার করবে। অন্য যেসব প্রতিবন্ধী রয়েছে যেমন: দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী, পঙ্গু প্রভৃতি ব্যক্তির প্রতিবন্ধিত্ব চোখে দেখা যায়। কিন্তু অটিস্টিক, সেরিব্রাল পালসি, ডাউন সিনড্রোম, বুদ্ধি ও অন্যান্য স্নায়বিক প্রতিবন্ধিতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রতিবন্ধিত্ব চোখে দেখা যায় না। যে মানুষটি অটিজম, সেরিব্রাল পালসি, ডাউন সিনড্রোম, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা এবং স্নায়ুবিক বিকাশসংক্রান্ত অক্ষমতায় আক্রান্ত, সে তার ব্যক্তিগত অনুভূতি, তার প্রয়োজন বা অধিকার, সামাজিক বা নাগরিক অধিকারের কোনোটাইবোঝাতে বা চাইতে পারে না।
অটিজম, সেরিব্রাল পালসি, ডাউন সিনড্রোম, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা ও স্নায়বিক বিকাশসংক্রান্ত অক্ষমতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এবং তাদের পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অধিকার রক্ষার জন্য অভিভাবকদের পক্ষ থেকে সবিনয় অনুরোধ: এ মানুষগুলোকে ছোট করে দেখবেন না, একীভূত সংঘবদ্ধ সমাজে তাদের অধিকার রক্ষায় জাতীয় ট্রাস্ট আইনটি অনুমোদন করুন।
রুমানা শাহীন
basir_enamul@yahoo.com
রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি
রংপুর পাবলিক লাইব্রেরিটি ২০০৪ সালে দেড় শ বছরের সময়সীমা পার করেছে। গত কয়েক বছরে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরির কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এখানে শুধু কয়েকটি দৈনিক পত্রিকা সরবরাহ করা হয়ে থাকে। কোনো গ্রন্থাগারিক নেই, পিয়নও নেই, পরিচালনা কমিটিও নেই। মাত্র একজন ব্যক্তি পাঠকদের সংবাদপত্র পাঠের সুযোগ করে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করছে। অথচ প্রায় ২০০ জন জীবন-সদস্য রয়েছেন।
গত শতকের আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে (১৯৮৫ সালে) রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি পরিচালনা কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের বিরোধ দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন আয়োজনের জন্য জেলা প্রশাসককে অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু ২৭ বছর পার হলেও রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি পরিচালনা কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। এমতাবস্থায় দুষ্প্রাপ্য ও মূল্যবান প্রায় ১০ হাজারের বেশি বই লাইব্রেরি থেকে উধাও হয়ে গেছে।
অতিসম্প্রতি রংপুর পাবলিক লাইব্রেরির নিজস্ব ভূমি অন্য কাজে ব্যবহারের জন্য নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরির প্রায় ২০০ জীবন-সদস্যের সঙ্গে কোনো আলোচনাই করা হয়নি। রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি রক্ষার জন্য সংস্কৃতিমন্ত্রী ও সংস্কৃতিসচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
মুহম্মদ রেজাউল হক
রংপুর।
রাজধানী ঢাকা
রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা, অপরাধপ্রবণতা, শিক্ষাব্যবস্থা, বিনোদন, যাতায়াতব্যবস্থা, যানজট, অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ, আবাসিক এলাকায় কলকারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, পানি এবং পয়োনিষ্কাশনের সংকট ইত্যাদি বিবেচনায় ঢাকা শহর এখন জরাজীর্ণ।
এমনি ধারা চলতে থাকলে এবং এর কোনো প্রতিকারের ব্যবস্থা না করলে ভবিষ্যতে ঢাকা শহর বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে।
শহরের যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা, বর্জ্য পদার্থ পড়ে থাকে। তাৎক্ষণিক ময়লা অপসারণের কোনো ব্যবস্থা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয় না। এই দুরবস্থার জন্য দায়ী সিটি করপোরেশনের অব্যবস্থাপনা, অদক্ষতা ও জবাবদিহির অভাব।
অতএব ঢাকাকে বসবাসযোগ্য করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথাশিগগির সম্ভব জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।
মাহতাব আলী
মিরপুর, ঢাকা।